Look for any podcast host, guest or anyone
Showing episodes and shows of

Maharshi MahaManas

Shows

MahaManas MissionMahaManas MissionA brief introduction about an extraordinary and incomparable great man of this time!Maharshi MahaManas : the greatest sage of the time2023-01-0404 minসদগুরু মহর্ষি মহামানসসদগুরু মহর্ষি মহামানসবিশ্বাসের চশমাটাকে খুলে রেখে দেখোপ্রচলিত ধর্ম--- দ‍র্শন---মতবাদ -এর কথা আমি বলতে পারবো না। আমাদের ধর্ম-দর্শন-মতবাদে এই মহাবিশ্ব অস্তিত্বই হলো ঈশ্বর। এই বিশ্ব-অস্তিত্বকে কি তুমি অস্বীকার করতে পারো !? বিশ্বাসের চশমাটাকে খুলে রেখে দেখো।​ 'মহাধর্ম' ও 'মহাবাদ'-এর মধ্যে তুমি তোমার বিশ্বাসের ঈশ্বরকে খুঁজতে যেওনা। —পাবেনা। তথাকথিত স্বর্গলাভ– ঈশ্বরলাভ অথবা ব্রহ্মলাভের কোন পথ বা পদ্ধতির সন্ধান নেই এখানে। আছে মানবত্ব লাভের উপায়। বিশ্বাসের চশমাটাকে খুলে রেখে, যথাসম্ভব প্রভাবমুক্ত হয়ে— খোলা মন নিয়ে, সত্যানুসন্ধিৎসুর দৃষ্টি নিয়ে-– এর গভীরে প্রবেশ করলে, তবেই বিস্ময়কর সত্য তোমার কাছে প্রকাশলাভ করবে। 'মহাধর্ম' ও 'মহাবাদ' হলো— যথাক্রমে এক স্বতন্ত্র ধর্ম এবং স্বতন্ত্র মতবাদ। বিভিন্ন শাস্ত্র —বিভিন্ন মতবাদ অথবা প্রচলিত ধ্যান-ধারণার সাথে এর তুলনামূলক বিচার করতে গেলে, ধন্দে পড়ে যাবে। দেখবে, কোথাও হয়তো মিলছে, কোথাও মিলছে না। তারফলে, তোমরা অনেকেই মানসিক বিশৃঙ্খলার মধ্যে পড়ে— হতবুদ্ধি হয়ে যেতে পারো। তাই, 'মহাধর্ম' ও 'মহাবাদ'-এর দ্বারা লাভবান হতে চাইলে, একে এর দৃষ্টিকোণ থেকে বোঝার চেষ্টা করতে হবে। যুক্তিবাদী সচেতন মুক্ত মন দিয়ে বোঝার চেষ্টা করতে হবে। ঠিকমতো উপলব্ধি হলে, তখন বুঝতে পারবে, কোনটা লভ্য ---কোনটা লাভ করা সম্ভব, আর কোনটা আকাশ-কুসুম কল্পনা! বুঝতে পারবে, এতদিন কিভাবে মরিচিকার পিছনে ছুটে ছুটে মরেছো তুমি। বুঝতে পারবে মানব জীবনের প্রথম ও প্রধান লক্ষ্য কী। তুমি নিজেই উপলব্ধি করতে পারবে, তোমার জীবনের অধিকাংশ অসাফল্য— পরাজয়, হানি, অধিকাংশ দুঃখ– কষ্ট —যন্ত্রনার পিছনে প্রধানত দায়ী—তোমার অজ্ঞানতা, তোমার অন্ধ-বিশ্বাস। সঠিকভাবে নিজেকে না জানার ফলে, তোমার সামনের মানুষকে ঠিকমতো চিনতে না পারার ফলে, তুমি বহুবার ঠকেছ— প্রতারিত হয়েছো। এর পুণরাবৃত্তি ঘটতেই থাকবে, যতদিন না তুমি আলস্যতা কাটিয়ে সজাগ–সচেতন থেকে— সত্য– মিথ্যা, বাস্তব– অবাস্তব-কে চেনার ক্ষমতা লাভ করছো। নিজেকে সজাগ–সচেতন রেখে— প্রভাবমুক্ত হয়ে, যুক্তি-বিচার প্রয়োগ করে, সত্যানুসন্ধান করতে, গভীরভাবে চিন্তা করতে, অনেকটাই মানসিক পরশ্রম করতে হয়। তার চাইতে বিশ্বাস করা অনেক সহজ কাজ। বিশ্বাস করতে তেমন পরিশ্রমের দরকার হয় না। তাই, মানসিক শ্রমবিমুখ মানুষ— বিশ্বাসের পথটাই বেশি পছন্দ করে। কিন্তু তার ফলে যে কী ক্ষতি হয়, তা’ বোঝার জন্যেও মানসিক পরিশ্রম করতে সে নারাজ বা অপারক। বিশ্বাসের পথে আত্মোপলব্ধি— সত্যোপলব্ধি, ঈশ্বরলাভ অথবা ঈশ্বরত্ব লাভ কিছুই সম্ভব হয় না। তবু, মানুষ বিশ্বাসকে আঁকড়ে ধ’রে ছুটে–ছুটে মরে। তাই, মানুষকে সজাগ-সচেতন —যুক্তিবাদী —সত্যানুসন্ধিত্সু ক’রে তুলতে, মানুষের জীবনে একের পর এক দুর্ভাগ্য নেমে আসে। মানুষ যথেষ্ট সজাগ-সচেতন না হওয়াবধি বারবার আঘাত আসতে থাকে, এবং আসতেই থাকে। বিশ্বাসের দ্বারা পৃথিবীতে যতটুকু ভালো হয়েছে, মন্দ হয়েছে তার চাইতে অনেক গুণ বেশি। সারা পৃথিবী জুড়ে যত অমানবিক কর্ম সংঘটিত হয়েছে, যত রক্তপাত হয়েছে  ও হচ্ছে, তার অধিক অংশের মূলেই আছে বিশ্বাস। অন্ধ বিশ্বাস। আর, যদি মনে কর, তোমার বিশ্বাসের পথই শ্রেষ্ঠ পথ, ওটাই শেষ কথা, তাহলে বুঝতে হবে, মহাধর্ম ও মহাবাদ তোমার জন্য নয়।​ এই মহাবিশ্বরূপ ঈশ্বরকে উপলব্ধি করা নিম্নচেতন মানুষের পক্ষে সম্ভব নয়। তাই, শঠতা ও প্রবঞ্চনাপূর্ণ প্রচলিত ধর্ম তাকে দিয়েছে সহজবোধ্য কাল্পনিক ঈশ্বর, যাতে সে তা-ই নিয়েই নির্বোধের স্বর্গে অলীক সুখে মশগুল হয়ে থাকে। মানুষ যাতে ক্রমশ চেতনা-সমৃদ্ধ হয়ে— কোনো দিনই আসল ঈশ্বরকে জানার এবং উপলব্ধি করার ক্ষমতা অর্জন করতে না পারে, তারজন্য সমস্ত আয়োজনই পাকা করে রেখেছে এই ধর্ম নাম্নী অধর্ম। একমাত্র প্রবল চেষ্টার দ্বারাই, ধর্মের এই কঠিন মায়াজালের ফাঁদ থেকে বেড়িয়ে এসে মুক্তি লাভ সম্ভব। চেষ্টা করো, নিশ্চয়ই পারবে। অন্ধবিশ্বাস থেকে মুক্ত হয়ে যুক্তিপ্রিয় সত‍্যপ্রেমী হয়ে ওঠো। আমার শুভকামনা তোমার সঙ্গে থাকবে। দীর্ঘকাল অন্ধকারে থাকতে অভ‍্যস্ত হয়ে গেলে, যেমন আলোতে আসতে ভয় হয়, দীর্ঘ বন্দী-জীবন কাটানোর পর, মুক্ত জীবনে ফিরে আসতে যেমন ভয় হয়, তেমনই আজন্ম ধর্মের ঘেরাটোপে বন্দী থেকে অভ‍্যস্ত মানুষ--- ধর্মের মোহজাল ছিঁড়ে বেড়িয়ে এসে মুক্তজীবন লাভের কথা ভাবতেই ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে পড়ে। এই ভয়কে জয় কোরে মুক্তিলাভে সক্ষম হয় যে (যুক্তিপ্রিয় সত‍্যপ্রেমী মুক্তমনের) জন, সে-ই হলো প্রকৃত আলোকপ্রাপ্ত মানুষ।।2020-09-1405 minসদগুরু মহর্ষি মহামানসসদগুরু মহর্ষি মহামানসভাগ্য আসলে কীভাগ্য আসলে কী ভাগ্য হলো~ মহাবিস্ফোরণের মধ্য দিয়ে মহাবিশ্ব-সৃষ্টি শুরু হওয়ার সাথে সাথেই স্বয়ংসৃষ্ট--- স্বয়ংক্রিয় এক জাগতিক ব‍্যবস্থা। এই ব‍্যবস্থায়, ঐ বিস্ফোরণের মূহুর্তেই স্বয়ংক্রিয়ভাবে নির্ধারিত হয়ে যায়--- পরম্পরাগত ঘটনাক্রমে কখন--- কোথায়--- কী ঘটবে। এরই নাম ভাগ্য।  এখানে যাকিছু ঘটছে, সব কিছুর মূলে রয়েছে ভাগ্য, ভাগ্যই সব কিছুর জন্য দায়ী। আর এই ভাগ্য পূর্ব নির্ধারিত এবং অপরিবর্তনীয়। তবে, ভাগ্যকে কার্যকর ফলবৎ হতে, বিভিন্ন কার্য-কারণের ভিত্তিতে, পরিবেশ-পরিস্থিতি সাপেক্ষে, যুক্তি-বিজ্ঞানের পথ ধরেই অগ্রসর হতে হয়। ভাগ্যের জন্যেই আমরা কেউ সুখী -কেউ দুঃখী, কেউ সফল –কেউ অসফল৷ ভাগ্যের জন্যেই আমাদের এত দুঃখকষ্ট-যন্ত্রনা। তাই, ভাগ্যকে খুব ভালোভাবে জানা প্রয়োজন৷ জ্ঞান ও চেতনার স্বল্পতার কারণে ভাগ্য এবং তার গতিবিধি সহ সমস্ত কার্য-কারণ যুক্তি-বিজ্ঞান আমাদের দৃষ্টিগোচর হয়না। আবার কখনো কিছু অংশে দৃষ্টিগোচর হলেও তার প্রতিকার দৃষ্টিগোচর বা ধারণাগত হয়না, অথবা প্রতিকার সম্ভব হয়ে ওঠেনা৷ ফলে, আমরা অসহায়ের মতো দুঃখ-কষ্ট-যন্ত্রনা ভোগ করে থাকি, অসফল ব্যর্থ ক্ষতিগ্রস্ত হই৷ মনে রাখতে হবে, আমরা এবং আমাদের যাবতীয় কার্যকলাপ, সবই ভাগ্যের দান৷ আমরা কেউই ভাগ্য প্রসুত ঘটনা প্রবাহের বাইরে নই। তাই, আমাদের কর্তব্য ভাগ্যকে তার স্বরূপে জানা।2020-09-1420 minসদগুরু মহর্ষি মহামানসসদগুরু মহর্ষি মহামানসবিশ্ব আত্মা বা ঈশ্বর মন :বিশ্বাত্মা বা ঈশ্বর মন নিয়ে অনেকেই সন্দিহান। যারা নিজের মনটাকেই এখনো ঠিকমতো বুঝতে বা জানতে পারেনি, তাদের পক্ষে ঈশ্বর-মনকে বোঝা বা জানা, তার অস্তিত্ব উপলব্ধি করা সত্যিই দুষ্কর। মনকে বুঝতে হয় মন দিয়েই। আর তার জন্য প্রয়োজন হয়--- সজাগ-সচেতন-সত‍্যপ্রিয়, যথেষ্ট বিকশিত মুক্ত-মন। বিশ্বাত্মা বা ঈশ্বর-মনের অস্তিত্ব উপলব্ধি করার পক্ষে এই নিদর্শনটি অনেকটা সহায়ক হবে আশাকরি। মরণশীল জীবের বংশবৃদ্ধির মধ্য দিয়ে--- তাদের অস্তিত্ব, বংশধারা বজায় রাখার উদ্দেশ্যে, ঈশ্বর যে কৌশল রচনা করেছে, তাতেই তার বুদ্ধিমত্তার পরিচয় পাওয়া যায়। আর, বুদ্ধিমত্তাই হলো 'মন'-এর উপস্থিতির নিদর্শন। অর্থাৎ যেখানে বুদ্ধি আছে, সেখানে অবশ্যই মন আছে। যেমন, কোথাও ধোঁয়া থাকলে--- আমরা সেখানে আগুনের অস্তিত্ব বা উপস্থিতি সহজেই অনুমান করতে পারি। এবার বলি, সেই কৌশলের কথা--- যৌন সুখের ব্যবস্থা করা এবং যৌনসুখের প্রতি জীবকে প্রলুব্ধ ক'রে তুলে, ---তার মধ্যে যৌন মিলনের তাড়নারূপ প্রোগ্রাম-এর অনুপ্রবেশ ঘটিয়ে, জীবকে যৌনমিলনে অনুপ্রাণিত বা বাধ্য ক'রে তোলার কৌশলটি অবশ্যই ঈশ্বরের বুদ্ধিমত্তার পরিচয়। স্রষ্টার বুদ্ধিমত্তার আরেকটি নিদর্শন হলো— উন্নতমানের জীব সৃষ্টির উদ্দেশ্যে নারী ও পুরুষ জীব সৃষ্টি করা এবং তাদের যথোপযুক্ত শরীর-যন্ত্র তৈরি করা। এসবের পিছনে স্পষ্টতই বুদ্ধিমত্তা বা বুদ্ধিমান সচেতন মনের অস্তিত্ব উপলব্ধ হয়ে থাকে। এছাড়া, আমরা যাতে নিজেদের শরীর বিনষ্ট ক'রে না ফেলি, আমরা রোগ-ব‍্যাধি, আঘাত-- আক্রমণ থেকে যাতে বাঁচার চেষ্টা করি, সেজন্য স্রষ্টা* আমাদের মধ্যে যন্ত্রণা বোধ দিয়েছে। যদিও, তার সব কাজই সম্পূর্ণ ও ত্রুটিমুক্ত নয়, আমাদের অনেকের কাছেই যথেষ্ট সন্তোষজনক নয়, তবুও সৃজনকালে (চেতনার ক্রমবিকাশের একটি বিশেষ স্তরে) তার জ্ঞান ও চেতনা সাপেক্ষে সে অনেক কিছুই করেছে। স্রষ্টা আমাদের দিয়েছে অনেক আত্মরক্ষার ব‍্যবস্থাও। খুঁজলে, এইরকম আরো অনেক নিদর্শন পাওয়া যাবে। আর একটু সূক্ষ্মভাবে পর্যবেক্ষণ করলে, দেখা যাবে--- আমাদেরকে স্বল্পচেতন মানব থেকে ক্রমশ উচ্চ--- আরও উচ্চ চেতনা ও জ্ঞান সম্পন্ন মানুষ ক'রে তোলার উদ্দেশ্যে , সে নানা প্রকার কৌশল তৈরী করেছে। এছাড়াও, আরো সূক্ষ্মভাবে পর্যবেক্ষণ করলে বোঝা যাবে, সুদীর্ঘকাল ধরে ঈশ্বর-মনও ক্রমশ একটু একটু ক'রে বিকশিত হয়ে চলছে। মনোবিকাশের সাথে সাথে তার সৃজন ক্ষমতারও যে উন্নতি হয়েছে, তা তার ক্রমোন্নত (কীট থেকে আরম্ভ করে উন্নত মানুষ) সৃষ্টির দিকে তাকালেই তা' স্পষ্ট বোঝা যাবে। আমাদের কাছে বিশ্বাত্মা/ ঈশ্বর অস্তিত্বের প্রমান-- বিশ্বাত্মা/ ঈশ্বর অস্তিত্ব প্রমাণ করতে হলে, আমাদের প্রমাণ করতে হবে--- ঈশ্বর-মনের অস্তিত্ব। আমাদের 'মহাবাদ' দর্শন অনুসারে --- আমরা মনে করি, সমস্ত বিশ্ব-ব্রহ্মান্ডই হলো ঈশ্বর-শরীর বা ঈশ্বর। এক্ষেত্রে, বিশ্বাত্মা/ ঈশ্বরের শরীর-অস্তিত্বের প্রমাণ দাখিল করার প্রয়োজন নেই। শুধু প্রমাণ করতে হবে, এই শরীরের মধ্যে একটি 'মহামন' আছে। আমরা মনে করি, বিশ্বাত্মা/ ঈশ্বর এই বিশ্ব-ব্রহ্মান্ড সৃষ্টি করেনি। সে নিজেই এই বিশ্ব-ব্রহ্মান্ড। অর্থাৎ তার পিছনে এক সৃষ্টিকর্তা অথবা সৃষ্টিরহস্য আছে। এ'নিয়ে পূর্বেই আমাদের 'মহাবিশ্ব সৃষ্টিরহস্য উন্মোচন' নামক সৃষ্টিতত্ত্বে যথাসম্ভব বর্ণনা করা হয়েছে। এই দর্শনে আমরা দেখেছি, বিশ্বাত্মা/ ঈশ্বর শুধু উদ্ভিদ ও জীব সৃষ্টি করেছে। পৃথিবীতে এই জীবশ্রেষ্ঠ মানুষ, সে আবার সৃষ্টি করেছে অনেক কিছু। বস্তুতঃ এই জীব সৃষ্টির কর্তা হলো ঈশ্বরের মন। আমাদের ক্ষেত্রেও, আমরা যাকিছু সৃষ্টি করছি--- তার প্রকৃত স্রষ্টা হলো আমাদের মন। এখন, এই মনকে বুঝতে হয় মন দিয়ে। মনের অস্তিত্বকে সরাসরি দেখা বা অনুভব করা--- আমাদের অধিকাংশ স্বল্প চেতন মনের পক্ষে প্রায় অসম্ভব। মনের অস্তিত্বকে আমরা অনুভব করি--- মনের কার্যকলাপের মাধ্যমে। মন হলো অনেকাংশে কম্পিউটার সফটওয়্যার-এর মতো একটি অতি উচ্চমানের সফটওয়্যার বিশেষ। এই সফটওয়ারের পিছনেও থাকে ডেভলপার---প্রোগ্রামার। এমনি এমনি কিছুই সৃষ্টি হয়ে যায় না।2020-09-1304 minসদগুরু মহর্ষি মহামানসসদগুরু মহর্ষি মহামানসমহর্ষি মহামানস-এর সর্বাধুনিক সৃষ্টিতত্ত্ব ● মহাবিশ্ব সৃষ্টিরহস্য উন্মোচন ● ১ম পর্ব ●সৃষ্টিরহস্য উন্মোচন ​ মহাবিশ্ব সৃষ্টিরহস্য উন্মোচন (মহর্ষি মহামানস-এর ‘মহাবাদ’ গ্রন্থ হতে গৃহীত আত্মধ্যান-লব্ধ মহাতত্ত্ব-জ্ঞান কান্ড— বিন্দুতে সিন্ধু দর্শন।)2020-09-1309 minসদগুরু মহর্ষি মহামানসসদগুরু মহর্ষি মহামানসমহর্ষি মহামানস-এর সর্বাধুনিক সৃষ্টিতত্ত্ব ● মহাবিশ্ব সৃষ্টিরহস্য উন্মোচন ● ২য় পর্ব ●সৃষ্টিরহস্য উন্মোচন ​ মহাবিশ্ব সৃষ্টিরহস্য উন্মোচন (মহর্ষি মহামানস-এর ‘মহাবাদ’ গ্রন্থ হতে গৃহীত আত্মধ্যান-লব্ধ মহাতত্ত্ব-জ্ঞান কান্ড— বিন্দুতে সিন্ধু দর্শন।)2020-09-1311 minসদগুরু মহর্ষি মহামানসসদগুরু মহর্ষি মহামানসমহর্ষি মহামানস-এর সর্বাধুনিক সৃষ্টিতত্ত্ব ● মহাবিশ্ব সৃষ্টিরহস্য উন্মোচন ● ৩য় পর্ব ●সৃষ্টিরহস্য উন্মোচন ​ মহাবিশ্ব সৃষ্টিরহস্য উন্মোচন (মহর্ষি মহামানস-এর ‘মহাবাদ’ গ্রন্থ হতে গৃহীত আত্মধ্যান-লব্ধ মহাতত্ত্ব-জ্ঞান কান্ড— বিন্দুতে সিন্ধু দর্শন।)2020-09-1306 minসদগুরু মহর্ষি মহামানসসদগুরু মহর্ষি মহামানসমহর্ষি মহামানস-এর সর্বাধুনিক সৃষ্টিতত্ত্ব ● মহাবিশ্ব সৃষ্টিরহস্য উন্মোচন ● ৪র্থ পর্ব ●সৃষ্টিরহস্য উন্মোচন ​ মহাবিশ্ব সৃষ্টিরহস্য উন্মোচন (মহর্ষি মহামানস-এর ‘মহাবাদ’ গ্রন্থ হতে গৃহীত আত্মধ্যান-লব্ধ মহাতত্ত্ব-জ্ঞান কান্ড— বিন্দুতে সিন্ধু দর্শন।)2020-09-1309 minসদগুরু মহর্ষি মহামানসসদগুরু মহর্ষি মহামানসমহর্ষি মহামানস-এর সর্বাধুনিক সৃষ্টিতত্ত্ব ◆ মহাবিশ্ব সৃষ্টিরহস্য উন্মোচন ● ৫ম পর্ব ●সৃষ্টিরহস্য উন্মোচন ​ মহাবিশ্ব সৃষ্টিরহস্য উন্মোচন (মহর্ষি মহামানস-এর ‘মহাবাদ’ গ্রন্থ হতে গৃহীত আত্মধ্যান-লব্ধ মহাতত্ত্ব-জ্ঞান কান্ড— বিন্দুতে সিন্ধু দর্শন।)2020-09-1314 minসদগুরু মহর্ষি মহামানসসদগুরু মহর্ষি মহামানসআগ্রহ ও ভালবাসার মূলে থাকে স্বার্থআগ্রহ ও ভালবাসার মূলে থাকে স্বার্থ—লাভ—আনন্দ—উপকার প্রভৃতি। কিন্তু স্বার্থ থাকা সত্বেও অনেকের ক্ষেত্রে আগ্রহ—ভালবাসার অভাব দেখা যায়। কেন এটা হয়? যে ব্যক্তি নিয়মিত আমার স্বার্থ দেখছে— আমার স্বার্থ পুরণ ক’রে চলেছে। যে আমাকে খাওয়াচ্ছে— পড়াচ্ছে, তার প্রতি আমি উদাসীন—অকৃতজ্ঞ হয়ে থাকছি। আর যে হঠাৎ ক’রে একদিন আমাকে কিছু উপহার দিলো, অথবা কোনো কিছু খেতে দিলো, —তার প্রতি আগ্রহ বেড়ে গেলো আমার! এরকম কেন হয়? এর পিছিনে থাকে ত্রুটিপূর্ণ শিক্ষা অথবা শিক্ষার অভাব। আমাদের মনের মধ্যে গেঁথে থাকা কোনো ভুল ‘প্রোগ্রাম’ —যা আমাদেরকে ভুল পথে চালিত করে, এবং/অথবা মানসিক অসুস্থতা বা চেতনার অভাব বা বোধ হীনতা। উন্নত পারিবারিক বা সামাজিক পরিবেশ এবং সেই সাথে উপযুক্ত শিক্ষা আমাদের বোধোদয় ঘটাতে পারে। এখানে মা-বাবা ও শিক্ষকের মুখ্য ভূমিকা থাকে। তাই, সর্বাগ্রে মা-বাবা ও শিক্ষককে প্রকৃত শিক্ষা— জীবন মুখী শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে উঠতে হবে। তবেই ছাত্র-ছাত্রী —সন্তানকে শিক্ষিত ক’রে তোলা সম্ভব হবে।   এইসব শিশুরা কিন্তু প্রকৃতই ‘স্বার্থপর’ নয়। স্বার্থ কি জিনিস সেটাই এরা ঠিকমতো জানেনা। নিজের স্বার্থ সঠিক ভাবে বুঝতে পারলে— এরা নিজের স্বার্থেই অপরের স্বার্থ দেখবে। অপরাপর সব মানুষের স্বার্থ দেখাটাও এরা নিজেদের স্বার্থ মনে করবে।    তুমি যা ভাবছো— যা করছো, তার পিছনে রয়েছে অসংখ্য ঘটনা। কোটিকোটি ঘটনার ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া থেকে জন্ম নেয় আরো কোটিকোটি ঘটনা। আবার, সেইসব ঘটনার ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া থেকে সৃষ্টি হয় আরো অজস্র ঘটনা। এইরূপে, পরম্পরাগতভাবে— বর্তমানে জন্ম নেওয়া অসংখ্য ঘটনার মধ্যে একটি হলো— তোমার চিন্তা, আরেকটি— তোমার কর্ম। এদের থেকে আবার জন্ম নেবে অজস্র ঘটনা। এই ভাবেই বয়ে চলেছে—ঘটনা প্রবাহ।   তোমার চিন্তা— তোমার কর্ম— বর্তমান ও অতীতের অসংখ্য ঘটনার সাথে নানাভাবে সম্পর্কযুক্ত, এবং অসংখ্য ঘটনার মধ্যে অজস্র ক্রিয়া-বিক্রিয়ার ফল। তুমি— তোমার অস্তিত্ব— তোমার কর্ম, সব কিছুই এই জাগতিক ব্যবস্থার ফসল।2020-09-1302 minসদগুরু মহর্ষি মহামানসসদগুরু মহর্ষি মহামানসপ্রসঙ্গ স্বার্থ ।। স্বার্থই এ জগতের মূল কারণহ‍্যাঁ, প্রকৃত অর্থে— স্বার্থই এই জগতের মূল কারণ। আমাদের চেতনার স্তর ভেদে, এবং সুস্থতা-অসুস্থতার অবস্থাভেদে— এই স্বার্থের অনেক প্রকারভেদ ঘটতে পারে। কিন্তু সে যা-ই হোক, মূলতঃ তা' স্বার্থ-ই। স্বার্থ হলো— নিজের সুবিধা, প্রয়োজন, মঙ্গল, তৃপ্তি—সুখ, লাভ, ভালোলাগা, এবং নিজের প্রতি ভালোবাসা। এবং তার জন্যই যাবতীয় কামনা-বাসনা— চাহিদা, অভিলাষ, স্পৃহা, অনুরাগ-প্রেম, আকর্ষণ, কর্মেচ্ছা প্রভৃতি। স্বার্থ অনেক সময় স্পষ্ট নাও হতে পারে। তা' আমাদের জ্ঞাতে ও অজ্ঞাতে— ঐচ্ছিক ও অনৈচ্ছিক ভাবে কাজ করে থাকে। এই জগতের অন্যতম প্রধান চালিকাশক্তি হলো ইচ্ছাশক্তি। আমাদের শরীর ও মনের মতই, এই জগতও ঐচ্ছিক ও অনৈচ্ছিক— উভয় প্রকার শক্তির সমন্বয়ে চালিত হলেও, এসবের পিছনে আছে আদি ইচ্ছাশক্তি। আবার, এই ইচ্ছা চালিত হয় মূলত স্বার্থের তাগিদে। 'সুখ ও শান্তি' প্রসঙ্গে বলেছি, প্রধানত সুখ লাভের চাহিদার জন্যই সমস্ত সৃষ্টি সম্ভব হয়েছে। এই সুখ লাভের চাহিদাতো আসলে স্বার্থ-ই। অনেক ভাববাদীগণ হয়তো বলবেন, প্রেম-ই সমস্ত জগৎ-সংসারের মূল কারণ। কিন্তু, এই প্রেমের মূলে আছে নিজের প্রতি প্রেম —নিজেকে ভালোবাসা। তার ভিত্তিতেই, পরবর্তীতে আসে অন্যান্য বিষয়বস্তু ও ব্যক্তি তে প্রেম। যাকিছু নিজের চাহিদা ও প্রয়োজন মেটায়, স্বার্থ পূরণ করে, যাকিছু নিজেকে তৃপ্ত করে— সুখী করে। এবং যার মধ্যে নিজের ছায়া বা সাদৃশ্য পরিলক্ষিত হয়, তাদের প্রতি প্রেম-ভালোবাসা জন্মায়। সব প্রেমের মূলেই আছে স্বার্থ। স্বার্থ ছাড়া প্রেম হয় না। অবস্থাভেদে, এই 'স্বার্থ' সূক্ষ্ম হতে পারে, এমনকি আপাত দৃষ্টিতে দৃশ্যমান নাও হতে পারে। আবার এই 'স্বার্থ' স্থুল বা পার্থিব-ও হতে পারে। প্রকৃতি ভেদে, কেউ নিজ স্বার্থের জন্য অপরের ক্ষতি করতে দ্বিধাগ্রস্ত নয়। কেউবা অপরের লাভ-ক্ষতির কথা কিছুই ভাবে না, শুধু নিজের স্বার্থটাই বোঝে। কেউ আবার দেশের ও দশের স্বার্থকেই নিজের স্বার্থ মনে করে থাকেন। আর তাই তিনি অপরের স্বার্থ ক্ষুন্ন করে নিজের স্বার্থ পূরণের অনিচ্ছুক। আবার কোটি হলেও, উচ্চ চেতনাসম্পন্ন এমন মানুষও আছেন, যাঁঁরা সবকিছুর সাথে একাত্ম বোধ করে থাকেন। স্বল্প-জ্ঞান ও স্বল্প-চেতনার কারণে, কারো স্বার্থবোধ —স্বার্থ চিন্তা এবং কর্মে তার প্রতিফলন— এক প্রকারের হয়। আর উচ্চ চেতনাসম্পন্ন প্রজ্ঞাবান ব্যক্তিদের স্বার্থচিন্তা এবং তার কর্ম হয় আর এক প্রকারের। স্বার্থচিন্তা ছাড়া যাদের এক মুহূর্তও চলে না, তাদের কেউ যদি 'স্বার্থ' কথাটি ব্যবহারে শুচিবায়ুতা দেখায়, তা' আসলে ভাবের ঘরে চুরি করাই বোঝায়। এ'ভাবে আর কতদিন চলবে, এবার সত্যের মুখোমুখি হওয়ার সময় এসেছে! যথেষ্ট চেতনার অভাবে, উপযুক্ত শিক্ষার অভাবে— মানুষ নিজের স্বার্থটাই ঠিকমতো বুঝতে শেখেনি এখনো। তাই সে আত্ম-ধ্বংসাত্মক— স্বার্থবিরোধী কাজ করে চলেছে প্রতিনিয়ত। আদিসত্তা —পরমাত্মা এবং বিশ্বাত্মা বা ঈশ্বরের এই জগত সৃজন লীলার পিছনেও আছে— স্বার্থ। আত্মজিজ্ঞাসা, আত্ম-অন্বেষণ, আত্মবিকাশ —এসবই স্বার্থ সম্পর্কিত। ঈশ্বরের সৃষ্টি এবং তার অংশরূপে আমাদের মধ্যেও ঈশ্বরের গুণ বর্তমান। আমরা এখন যে চেতন-স্তর গুলিতে অবস্থান করছি, বিশ্বাত্মা অর্থাৎ ঈশ্বরও তার শৈশব ও কৈশোরের বিভিন্ন সময় এই চেতন-স্তরগুলিতে অবস্থান করেছে (সৃষ্টিতত্ত্ব দ্রষ্টব্য)। সেই সময়, ঈশ্বরের চাহিদা— স্বার্থচিন্তাও প্রায় আমাদের অনুরূপ ছিল। চেতনার ক্রমবিকাশের মধ্য দিয়ে ঈশ্বর এখন অনেক উচ্চচেতন-স্তরে উপনীত হয়েছে। এখনকার চেতনা সাপেক্ষে তার স্বার্থচিন্তাও তদনুরূপ। স্বার্থরক্ষা হলে— চাহিদামতো প্রাপ্তি ঘটলে, তার পরিণতিতে আমাদের মনের মধ্যে 'সুখ' নামক এক ভালোলাগার অনুভূতি সৃষ্টি হয়। —যা আমাদের মধ্যে অন্তর্গ্রথিত নির্দেশ বা (কম্পিউটার প্রোগ্রামের মতো) 'প্রোগ্রাম' অনুযায়ী আমাদের কাছে অত্যন্ত কাম্য বলে বোধ হয়ে থাকে। তাই, স্বার্থরক্ষা যেমন আমাদের কাছে অভিষ্ট, তেমনি স্বার্থরক্ষার অন্তিম ফলস্বরূপ— লব্ধ 'সুখ'-ও আমাদের কাছে অভীষ্ট হয়ে থাকে। এখন, বিভিন্ন ধরনের স্বার্থ সম্বন্ধীয় বিষয়ের মধ্যে— সুখ-ও একটি স্বার্থ। আবার, অন্যান্য স্বার্থরক্ষার অন্তিমেও ঘটে সেই সুখলাভ। স্বভাবতই প্রশ্ন ওঠে, কোনটি আমাদের প্রধান অভিষ্ঠ? বিভিন্ন প্রকৃতির মানুষের বিভিন্ন ধরনের স্বার্থ বা স্বার্থানুগ চাহিদার মধ্যে সুখলাভের চাহিদাই কী তাহলে প্রধান অভীষ্ট? আসলে, সুখলাভের চাহিদা না থাকলে, জীব তথা মানুষ— কর্মে প্রবৃত্ত হতে, শরীর ও মনের প্রয়োজন মেটাতে ততটা উদ্যোগী হতো না, যতটা সে সুখ লাভের জন্য হয়ে থাকে। তাই, কতকটা 'খুড়োর কল'-এর মতো, সুখলাভের এই কল বা কৌশল রচনা করেছে বিশ্বাত্মা বা ঈশ্বর। ঈশ্বরের বুদ্ধিমত্তার এ'হলো এক স্পষ্ট প্রমাণ। জীবকে বংশবৃদ্ধিতে বাধ্য করতে, সেখানেও সে রেখেছে এই সুখ-এর প্রলোভন। স্বল্প-চেতন বন্যপ্রাণীকে পোষ মানাতে, তাকে দিয়ে ইচ্ছেমতো বা প্রয়োজন মতো কাজ2020-09-1307 minসদগুরু মহর্ষি মহামানসসদগুরু মহর্ষি মহামানসপ্রসঙ্গ : ভক্তি ।। অজ্ঞান ভক্তি ও সজ্ঞান ভক্তিপ্রসঙ্গ : ভক্তি অজ্ঞান ভক্তি ◆ সজ্ঞান ভক্তি।   পথ মূলতঃ দুটি। একটি হলো বিশ্বাসের পথ, আর অপরটি হলো যুক্তি বা জ্ঞানের পথ । ভক্তি ও কর্ম~ দুটি পথের সঙ্গেই যুক্ত থাকে। কর্ম ছাড়া কোনো পথেই চলা সম্ভব নয়। জ্ঞানপথের পথিকেরও ভক্তি থাকে, সে হলো জ্ঞান ও সত‍্যের প্রতি ভক্তি। সাধারণত, যাকে ভক্তিপথ বলা হইয়ে থাকে, সেটি আসলে বিশ্বাসের পথ। ভক্তিযোগ দুই প্রকার। এক— অজ্ঞান ভক্তি, দুই— সজ্ঞান ভক্তি। ক্রমবিকাশমান চেতনার পথে—, একই পথের বিভিন্ন স্তরের বিভিন্ন রূপ। অজ্ঞান ভক্তিযোগের পরে, হোঁচট খেতে খেতে একটা সময়ে আসে নাস্তিকতা। তারপর আসে জ্ঞানযোগের অধ‍্যায়। জ্ঞানযোগের মধ‍্যেও রয়েছে কয়েকটি স্তর। এই জ্ঞানযোগের পরে যে ভক্তিযোগের অধ‍্যায় আসে, সে-ই হলো সজ্ঞান ভক্তিযোগ। নিজেকে তথা ঈশ্বরকে নিজেদের স্বরূপে জানার পর যে ভক্তি জন্মায়, সেই হলো বিশুদ্ধ ভক্তি। মায়া-মোহমুক্ত— অজ্ঞানতা মুক্ত শুদ্ধ ভক্তি। সে-ই শ্রেষ্ঠ ভক্তিযোগ। এই স্তরগুলির আগে— পরে ও মাঝেও অনেক ছোট ছোট স্তর আছে। এই ভাবেই ধাপে ধাপে— পায়ে পায়ে বিভিন্ন স্তর পেরিয়ে একসময় আমরা পৌঁছে যাবো পরম লক্ষ্যে। পূর্ণ বিকাশের লক্ষ্যে। অন্তিমে ঘটবে ঈশ্বরত্ব লাভ। চেতনার পূর্ণ বিকাশ। ​2020-09-1301 minসদগুরু মহর্ষি মহামানসসদগুরু মহর্ষি মহামানসভালোবাসা প্রসঙ্গে মহামানসপ্রসঙ্গ ভালোবাসা  ভালোবাসা মূলতঃ দুই প্রকার। সজ্ঞান—সচেতন ভালোবাসা, আর অজ্ঞান— সহজাত ভালোবাসা। প্রত‍্যেকের ক্ষেত্রেই তার নিজের অজান্তেই প্রথম ভালোবাসা— সহজাত ভালোবাসা হলো, —নিজেকে ভালোবাসা। নিজের প্রতি ভালোবাসা। এই নিজেকে ভালোবাসার উপর ভিত্তি করেই গড়ে ওঠে অপরাপর মানুষ ও জীবসহ বিভিন্ন বিষয়-বস্তুকে ভালোবাসা। যে বা যারা অংশত নিজের অনুরূপ তাদের প্রতি স্বভাবতই ভালোবাসা জন্মায়। তারপর, যাকিছু নিজেকে তৃপ্তি দেয়, আরাম— আনন্দ দেয়, সুখ ও শান্তি দেয়, সেইসব বিষয়-বস্তুকে পছন্দ, এবং ক্রমে ভালোবাসা গড়ে ওঠে। আর এর ব‍্যতীক্রম ঘটলেই, সেখানে ভালোবাসার অভাব দেখা দেয়। অজ্ঞান-অন্ধ-আবেগপূর্ণ ভালোবাসা অনেক সময়েই উন্মাদনা সৃষ্টি করে— বিপত্তি ঘটাতে পারে।কিন্তু সজ্ঞান-সচেতন ভালোবাসায় আবেগ কিছু কম থাকলেও, তা অনেকাংশে নিরাপদ এবং শুভ ফলপ্রদ। ভালোবাসার মূলে থাকে স্বার্থ। সে— জ্ঞাতেই হোক, আর অজ্ঞাতেই হোক, সহজাত অজ্ঞান ভালোবাসাই হোক, আর সজ্ঞান— সচেতন ভালোবাসাই হোক, স্বার্থ-ই হলো ভালোবাসার মূল উৎস।2020-09-1301 minসদগুরু মহর্ষি মহামানসসদগুরু মহর্ষি মহামানসযোগ রহস্যযোগ রহস্য    'যোগ' কথাটির অর্থ হলো মিলন বা যুক্ত হওয়া। যেমন, এক আর এক মিলে দুই হয়। কিন্তু অতি উচ্চস্তরের 'যোগ'-এ, এক আর এক মিলে 'এক' হয়ে যায়। সেক্ষেত্রে দুটি অস্তিত্ব মিলেমিশে একাত্ম বা একাকার হয়ে যায়। আসলে, 'যোগ' হলো কোনকিছুর সঙ্গে মানসিক সংযোগ স্থাপনের এক মনস্তাত্বিক পদ্ধতি। ব্যবহারিক 'যোগ'-এ, 'যোগ' কথাটি ওই 'এক' হওয়ার উপায় বা পথ বা পদ্ধতি হিসেবেই ব্যবহৃত হয়ে থাকে। তবে, অধিকাংশ ক্ষেত্রে একাকার না হয়ে, নিজের স্বাতন্ত্র্য বজায় রেখেই যতটা সম্ভব যুক্ত হওয়ার চেষ্টা থাকে। ব্যক্তিবিশেষের চাহিদা অনুসারে এটা ঘটে থাকে। যেমন, শরীর ও মনের যোগ, সচেতন-মন এবং অবচেতন-মনের যোগ, একজনের মনের সঙ্গে অপরজনের মনের যোগ। এছাড়াও ব‍্যক্তি-মনের সঙ্গে ঈশ্বর মনের যোগ ঘটানোর চাহিদাও থাকে অনেকের মধ্যে। এইরূপে নিজ অস্তিত্ব বজায় রেখেই যোগ-পদ্ধতির মধ্য দিয়ে, একজনের চাহিদামতো কোনো কিছুর সঙ্গে মিলিত হবার একটি সক্রিয় উদ্যোগ-ই হলো, যোগ-প্রক্রিয়া বা যোগাভ্যাস, বা যোগ সাধনা। ধ‍্যানী ও ধ‍্যেয় বিষয়বস্তুর মধ্যে সঠিক ভাবে যোগ কার্যটি সংঘটিত হলে, যোগীর ধ‍্যেয় বিষয়-বস্তুটির অন্তর্নিহিত সত্যটি যোগীর নিকট উদঘাটিত হয় বা প্রকাশ লাভ করে থাকে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই মিলনের জন্যেই মিলন নয়, সত্য লাভ বা সত্য উদঘাটন-ই হলো যোগের মূল লক্ষ্য। জ্ঞাতে বা অজ্ঞাতে অধিকাংশ গবেষণা এবং বৈজ্ঞানিক আবিষ্কারের পিছনেও থাকে এই যোগ। এখানেই যোগসাধনার সাফল্য। এখানে আমরা যোগ শব্দটি ব্যাপক অর্থে ব্যবহার করি, উদাহরণস্বরূপ - আমি বলছি এবং তুমি শুনছো, এটিও আমাদের কাছে 'যোগ'। জীবন হ'ল যোগের একটি কোর্স, ব্যক্তি জীবনের ক্ষেত্রে যেমন, মহাজাগতিক জীবনের ক্ষেত্রেও তেমনি। জীবনের মূল লক্ষ্য হ'ল আত্ম-বিকাশ। আমরা একই পথের পথিক, বিকাশমান চেতনার পথ। অস্ফূট-চেতন স্তর থেকে ক্রমাগত বিকাশের মাধ্যমে— পূর্ণবিকাশের লক্ষ্যে এগিয়ে চলাই হলো –মহাযোগ প্রক্রিয়া। এই বিকাশ কাজটি ঘটে থাকে— বিভিন্ন বোধগম্য শক্তি ও বস্তু, তথ্য ও তত্ত্ব, জ্ঞান-অভিজ্ঞতা এবং বিভিন্ন ধারণাগুলির সাথে সংযোগ স্থাপনের মাধ্যমে এবং আনন্দ উপভোগের মাধ্যমে। আমরা এখানে এক শিক্ষামূলক সফরে এসেছি। ধীরে ধীরে উচ্চ থেকে উচ্চতর চেতনা অর্জন করাই হলো এই মানব জীবনের অন্তর্নিহিত উদ্দেশ্য। এখানে, আমরা যত বেশি জ্ঞান অভিজ্ঞতা চেতনা অর্জনের মধ্য দিয়ে সমৃদ্ধ হতে পারবো, ততই আমরা উপকৃত হব। আধ্যাত্মিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে, সেই সময় যখন আমরা এখান থেকে চলে যাব— চেতনা ব্যতীত কিছুই আমাদের সাথে যাবে না।2020-09-1304 minসদগুরু মহর্ষি মহামানসসদগুরু মহর্ষি মহামানসপ্রসঙ্গ : পাপপ্রসঙ্গ: পাপ বিশ্বাত্মার বা ঈশ্বরের কাছে~ তোমার কর্মের জন্য তুমি দায়ী নও। তুমি যা করো তা জাগতিক ব‍্যবস্থা দ্বারা করিত হও বা করতে বাধ্য হও। এখানে পাপ -পূণ্য বলে কিছু নেই। এখানে, এই মনুষ্য সমাজে, রাষ্ট্রের দৃষ্টিতে বা বিচারে এবং আইনে কোনো ব‍্যক্তি তার কোনো কোনো কর্মের জন্য অপরাধী হিসাবে বিবেচিত হতে পারে, এবং শাস্তি পেতে পারে। কিন্তু বিশ্বাত্মা বা ঈশ্বর ও জাগতিক ব‍্যবস্থার কাছে সেই ব‍্যক্তি অপরাধী বা পাপী রূপে পরিগণিত হয়না, আর কোনো শাস্তিও পায়না। কে কাকে কেন শাস্তি দেবে!? মানুষ হলো এই জগতের— এই জাগতিক ব‍্যবস্থারই একটা অংশ। মানুষের ক‍র্মও এই জাগতিক কর্মকাণ্ডেরই একটা অংশ। আমি যা চিন্তা করছি, যে কর্ম ক‍রছি, সবকিছুই এই জাগতিক ব‍্যবস্থা আমাকে দিয়ে করাচ্ছে। আমি হলাম বিশ্বাত্মার (ঈশ্বরের) তৈরী ক্রীড়নক পুতুলের মতো। একথা শুধু আমার ক্ষেত্রে নয়, সবার ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। 'পাপ' কথাটা এবং পাপের শাস্তি— এই ব‍্যাপারটা প্রচলিত ধর্মের অবদান। তারা তাদের উদ্দেশ্য সিদ্ধির জন্য— শাস্তি -পুরষ্কার এবং পাপ -পূণ্য প্রভৃতি সৃষ্টি করেছে। এখানে মানব ধ‍র্ম— মহাধ‍র্ম -এর আলোচনায় অন্য কোনো ধর্মের প্রসঙ্গ আনলে হবে না। নিজস্ব জ্ঞান -বুদ্ধি, বিচার- বিবেচনা ও যুক্তি দিয়ে কথা বলবে, এটাই আশা করবো।2020-09-1301 minসদগুরু মহর্ষি মহামানসসদগুরু মহর্ষি মহামানসঅলৌকিকতা প্রসঙ্গেঅলৌকিকতা প্রসঙ্গে  অলৌকিক হলো তা'-ই ---যা লৌকিক নয়। অর্থাৎ ইহলোকের বা ইহজগতের নয়। পরলোক বা প্রেতলোকসহ এই জগতের বাইরের বিভিন্ন বিষয়-বস্তু, শক্তি-ক্ষমতা, ঘটনা এবং চেতন-সত্তা যখন আমাদের গোচরে আসে, তখন তাকেই অলৌকিক বলা হয়। আমাদের ইন্দ্রিয় ও বুদ্ধিগ্রাহ‍্য নয় এমন কিছুকে অনেকে অলৌকিক মনে করলেও, সবসময় যে তা' অলৌকিক হবে এমন নয়।    কঠিন বাস্তবের সঙ্গে অসম লড়াইয়ে পর্যুদস্ত অসহায় মানুষ— স্বভাবতই অলৌকিকতার প্রতি তীব্র আকর্ষণ বোধ করে থাকে। নিমেষের মধ্যে অথবা রাতারাতি ম্যাজিকের মতো সমস্ত আশা-আকাঙ্খা পূর্ণ হয়ে যাক, এটাই তার অবচেতন মনের প্রবল চাহিদা।  বিশ্বাস করি অথবা না করি, অলৌকিকতার প্রতি আমরা প্রায় সবাই— কমবেশি আকর্ষণ বোধ করে থাকি। আমরা আমাদের দেখা-শোনা— জানা জগতকে নিয়েই সন্তুষ্ট নই। আমাদের ধারণা— এর বাইরেও বহু কিছু আছে, —যা আমাদেরকে জ্ঞাতে-অজ্ঞাতে আকর্ষণ করে।  বিশ্বাসের সাথে সাথে সন্দেহও উঁকি দেয় আমাদের মনের কোণে। সত্যিই অলৌকিক বলে কি কিছু আছে? আমরা এমনতো অনেক কিছু দেখি, —যা গতকালের ভাবনায় ছিল অলৌকিক— অসম্ভব, আজ তা' লৌকিক হয়ে উঠেছে। শুধু অজানা থাকায় তারা অলৌকিক হয়ে ছিল আমাদের কাছে এত কাল।  হ্যাঁ, ইহলোকের অনেক কিছুই এখনো পর্যন্ত আমাদের অজানা। আমাদের চেনা জগতের মধ্যেই— বিস্ময়কর এমন অনেক কিছু আছে, যা আমাদের অজানা। অনেক সময়, তাদের সম্পর্কে কাল্পনিক ধারণা এবং তাদের কারো কারো আকস্মিক প্রকাশকেই আমরা আমাদের স্বল্প জ্ঞান ও স্বল্প চেতনার কারণে অলৌকিক বা অবাস্তব বলে ধরে নিই। কিন্তু এগুলিকে অলৌকিক বলা যাবে না। প্রথমেই বলেছি, অলৌকিক কথার অর্থ হলো--- যা লৌকিক নয় ইহজাগতিক নয়।  দূরদর্শন— দূরশ্রবন যন্ত্র দেখতে আমরা অভ‍্যস্ত। সেক্ষেত্রে আমরা তেমন বিস্মিত হইনা। কিন্তু মন তথা মস্তিষ্ক যন্ত্রের দূরদর্শন— দূরশ্রবন ক্ষমতার কথা শুনলেই আমরা তখন বিস্ময় প্রকাশ করি। তাকে অলৌকিক ক্ষমতা বলে ভেবে নিই। পরলোক সম্পর্কে আমাদের অনেকের সন্দেহ— অবিশ্বাস থাকলেও, আগ্রহ ও কৌতুহলও কম নেই। সেই পারলৌকিক কোন সত্তা যদি সত্যিই কোন ভাবে আমাদের জ্ঞান-গোচর হয়, তাহলেও আমরা তাকে ইহজাগতিক বলবো না, অলৌকিক বা পারলৌকিক-ই বলব। চেনা-জানা হলেই তা' লৌকিক হয়ে যাবে না।  আমাদের মধ্যে বেশকিছু মানুষ আছে, যারা অলৌকিকতার প্রতি তীব্র আকর্ষণ বোধ করে থাকে। এরা অধিকাংশেই অত্যন্ত বিশ্বাসপ্রবন মানুষ। এদের এই বিশ্বাসপ্রবণতা আর অলৌকিকতার প্রতি দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে— কিছু ধূর্ত-প্রতারক মানুষ এদেরকে শোষণ করে চলেছে। অনেকসময় ঠকলেও, এরা এদের অন্ধবিশ্বাসের মধ্য দিয়ে উৎপন্ন হওয়া বিশেষ মনঃশক্তির দ্বারা মাঝে মাঝে লাভবানও হয়ে থাকে। —যা এদের কাছে কোনো অলৌকিক সত্তা বা শক্তির কৃপা বা দান বলেই মনে হয়। ('বিশ্বাস ও জ্ঞান' এবং 'ঈশ্বর প্রসঙ্গে' দ্রষ্টব্য)  এ' হলো আসলে— অন্তর্নিহিত বিশেষ মনঃশক্তির তাৎক্ষণিক স্ফূরণ! এবং তার দ্বারা সাময়িকভাবে লাভবান হওয়ার ঘটনা। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তা' এই বিশেষ মনঃশক্তি-কেন্দ্রের স্থায়ী বিকাশ নয়। মস্তিষ্কের এই বিশেষ শক্তি-কেন্দ্রের স্থায়ী বিকাশ ঘটলে, ব‍্যক্তি অনেক অসাধারণ ক্ষমতার অধিকারী হতে পারে। —যা লৌকিক হলেও, অনেকের কাছে অলৌকিক ক্ষমতা বা শক্তি বলেই মনে হবে। মন সম্পর্কে যথেষ্ট জ্ঞানের অভাবেই আমরা অজ্ঞান-অন্ধের মত জীবন যাপন করে চলেছি।  এই মহাজগতে অসংখ্য অলৌকিক অস্তিত্বের সম্ভাবনা রয়েছে। কিন্তু অলৌকিক রূপে যেগুলি আমাদের সামনে আসে, তাদের মধ্যে কিছু অলৌকিক ঘটনা থাকলেও, বেশিরভাগেই থাকে অজানা জাগতিক ঘটনা আর প্রতারণামূলক কারসাজি, —যা ম্যাজিকের মতোই কোনো না কোনো কৌশল। জাগতিক ঘটনার মধ্যে আবার কিছু থাকে— বস্তুগত ও জাগতিক শক্তির খেলা। আর কিছু হলো— আমাদের মনোজগতের নানান কাণ্ডকারখানা। জ্ঞানের স্বল্পতার কারণে যেগুলি আমাদের কাছে অলৌকিক রূপে প্রতীয়মান হয়।  অলৌকিক ঘটনার মধ্যে আরেকটি উল্লেখযোগ্য হলো, গ্রহান্তরের জীব ও যন্ত্র এবং মহাকাশযানদের পৃথিবীতে অবতরণের ঘটনা। এ' বিষয়েও মানুষের চরম কৌতূহল— আগ্রহ লক্ষ্য করা যায়। এ'নিয়ে বহু গল্পগাঁথা, প্রবন্ধ, কল্পকাহিনী, চলচ্চিত্র প্রস্তুত হয়েছে, গবেষণাও হয়েছে এবং হচ্ছে এখনো। কিন্তু এসবের অনেক সম্ভাবনা থাকলেও, বিচ্ছিন্নভাবে কিছু কিছু প্রমাণ থাকলেও, সর্বজনগ্রাহ্য— যথেষ্ট নির্ভরযোগ্য— নিশ্চিত প্রমাণ এখনো পর্যন্ত পাওয়া যায়নি।  প্রকৃত অলৌকিক ঘটনা হিসেবে— যে ঘটনাগুলি সাধারণত ঘটে থাকে, তাদের মধ্যে অধিকাংশই— প্রেতলোকের বাসিন্দাদের দ্বারা সংঘটিত হওয়া ঘটনা। নিম্ন-চেতন-স্তরের প্রেতাত্মা, যারা ইহজগতের মায়া ত্যাগ করতে পারেনি, অতৃপ্ত সেইসব আত্মাই আমাদের চারিপাশে ঘোরাফেরা করে থাকে ('জীবাত্মা ও দিব‍্যাত্মা' দ্রষ্টব্য)। এবং ওরা আমাদের সাথে যোগাযোগ ঘটানোরও চেষ্টা করে থাকে। কিন্তু আমাদের মস্তিষ্কের বিশেষ 'রিসিভার' কেন্দ্রটি জাগ্রত ও সক্রিয় না থা2020-09-1209 minসদগুরু মহর্ষি মহামানসসদগুরু মহর্ষি মহামানসকর্ম ও কর্মফল (তৃতীয় পর্ব)নিষ্কাম কর্ম নিয়ে অনেকবারই আমাকে বিভিন্ন প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হয়েছে। এখানে কর্ম ও কর্মফল প্রসঙ্গে সে সম্পর্কে কিছু বলবো। নিষ্কাম কর্ম বলতে বোঝায়, কাম বা কামনাশূণ্য কর্ম। কামনা কথাটির অর্থ ইচ্ছাও হয়, আবার প্রত্যাশাও হয়। তবে নিষ্কাম কর্ম কথাটি অনৈচ্ছিক কর্ম বা ইচ্ছা বিরহিত কর্ম হিসেবে ব্যবহার হতে দেখা যায় না। সাধারণত এই কথাটি ব্যবহৃত হয়ে থাকে প্রত্যাশা বিহীন কর্ম অর্থাৎ কোনো ফলের আশা না করেই কৃত হয় যে কর্ম। আশা বা কামনাই যেহেতু দুঃখ কষ্টের অন্যতম কারণ, তাই নিষ্কাম কর্মকে জাগতিক দুঃখ কষ্টসহ মোহ মায়া থেকে মুক্ত হওয়ার এবং মুক্ত থাকার এক অতি সরলীকৃত উপায় হিসেবে উপদিষ্ট হয়ে থাকে কোথাও কোথাও। কিন্তু বেঁচে থাকার স্বার্থেই আমাদের মধ্যে অন্তর্গ্রথিত প্রোগ্রামের তাড়নাতেই আমাদেরকে অনেক কিছু কামনা করতে হয়, কামনা করতে বাধ্য হতে হয়। একমাত্র অসাধারণ ও অস্বাভাবিক ক্ষেত্র ছাড়া, কোনোরূপ প্রত্যাশা বিহীনভাবে অর্থাৎ কর্মফলের আশা ছাড়াই উদ্দেশ্যহীনভাবে সাধারণত কোনো কর্ম সংঘটিত হতে দেখা যায় না। কর্মের জন্য কর্ম, কর্মকে ভালবেসে কর্ম, কর্ম করতে ভালোলাগে তাই কর্ম, এছাড়া, দুঃখ কষ্ট যন্ত্রণা বা বিপদ থেকে রেহাই পাওয়ার বা শান্তি পাওয়ার জন্যেও অনেক কর্ম আমাদের জ্ঞাতে অজ্ঞাতে প্রায়শই সংঘটিত হয়ে থাকে। কিন্তু এই কর্মগুলির ক্ষেত্রে বিশেষ কোনো ফল প্রাপ্তির আশা না থাকলেও, সূক্ষ্ম বা সূক্ষ্মভাবে এর মধ্যে ভালোলাগা ভালোবাসা থাকে। অথবা শরীর এবং অথবা মনের আরাম সুখ কিছু না কিছু থাকেই।  ভালো লাগছে না, আবার কোন উদ্দেশ্যও নেই, কোনো ফলপ্রাপ্তির আশাও নেই, অথচ কেউ ঐচ্ছিকভাবে কর্ম করে চলেছে, এটা কোনো সুস্থ স্বাভাবিক সাধারণ চেতনা সম্পন্ন জীবের পক্ষে সম্ভব নয়। কেউ যদি ক্রীতদাসের মতো কোনো শক্তি বা শক্তিমানের কাছে পরাভূত হয়ে অনিচ্ছা সত্বেও, ভালো না লাগা সত্ত্বেও, বাধ্য হয়ে কোন কর্ম সম্পাদন করতে থাকে, সেক্ষেত্রে সে প্রাণ বাঁচানোর জন্য, শাস্তি বা মৃত্যু থেকে রেহাই পাওয়ার জন্যই তা কোরে থাকে। তার সে কর্মও নিষ্কাম কর্ম নয়। তাই, নিষ্কাম কর্ম যেন সোনার পাথরের বাটির মতোই একটা কিছু।  ঈশ্বর তথা জাগতিক ব্যবস্থা জীবের চেতনা বিকাশের উদ্দেশ্যে, জীবকে কর্মে প্রবৃত্ত করার জন্য প্রধানত দুটি ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। তার একটি হলো কর্মের মধ্য দিয়ে সুখকর ও স্বার্থানুগ ফল লাভের ব্যবস্থা। আর অপরটি হলো কর্মের মধ্য দিয়ে দুঃখ কষ্ট যন্ত্রণা, বিপদ, ক্ষয়ক্ষতি প্রভৃতি থেকে রেহাই বা মুক্তি পাওয়ার ব্যবস্থা। উভয় ক্ষেত্রেই কিছু না কিছু ফল লাভের ব্যবস্থা রয়েছে। মানুষ কর্মফলের আশা না করলে, মনুষ্যকৃত এই বিচিত্র কর্মময় জগৎ সৃষ্টিই হতো না। মানুষের চেতনার বিকাশও ঘটতো না সেভাবে। আর তা ঈশ্বর বা বিশ্বাত্মার অভিপ্রায় নয়। যথেষ্ট চেতনার বিকাশ না ঘটা পর্যন্ত জীবকে সকাম কর্মপথে চালনা করাই ঈশ্বরের ইচ্ছা।  এই জগতে কারণ ছাড়া কিছু ঘটে না। আর চেতনা ও মন সম্পন্ন কোনো সত্তাই এখানে উদ্দেশ্য ছাড়া কিছু করে না। আদিসত্তা পরমাত্মা থেকে ঈশ্বর বা বিশ্বাত্মা তথা জাগতিক ব্যবস্থা কেউই উদ্দেশ্য বিহীন নয়। কোনো লক্ষ্য ছাড়া কোনোরূপ স্বার্থ ছাড়া, কোনো অভিপ্রায় ছাড়া, কেউ কিছু করে না। অংশানুক্রমে ঈশ্বর সৃষ্ট জীবও তাদের মন সফটওয়ারে অন্তর্গ্রথিত প্রোগ্রাম বা নির্দেশ মতো, কোনো না কোনো উদ্দেশ্য নিয়ে কর্ম কোরে চলেছে। আর, যেখানেই উদ্দেশ্য আছে উদ্দেশ্য সিদ্ধির বাসনাও আছে সেখানে।  কামজ সন্তান সম্ভোগজাত বা কামনা থেকে জন্ম নেওয়া সন্তান যদি নিষ্কাম হয়, বুঝতে হবে সে অতি উচ্চ চেতনস্তরের মানুষ, আর নয় তো সে অসুস্থ। উচ্চ চেতনা সম্পন্ন জ্ঞানী মানুষ জানে, এখানে যা ঘটার ঠিক তাই ঘটে চলছে। সবই পূর্বনির্ধারিত মতো যথাস্থানে যথাসময়ে যথাযথভাবে ঘটে চলেছে। সে যা করছে, সে সবই পূর্বনির্ধারিত ভাবে তাকে করতে হচ্ছে— করতে বাধ্য হতে হচ্ছে। তার কর্মের ফলও পূর্বনির্দিষ্ট। তাছাড়া, অজ্ঞান অন্ধত্বের কারণে সৃষ্ট অনেক চাওয়া পাওয়াই আসলে মোহ মায়ার খেলা। উচ্চ চেতনার কারণে ব্যক্তি মোহ মায়া অজ্ঞান অন্ধত্ব থেকে অনেকটাই মুক্ত হওয়ার ফলে, এবং তার জ্ঞান পাকাপোক্ত হওয়ার ফলে, সে তখন অনেকটাই নিস্পৃহ নিরাসক্ত, উদাসীনভাবে কর্ম কোরে চলে। পূর্ণ জ্ঞান পূর্ণ চেতনা সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত, পুরোপুরি কামনা বাসনা আসক্তি শূন্য হওয়া সম্ভব হয় না। আর এই মানব জীবনেই পূর্ণ বিকাশলাভও সম্ভব নয়।  পূর্ণ জ্ঞান পূর্ণ চেতনার জন্য আমাদেরকে মানবোত্তর জীবনে ক্রমশ উচ্চ চেতন স্তরগুলি পার হতে হবে। উচ্চ মানব চেতনায় যা হয়ে থাকে, তা হলো কামনার উগ্রতা অনেকটাই কোমে গিয়ে, তা ক্ষীন হোয়ে আসে ক্রমশ। উদ্দেশ্য এবং উদ্দেশ্য সিদ্ধির কামনা, ফল লাভের আশা আকাঙ্ক্ষা সবই থাকে, তবে তা বেশ কম এবং নিয়ন্ত্রিত মাত্রায় থাকে। আসলে, চেতনার সেই স্তরে যা ঘটার ঠিক তাই ঘটে থাকে। তেমনি, নিম্ন চেতন স্তরগুলিতে2020-09-1205 minসদগুরু মহর্ষি মহামানসসদগুরু মহর্ষি মহামানসকর্ম ও কর্মফল (দ্বিতীয় পর্ব)কর্ম ও কর্মফল (দ্বিতীয় পর্ব)    জীব হলো ঈশ্বর (বিশ্বাত্মা) সৃষ্ট--- বিভিন্ন চেতন স্তরের চেতনা যুক্ত, বিভিন্ন আকার ও প্রকারের দেহ ও মনরূপ 'হার্ডওয়্যার' ও 'সফ্টওয়্যার' সম্পন্ন জৈব যন্ত্রবিশেষ। যার মধ্যে কম্পিউটার প্রোগ্রামের মতোই ঈশ্বরের নির্দেশ অন্তর্গ্রথিত করা আছে। জীব যা কিছু করে--- সেই নির্দেশ বা প্রোগ্রাম অনুযায়ী সে কাজ ক'রে থাকে। জাগতিক ব্যবস্থা এবং জাগতিক ঘটনা পরম্পরা, আর জগতে জীবের অবস্থান অর্থাৎ পরিবেশ-পরিস্থিতি এবং জীবের দেহ ও মনের অবস্থা সহ অন্তর্নিহিত প্রোগ্রাম বা নির্দেশের ভিত্তিতে জীবের কর্ম সংঘটিত হয়। আমাদের মন-সফট্ওয়ারে ঈশ্বর কৃত প্রোগ্রামের বিশেষত্ব হলো, মন ওই প্রোগ্রামের ভিত্তিতে--- নিজেকে নিজে এবং অপরের দ্বারাও প্রোগ্রামড্ করতে এবং হতে পারে।  অনেক মানুষই তলিয়ে ভাবতে চায় না, যে যা বলে, তা-ই সে বিশ্বাস করে। পূর্বজন্ম এবং পূর্বজন্মের কর্মফল পরবর্তী জন্মে ভোগ করা, ---তেমনই একটি অন্ধ-বিশ্বাস। পূর্বজন্ম বলে যে কিছু নেই, ---সে সম্পর্কে 'মহাবাদ' গ্রন্থে বিশদভাবে আলোচিত হয়েছে। আর, পূর্বজন্ম না থাকলে--- পূর্বজন্মের কর্মফল ভোগ করার কথাই আসে না। তবুও, দৃঢ়মূল অন্ধ-বিশ্বাস এমনই একটা 'প্রোগ্রাম' বা সংস্কার--- যে যুক্তির ধার ধারে না।  মানুষ আংশিক জ্ঞান ও চেতনা সম্পন্ন--- সচেতন ও অবচেতন মনের অধিকারী। তাই সে নানা দোষ-গুণে ভরা। সুকর্ম--- কুকর্ম করা একমাত্র মানুষ নামক জীবের পক্ষেই সম্ভব। তবে, মনুষ্যসমাজে তার দোষ-গুণের বিচার হলেও, ঈশ্বর বা জাগতিক-ব্যবস্থার কাছে সে কিন্তু তার কর্মের জন্য মোটেও দায়ী নয়। মানুষ যা কিছু করে--- সবই সে করতে বাধ্য হয়। তার স্বতন্ত্র কর্মক্ষমতা বলে কিছু নেই। মানুষ যন্ত্রবৎ কর্ম করে যায়। স্বল্প জ্ঞান ও চেতনার কারণে সে ভাবে, ---'আমিই করছি'। আসলে, এই জগতে প্রত্যেকের ভিন্ন ভিন্ন কর্ম ও অবস্থার জন্য দায়ী হলো--- ভাগ্য।  সংক্ষেপে, ভাগ্য হলো— জগত সৃষ্টির মূহুর্তেই স্বয়ংক্রিয়ভাবে নির্ধারিত হয়ে যাওয়া পরবর্তী সমস্ত ঘটনাক্রম। জগতব্যাপি সংঘটিত--- পরম্পরাগত ঘটনাপ্রবাহ এবং তার কারণ। প্রতিটি ঘটনা তার পরবর্তী পরম্পরাগত ঘটনার আপাত কারণ। কখন— কোথায়— কী ঘটবে—, সমস্ত জাগতিক ঘটনা সুনির্দিষ্ট হয়ে আছে— জগত সৃষ্টির একেবারে শুরুতেই। —এরই নাম ভাগ্য ('ভাগ্য' প্রবন্ধ দ্রষ্টব্য)। এই ভাগ্যকে ভালোভাবে জানতে পারলেই, আমাদের ভিন্ন ভিন্ন কর্ম ও অবস্থা এবং অবস্থানের কারণ বোঝা যাবে। জীবের যাবতীয় কার্যকলাপ--- সবই ভাগ্য নির্ধারিত। আমরা কেউই জাগতিক ঘটনাপ্রবাহের বাইরে নই। ভাগ্য আমাদের ভিতরে—বাহিরে, জ্ঞাতে-অজ্ঞাতে বিভিন্ন ভাবে বিভিন্ন দিক থেকে ক্রিয়াশীল। আমাদের চিন্তাভাবনা, ইচ্ছা-অনিচ্ছাসহ আমাদের সমস্ত কার্যকলাপ ভাগ্য দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। আমাদের অস্তিত্বও ভাগ্যের দান।   এই ভাগ্য— এই পূর্বনির্ধারিত ঘটনা কিন্তু আকস্মিক বা অযৌক্তিক কিছু নয়। কার্য-কারণের পথ ধরেই— জগতের প্রতিটি ঘটনা সংঘটিত হয়ে থাকে। স্বল্প জ্ঞান ও স্বল্প চেতনার কারণে সে সমস্ত আমাদের বোধগম্য হয়না। আর, এসবের পিছনে কোন নিয়ন্তা বা নিয়ন্ত্রক সত্তাও নেই। যা কিছু ঘটছে প্রায় স্বয়ংক্রিয়ভাবেই ঘটে চলেছে।  পূর্বজন্মের কর্মফল না থাকলেও, পূর্বপুরুষদের কর্মফল অনেকাংশেই আমাদের ভোগ করতে হয়। আবার অনেক ক্ষেত্রে, নিজের এবং সমসাময়িক মানুষ এবং বিগত প্রজন্মের অপরাপর মানুষের কর্মফলও কম-বেশি আমরা আমাদের জীবদ্দশাতেই ভোগ করে থাকি। জাগতিক ক্ষেত্রে, সুকর্ম করলেই যে সব সময় এর সুফল অথবা জাগতিক সুখ লাভ হবে, আর কুকর্ম করলেই দুঃখ কষ্ট বা কুফল ভোগ করতে হবে, এইরকম অতি সরল হিসেবে জগত-সংসার চলে না। ভালো-মন্দ— কম-বেশি কিছু না কিছু ফল তো আমরা পেয়েই থাকি। তবে সবসময়ই যে তা' স্পষ্ট বোঝা যাবে, এমন নয়। জাগতিক কর্মের ফলে আধ্যাত্মিক উন্নতি অবশ্যই ঘটে থাকে। —তা' সে সুকর্মই হোক আর কুক‍র্মই হোক। কর্মের মধ্য দিয়ে জ্ঞান-অভিজ্ঞতা লাভ এবং তার পরিণতিতে চেতনা লাভই হলো আধ্যাত্মিক উন্নতি।  তাছাড়া, সুকর্ম বলতে ঠিক কী বোঝায়, বাস্তবিকই তা' সুকর্ম কি না, এবং তার মধ্যে কোনো দোষ-ত্রুটি আছে কি না, কর্ম কারকের শারীরিক— মানসিক অবস্থা, পরিবেশ-পরিস্থিতি, চারিপাশের মানুষ তাকে এবং তার কর্মকে কিভাবে দেখছে, স্থান-কাল-পাত্র, উচিত-অনুচিত প্রভৃতি বিভিন্ন অবস্থা ও ঘটনা সাপেক্ষে এক-একটি ফললাভ হয়ে থাকে। সমস্ত জগতব্যাপি অসংখ্য ঘটনার যোগ-বিয়োগ— গুণ-ভাগ প্রভৃতির জটিল টানাপোড়েনের মধ্য দিয়ে এক-একটি ঘটনার সৃষ্টি হয়। আমাদের সোজাসাপ্টা হিসেবে— একে মিলানো সম্ভব হয় না সব সময়। সুকর্মের মতো কুকর্মের ক্ষেত্রেও অনুরূপ ঘটে থাকে। মানুষের ক্ষেত্রে সুকর্ম— কুকর্মের মোটামুটি বিচার করা গেলেও, মানবেতর নিম্নচেতন-স্তরের জীবদের ক্ষেত্রে সুকর্ম— কুকর্মের বিচার হবে কিভাবে? কীট-চেতন, সরিসৃপ-চেতন বা পশু-চেতন স্তরের জীবদের পক্ষে কি সুকর্ম বা কুকর্ম ক2020-09-1206 minসদগুরু মহর্ষি মহামানসসদগুরু মহর্ষি মহামানসকর্ম ও কর্মফল (প্রথম পর্ব)আমার কর্ম এই মহাজাগতিক কর্মকান্ডেরই একটা অংশ। আমার কর্ম হতে উৎপন্ন হয় যে ফল, অর্থাৎ আমার কর্মফল তা শুধু আমার নয়, তা এই জগতেরই এবং জগৎ জুড়েই তা প্রভাব বিস্তার করে। আর সমস্ত জগতই সেই ফল ভোগ কোরে থাকে।  জগতের কোনো কিছুই বিচ্ছিন্ন নয়। সব কিছুর সাথেই সবার যোগ রয়েছে। জাগতিক কর্মকান্ড এবং তা থেকে উৎপন্ন ফলের অধিকাংশই আমাদের পক্ষে অনুভব যোগ্য নয়। আমরা তার খুব সামান্য অংশই উপলব্ধি করে থাকি। এই মহাজাগতিক কর্মকান্ড থেকে উৎপন্ন অসংখ্য প্রকারের অসংখ্য ফলের মধ্যে আমিও একটি ফল। আমি যা কিছু করছি তা এই জগতব্যাপী ঐচ্ছিক অনৈচ্ছিক অসংখ্য কর্মকান্ডের মিলিত ফলেরই একটা অংশ। আমার দ্বারা কৃত সমস্ত কর্ম আমার ইচ্ছা মতোই সংঘটিত হয়না। এর পিছনে রয়েছে বহু ঐচ্ছিক অনৈচ্ছিক  স্বয়ংক্রিয় ঘটনা, স্থান কাল পাত্র, অবস্থা প্রভৃতি। আর, এ সবই পুর্বনির্ধারিতভাবে যখন যেটা ঘটার ঘটে চলেছে। এটা শুধু আমার ক্ষেত্রেই নয়, আমার তোমার সবার এবং সবকিছুর ক্ষেত্রেই।  সামাজিক দৃষ্টিতে কেউ খারাপ কাজ করলেই যে তাকে খারাপ ফল ভোগ করতে হবে তার কোনো নিশ্চয়তা নেই। আবার কেউ ভালো কাজ করলেই যে সে ভালো ফল পাবে, তারও কোনো নিশ্চয়তা নেই। পেতেও পারে, আবার নাও পেতে পারে। হতে পারে, আবার নাও হতে পারে। কোনো কর্মই শুধু ভালো কর্ম অথবা শুধুই মন্দ কর্ম এমন হয়না। প্রতিটি কর্মই কম বেশি ভালো মন্দ হয়ে থাকে। কোনো কর্ম কারো দৃষ্টিকোণ থেকে বা কারো পক্ষে ভালো, তো অপর কারো পক্ষে মন্দ হতে পারে। আবার, ভালো মন্দের নুন্যাধিক্য গুণ বিচার কোরে কেউ কেউ কোনো কর্মকে ভালো, আর কোনো কর্মকে মন্দ বলে, মনে করতে পারে।     কর্ম হোতে উৎপন্ন কর্মফলের মধ্যেও ভালো ও মন্দ উভয় ফলই বিদ্যমান থাকে। কেউ শুধু ভালোটা দেখতে পায়, মন্দটা তার দৃষ্টিগোচর হয়না। আবার কেউ শুধু মন্দটাই দেখতে পায়, ভালো দিকটা সে উপলব্ধি করতে পারেনা। নিরপেক্ষ দৃষ্টিকোণ থেকে উভয় দিকই সঠিকভাবে দেখতে পায় এমন মানুষের সংখ্যা খুবই কম।  সাধারণত কর্মের জন্য কর্মফলের জন্য একজন অপরজনকে দায়ি কোরে থাকে। আবার, দুরদৃষ্টি সম্পন্ন নিরপেক্ষ ব্যক্তি দেখে, এদের মধ্যে কেউই দায়ি নয়, পূর্ব নির্দিষ্টভাবে যা ঘটার তাই ঘটে চলেছে। কোনো কর্মেই কারো হাত নেই। আর, তাই কোন কর্মের জন্যই কেউ দায়ি নয়।  কর্মফলকে বুঝতে হলে, সর্বাগ্রে আমাদেরকে পূর্বনির্ধারিত ভাগ্যকে বুঝতে হবে। ভাগ্য আসলে কী, তা না বোঝা পর্যন্ত নানা সংশয় দ্বিধা দ্বন্দ্ব, বিশ্বাস অবিশ্বাসের ঢেউয়ের দোলায় ও ধাক্কায় বিপর্যস্ত হতে হবে আমাদেরকে। কোনো ব‍্যক্তি ভাগ্য মানবে কেউ মানবে না, কেউ কর্ম করবে কেউ করবে না, কেউ ভাগ‍্যের দোহাই দিয়ে কর্ম ত‍্যাগ করে বসে থাকবে, আবার কেউ ভাগ্যকে জেনেও কর্মের তাড়নায় কর্মে লিপ্ত হবে। যে যা-ই করুক না কেন, সবাই ভাগ‍্যক্রমে বা ঘটনাক্রমেই করবে। করতে বাধ্য হবে।2020-09-1203 minসদগুরু মহর্ষি মহামানসসদগুরু মহর্ষি মহামানসঈশ্বর দর্শনঈশ্বর দর্শন ​ ঈশ্বর দর্শনের কথা উঠলেই, আমার জানা সেই প্রেমোন্মাদ ছেলেটির কথা মনে পড়ে যায়। ​ সেই ছেলেটি একটি মেয়েকে খুব ভালোবেসেছিল। সে দূর থেকেই ভালোবাসতো। কথা বলার তেমন সুযোগ হয়ে ওঠেনি তার। বেশকিছুদিন এইভাবে চলছিল। শয়নে—স্বপনে— সদা জাগরণে সে তার কথাই ভাবতো। আর কল্পনায় নানা ছবি আঁকতো সেই ছেলেটি। ​ হঠাৎ করে মেয়েটিকে আর কোথাও দেখতে না পেয়ে, ছেলেটি পাগলের মতো চারিদিকে খুঁজতে লাগলো তাকে। কিন্তু কোথাও তার দেখা মিললো না। তার সন্ধানও পাওয়া গেলনা। ভয় ও সঙ্কোচের কারণে, কাউকে মেয়েটির সম্পর্কে জিজ্ঞাসাও করতে পারেনা সে। তখন তার সে কি করুণ অবস্থা। ​ আসলে, মেয়েটি তার এক আত্মীয়ের বাড়িতে এসে কিছুদিন এখানে ছিল। তারপর সে তার নিজের বাড়িতে চলে গেছে। ​ শেষে এমন অবস্থা হলো, ছেলেটি যেদিকে তাকায় সেদিকেই মেয়েটিকে দেখতে পায়। আরে! ঐতো সেই মেয়েটি! ... নাঃ কোথায় গেল!! একটু নিকটে এগিয়ে যেতেই মেয়েটি যেন নিমেষে অদৃশ্য হয়ে গেল!!! ​ বলতে চাইছি, ঈশ্বরের জন্য— ঈশ্বর দর্শনের জন্য এমনই পাগল হলে, তখন ঈশ্বরকে ঐ ছেলেটির মতো অবশ্যই দেখতে পাওয়া যায়। যা দেখা যায়, তা' আসলে তার মেন্টাল প্রোজেকশন ছাড়া আর কিছুই নয়।2020-09-1201 minসদগুরু মহর্ষি মহামানসসদগুরু মহর্ষি মহামানসযুক্তিবাদী কাকে বলা হবে?দু চারটে যুক্তিপূর্ণ কথা বললেই কেউ যুক্তিবাদী হয়ে যায়না। একজন যুক্তিবাদীকে হতে হবে যথেষ্ট সজাগ সচেতন মনের অধিকারী। সেইসঙ্গে জগত সংসার এবং নিজের সম্পর্কে ভালো জ্ঞান থাকা প্রয়োজন। একজন যুক্তিবাদী হবে মুক্তমনের মানুষ। ধর্ম দর্শন শাস্ত্র মতবাদ, উক্তি ধারণা প্রভৃতি সমস্ত কিছুর প্রভাব থেকে যথাসম্ভব মুক্ত থাকবে, অথবা মুক্ত থাকতে সচেষ্ট থাকবে সে। সংস্কার মুক্ত মানুষ। যুক্তিবাদীর মধ্যে কোনরকম দৃঢ় বিশ্বাস বা অন্ধবিশ্বাস থাকবে না। সে যুক্তি-বিচার ও আপাত বিশ্বাসের হাত ধরে, সবকিছুকে আপাত সত্য জ্ঞানে এগিয়ে যাবে পূর্ণ সত‍্যের লক্ষ্যে। যুক্তিবাদী মানুষ আস্তিকও নয় আবার নাস্তিকও নয়। সে বলে, আমি মেনে নেওয়ার জন্য প্রস্তুত আছি। তুমি গ্রহণযোগ্য যুক্তি বা প্রমাণ দিতে পারলেই আমি মেনে নেবো। তবে তার সমস্ত মানা বা জানা হবে, আপাত সত্য রূপে। একটা ধারণা যাকে সে দীর্ঘকাল ধরে সত্য বলে ভেবে এসেছে। হঠাৎ কেউ যদি তাকে যুক্তি দিয়ে বোঝাতে পারে, সেটা একটা ভুল ধারণা ছিল, যুক্তিবাদী মন (আসক্তি ও অভ‍্যাসের দাস না হয়ে) তৎক্ষণাৎ সেই পুরোনো ধারণাকে বাতিল করে দিয়ে, তার জায়গায় নতুন ধারণাকে গ্রহণ ও স্থাপন করবে। যেহেতু সে জানে, তার জ্ঞান অতি সামান্য। তাই কোনো জ্ঞান, কোনো মত, অথবা কোনো ধারণাকেই সে বলেনা, এটাই শেষ কথা। অথবা এটাই পরম সত্য। যুক্তিবাদী হতে হলে, তাকে মন সম্পর্কে অবগত হতে হবে। নিজের মনের উপর সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে। সে পথভ্রষ্ট হচ্ছে কিনা সে সম্পর্কে তাকে সতর্ক থাকতে হবে। যুক্তি বিজ্ঞান সম্পর্কে অবগত হতে হবে। কখোনোই সে অপযুক্তি বা কুযুক্তির কূটকৌশলের আশ্রয় নেবে না। সে যুক্তি দিয়ে জেতার চেষ্টা করবে না। যুক্তির সাহায্য নিয়ে জেতার সম্ভাবনা থাকলেও, সে সত‍্যকেই মেনে নেবে। সর্বোপরি সে হবে সত্যবাদী। সত‍্যকে প্রতিষ্ঠা করতে, সত‍্যে উপনীত হতেই সে যুক্তিপথকে বেছে নিয়েছে। এর চাইতে আরও ভালো কোনো পথের সন্ধান পেলে, সে যুক্তিসঙ্গতভাবে তখন সেই পথই অবলম্বন করবে। সত‍্যই হবে তার মূল লক্ষ্য। তবে এই সংজ্ঞা তথাকথিত যুক্তিবাদীদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। তথাকথিত যুক্তিবাদীগণ অনেক সময়েই যুক্তি মানেন না। এঁঁরা একটা নির্দিষ্ট প্রোগ্রামের বাঁধনে বাঁধা। তার বাইরে এঁঁরা যেতে পারেন না। সবশেষে উপসংহার: এপর্যন্ত আমি যা বললাম, এটাই শেষকথা নয়।2020-09-1202 minসদগুরু মহর্ষি মহামানসসদগুরু মহর্ষি মহামানসবিজ্ঞানকে কী নির্দ্বিধায় বিশ্বাস করা যায়?বহুকাল ধরেই একশ্রেণীর অত্যন্ত লোভী ব‍্যবসায়ীদের চক্রান্তের শিকার হয়েছে আমাদের প্রিয় ও শ্রদ্ধেয় "বিজ্ঞান"! বিশেষত, একশ্রেণীর ওষুধ ব‍্যবসায়ীদের দ্বারা 'বিজ্ঞান' হয়েছে অতীব দূষিত ও কলঙ্কিত। এই ওষুধ ব‍্যবসার একাংশ দিনের পর দিন আমাদেরকে প্রতারিত করে চলছে। তারপরে রয়েছে, যুদ্ধাস্ত্র ব‍্যবসায়ীগণ। বিজ্ঞানকে তারা তাদের অতি হীন সংকীর্ণ স্বার্থের দাসে পরিণত করেছে। মানুষ অসহায়ের মতো প্রতিনিয়ত নিপীড়িত অত‍্যাচারীত হয়ে চলছে এদের দ্বারা। ইনফরমেশন ও ডিজিটাল টেকনোলজির ক্ষেত্রেও বিজ্ঞানের চুড়ান্ত অপব্যবহার হয়ে চলেছে। আপনারা বলবেন, এরজন্য তো বিজ্ঞান দায়ী নয়! সংক্ষেপে 'বিজ্ঞান' হলো একটা নিয়মমাফিক পদ্ধতিগত ব‍্যবস্থা বা সিস্টেমের মধ্য দিয়ে তত্ত্ব ও তথ্য যাচাই করা, বিচার বিশ্লেষণ ও গবেষণা করা, এবং সেই গবেষণা লব্ধ জ্ঞান ও ফলকেও অনেকে বিজ্ঞান বলে থাকে। এখন এই বিজ্ঞান নামক সিস্টেম ও নলেজকে মানুষ যেভাবে ব‍্যবহার করবে সে সেইরকম ফল প্রসব করবে! বিজ্ঞান কোনো বিশ্বাস বা অবিশ্বাসের বিষয়ই নয়। তার উপর বিশ্বাস করার অর্থ হলো, তাকে নিয়ে যে সমস্ত মানুষ কাজ করছে, তাদের উপর বিশ্বাস করা। এখন কথা হচ্ছে, সেই সমস্ত মানুষদের কি নির্দ্বিধায় বিশ্বাস করা যায়!? যায় না। ধর্ম, বিজ্ঞান ও রাজনীতির ক্ষেত্রে থাকা অনেক মানুষই আসলে খুব সাধারণ মানুষ, যে বিচারপতির একটা রায়ে অনেককিছু ওলটপালট হয়ে যেতে পারে, সেও আদপে একজন সাধারণ মানুষ। সেও হতে পারে একজন ধর্মান্ধ, কুসংস্কারে আচ্ছন্ন অন্ধবিশ্বাসী মানুষ। বিজ্ঞানীদের মধ্যে ভালো-মন্দ সব রকম মানুষই আছেন। সেখানে লোভ-মোহ, অন্ধবিশ্বাস, রাজনীতি, ব‍্যবসা, লবি, হিংসা-বিদ্বেষ, সৎ-অসৎ আছে। আছে অনেক ষড়যন্ত্রের শিকার, এবং ষড়যন্ত্রকারী। তাই, বিজ্ঞানীরা যাই করুক বা যাই বলুক না কেন, তা' বিজ্ঞানের নামে বিচার-বিবেচনা না করে, ভালো করে তলিয়ে না বুঝে, অন্ধের মতো বিশ্বাস করাটা হলো অন্ধবিশ্বাস। বিজ্ঞানীরা সর্বদাই ঠিক বা সত্যি বলবেন, এই মিথ্যা ধারণা পোষণ করাও অন্ধবিশ্বাস। ধর্মগ্রন্থ ও ধর্মগুরুদের কথায় অন্ধের মতো বিশ্বাস করার ক্ষেত্রে যেমন বলা হয়ে থাকে, এক্ষেত্রেও তেমনি। অন্ধবিশ্বাস হলো, দৃঢ় অবিচল বিশ্বাস। যাকে কোনো যুক্তি দিয়েই টলাতে পারা যায়না। তাই, বিজ্ঞান মানেই সত্য ও পরীক্ষিত। বিজ্ঞানকে নির্দ্বিধায় বিশ্বাস করা চলে, এই অন্ধ ধারণা থেকে এখনো মুক্ত হোন। মানুষকে সজাগ হতে বলছি। গভীরভাবে বিচার বিবেচনা করে, ভালভাবে যাচাই করে তবেই বিজ্ঞানের ফল গ্রহণ করতে হবে। অন্ধবিশ্বাসের সঙ্গে তাদের সবকিছু মেনে নিলে, নির্বিচারে বিজ্ঞানের সুফল ও কুফল না বুঝে, বিজ্ঞানের দান গ্রহণ করলে, ভয়ানক পস্তাতে হবে অবশেষে। তখন আর আফশোষ করারও সময় থাকবে না। একথা শুধুমাত্র বিজ্ঞানের ক্ষেত্রেই নয়, ধর্ম, রাজনীতি এবং অন‍্যান‍্য ক্ষেত্রেও একই ভাবে প্রযোজ্য। সামনে খুব কঠিন সময় আসছে, তাই সর্বদা সজাগ সতর্ক থাকতে হবে আমাদের। আমি জানি, ধর্মের মতোই বিজ্ঞানের অজ্ঞান অন্ধভক্ত অন্ধবিশ্বাসীদের পক্ষে বিজ্ঞানের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ সহ‍্য করা একটু কঠিন-ই হবে। ​ ​2020-09-1203 minসদগুরু মহর্ষি মহামানসসদগুরু মহর্ষি মহামানসমুক্তমনার স্বরূপমুক্তমনার স্বরূপ  সমস্ত প্রভাব থেকে মুক্ত, সম্পূর্ণ স্বাধীণ- সুস্থ ও জাগ্রত মনই হলো প্রকৃত মুক্ত মন। কিন্তু বাস্তবে তেমনটি পাওয়া প্রায় অসম্ভব, তাই, অনেকাংশে প্রভাব মুক্ত, স্বনিয়ন্ত্রনাধীণ স্বাধীণ ও সুস্থ মনকেই আমরা মুক্ত-মন বলে থাকি। এই মন কোনো কিছুর দ্বারা প্রভাবান্বিত হয়ে পড়লেও, -অচিরেই সে সেই প্রভাব থেকে নিজেকে অনেকাংশে বা সর্বাংশে মুক্ত করতে সক্ষম হয়। যে তার মনের অবস্থা বুঝতে পারে— মনকে দেখতে পারে, তেমন আত্মসচেতন মনই হলো মুক্ত-মন। যে যত জ্ঞানী এবং যার সচেতন মন যত বেশী বিকশিত, সে ততটাই স্বাধীণ। সেই মনই হলো মুক্ত-মন, যে যথেষ্ট জ্ঞান ও চেতনার অধিকারী, এবং ক্রমশ আরো বেশি জ্ঞান ও চেতনার অধিকারী হবার জন্য- নিজের মনোবিকাশের জন্য সদা সচেষ্ট থাকে। জ্ঞান ও চেতনা যত বৃদ্ধি পাবে, ততই আমাদের মন প্রভাব মুক্ত-স্বতন্ত্র-স্বনিয়ন্ত্রনাধীন হয়ে উঠবে। এই প্রভাব শুধু বাইরের নয়, ভিতরেরও। ভিতরের সহজাত প্রবৃত্তি বদ্ধমূল সংস্কার, অজ্ঞানতা প্রসুত মোহ মায়া মিথ্যা অহংকার প্রভৃতি থেকে মুক্তি ঘটলে তবেই সে হতে পারবে মুক্তমনা। খুবই কম জ্ঞান ও চেতনা সম্পন্ন মনকে চলতে হয় বিশ্বাস, অন্ধ-আবেগ এবং তদভিত্তিক কল্পনা, আর কিছু সাধারণ যুক্তির সাহায্য নিয়ে। পরবর্তী উচ্চ চেতনা সম্পন্ন মন তার সর্বোচ্চ বিকাশ না ঘটা পর্যন্ত, সে ক্রমশ প্রভাব মুক্ত হয়ে, প্রায় নিরপেক্ষ যুক্তি বিচার এবং তদ ভিত্তিক কল্পনার পথ ধরে এগিয়ে থাকে। মুক্তমনা মানেই যে সে নাস্তিক হবে— এমন ধারণা ঠিক নয়। আবার, কোনো নাস্তিক যদি নিজেকে মুক্তমনা ভাবে, সেটাও ঠিক নয়। কারো বিশ্বাসের সাথে কেউ সহমত না হলেই সে নাস্তিক হয়ে যায়না। নাস্তিক কখনোই মুক্তমনা হতে পারেনা। কারণ, নাস্তিক মানেই সে অন্য কোনো দর্শন বা তত্ত্বে দৃঢ় বিশ্বাসকারী। ‘বিশ্বাস’ কথাটি মুক্তমনার খাতায় নেই। সে এগিয়ে চলে আপাত সত্যের হাত ধরে, পূর্ণ সত্যের লক্ষ্যে। যুক্তি বিচার-প্রমানাদির মধ্য দিয়ে, তার ঈশ্বর অস্তিত্বের উপলব্ধি ঘটতেই পারে। যদি সে সত্যানুসন্ধিৎসু হয়ে আত্মজ্ঞান লাভে এবং জীবন রহস্য উন্মোচনে (কে কি কেন কোত্থেকে-কোথায় জানতে) ব্রতী হয়। যদি সে সত্যনিষ্ঠ হয়ে শিকরের সন্ধান করে। তবে, স্বভাবতই তার ঈশ্বর আর সাধারণ বিশ্বাস প্রবণ মানুষের প্রচলিত ধারণার ঈশ্বর কখোনই একরূপ হবেনা। প্রকৃত মুক্তমনা হলো অনেকটাই উন্নত মনের মানুষ, বিকশিত মনের মানুষ। যথেষ্ট জ্ঞান ও চেতনা বিকাশের ফলে সে মোহ মায়া বিশ্বাস কুসংস্কারের বন্ধন থেকে অনেকটাই মুক্ত। একজন মুক্তমনা কখনোই আত্মবিকাশ মনোবিকাশের পথ থেকে সরে আসতে পারেনা, মানবধর্মকে অস্বীকার করতে পারেনা। মুক্তমনা মানে সমাজ-সংসারের বাধাbবন্ধন, মানবতার দায় দায়িত্ব থেকে মুক্ত বাতুল বা বায়ু প্রকৃতির মানুষ নয়। কান্ডজ্ঞানহীন বায়ু রোগগ্রস্ত যথেচ্ছাচারী মানুষ আসলে অসুস্থ মানুষ। আমি মুক্ত আমি মুক্ত বলে, চিৎকার করলেই, মুক্ত হওয়া যায়না। চেতনার পূর্ণ বিকাশ না ঘটা পর্যন্ত, কারো পক্ষেই সম্পূর্ণতঃ জাগতিক বন্ধন থেকে মুক্ত হওয়া পুরোপুরি স্বাধীন হওয়া সম্ভব নয়। একটি অতিশিশু অথবা অতি শিশু চেতন স্তরের মানুষকে, অথবা অস্ফূট মনের মানুষকে আমরা মুক্তমনা বলতে পারি না। কোনো অসুস্থ মনের মানুষকেও মুক্তমনা বলা যাবেনা। প্রকৃত মুক্তমনা মানুষ সচরাচর দেখা না যাওয়ার ফলে, অনেকে ভুল ধারণার বশবর্তী হয়ে, এদেরকেই মুক্তমনা ব’লে, মনে ক’রে থাকে। প্রকৃত মুক্তমনা হতে হলে, অনেক উন্নত মনের অনেকটাই বিকশিত মনের মানুষ হতে হবে। মনোবিকাশের পথই জীবনের পথ, পূর্ণ মনোবিকাশই আমাদের জীবনের মূল লক্ষ্য।2020-09-1203 minসদগুরু মহর্ষি মহামানসসদগুরু মহর্ষি মহামানসবিশ্বাস ও জ্ঞানবিশ্বাস ও জ্ঞান প্রকৃত জ্ঞানের অভাব থেকেই বিশ্বাসের জন্ম। প্রকৃত বা অপর্যাপ্ত জ্ঞানের অভাব সত্ত্বেও, কোন বিষয়-বস্তু বা ব্যক্তি সম্বন্ধীয় ধারণাকে , অথবা স্পষ্ট উপলব্ধ নয়--- এমন কোনো ধারণাকে সত্য বলে মনে করা বা মেনে নেওয়া অথবা লব্ধ জ্ঞান বলে মনে করাই হলো— বিশ্বাস। আর, এই সহজ স্বভাবজ বিশ্বাসকে দৃঢ়মূল এবং আমাদের মজ্জাগত করে তুলেছে, প্রচলিত ধর্ম। দুর্বল বা শিথিল বা সন্দেহযুক্ত বিশ্বাসকে প্রকৃত বিশ্বাস বলা যায় না। সেক্ষেত্রে বিশ্বাস দৃঢ়--- একমুখী হয় না। বিশ্বাসের মধ্যে দ্বিধা- দ্বন্দ্ব- সন্দেহ যুক্ত থাকে। অথবা বিশ্বাসের সাথে জ্ঞান মিশ্রিত থাকে সেখানে। তবে, কোনো কিছু অনুমান করা অথবা কাজের সুবিধার জন্য কোন কিছু ধরে নেওয়া, অথবা কল্পনা করে নেওয়াটা--- বিশ্বাস নয়।  অবিশ্বাসও বিশ্বাস। তা' অপর কোন কিছুতে বিশ্বাস। অপর কোনো কিছু বিশ্বাসের সাপেক্ষে--- 'এটা নয়' অথবা 'এটা হতে পারে না' ---এরূপ বিশ্বাস।2020-09-1110 minসদগুরু মহর্ষি মহামানসসদগুরু মহর্ষি মহামানসদৃঢ় বিশ্বাসই হলো অন্ধ বিশ্বাস। অন্ধবিশ্বাস সাংঘাতিক সংক্রামক জীবাণুর চাইতেও ভয়ংকর!দৃঢ় অবিচল বিশ্বাসই হলো অন্ধ-বিশ্বাস। যা স্বল্পজ্ঞান বা অজ্ঞান-অন্ধত্বের পরিচায়ক। এই বিশ্বাসই হলো যত নষ্টের মূল। সারা পৃথিবী জুড়ে, মানব জগতে যত সমস্যা, যত অঘটন, যত সঙ্কট, তার অধিক অংশের মূলেই আছে--- বিশ্বাস বা অন্ধ-বিশ্বাস। অন্ধ-বিশ্বাসের অন্ধকার দুনিয়াটাকে যদি বদলাতে চাও, যদি জীবনকে জ্ঞানের আলোকে আলোকিত করে তুলতে চাও, তাহলে এখন থেকে 'বিশ্বাস' কথাটাকে বিদায় দিয়ে বলো, ধারণা বা অনুমান অথবা আপাত আস্থা, আপাত সত্য, আর না হয় বলো, আপাত বিশ্বাস। অস্পষ্টভাবে অনেক জানার চাইতে, স্পষ্টভাবে একটু জানা অনেক ভালো।  ঈশ্বর এবং আধ‍্যাত্মিক বিষয়েও, বিশ্বাস ছাড়াই--- যুক্তি পথেই বেশি জানা সম্ভব। শুধু এতদিনের অভ‍্যাসটাকে পাল্টে, যুক্তিপথে সত‍্যানুসন্ধিৎসু মুক্তমন নিয়ে এগতে হবে আমাদের। নিজ সম্পর্কে--- নিজ অস্তিত্ব, নিজের অবস্থান সম্পর্কে, নিজের ক্ষমতা ও প্রবনতা, নিজের লক্ষ্য--- কর্তব্য, অন‍্যান‍্য ব‍্যক্তি এবং তাদের সঙ্গে নিজের সম্মন্ধ, নিজের অধিকার, নিজের অর্থ-সম্পদ, নিজের ক্ষুদ্র জগত থেকে বৃহত্তর জগত সম্পর্কে ভ্রান্ত ধারণা, ঈশ্বর সহ অদেখা বহু অস্তিত্ব সম্পর্কে ভ্রান্ত ধারণা এবং তার ভিত্তিতে সৃষ্ট--- ভ্রান্ত চাহিদা ও স্বার্থবোধের বশবর্তী হয়ে, আমরা মোহগ্রস্তের ন‍্যায় এক মায়াত্মক জগতের মধ্যে বাস করছি। অনিত‍্যকে নিত্য ভেবে, ক্ষুদ্রকে সম্পূর্ণ ভেবে, যা নিজের নয় তাকে নিজের ভেবে, যে যা নয়--- তাকে তা-ই ভেবে, ভ্রমাত্মক 'আমি' -কে নিয়ে সর্বক্ষণ মত্ত হয়ে আছি আমরা। যতক্ষণ না এই ভ্রমাত্মক দৃষ্টিকোণ থেকে বেরিয়ে এসে, নিজেকে এবং এই জগতকে নিজেদের স্বরূপে আবিষ্কার করতে পারছি, ততক্ষণ এই নরক-যন্ত্রণারূপ ভ্রমাত্মক-যন্ত্রণাময় জীবন থেকে আমাদের মুক্তি নেই। ভ্রান্ত ধারণা--- ভ্রান্ত বিশ্বাস-ই আমাদের অধিকাংশ সুখ-অসুখ, দুঃখ-কষ্ট-অশান্তির কারণ।2020-09-1103 minসদগুরু মহর্ষি মহামানসসদগুরু মহর্ষি মহামানসবিশ্বাস কি ও কেনবিশ্বাস কী ও কেন যথেষ্ট যুক্তি-প্রমান ছাড়াই, সজাগ-সচেতন-মনের সাহায্যে সম্যকভাবে জানা ছাড়াই— অজ্ঞান-অন্ধত্ব— মোহমায়া বশতঃ কোনোকিছুকে সত্য বলে মেনে নেওয়া, ভ্রমাত্মক বা মায়াত্মক কোনো দর্শন — শ্রবনকে সত্য বলে মনে করা, অথবা কাল্পনিক কোনোকিছু সম্পর্কে স্থির নিশ্চয়াত্মক ধারণাই হলো ‘বিশ্বাস’। অন্যভাবে বলা যায়, ‘বিশ্বাস’ হলো— কোনোকিছু সম্পর্কে অজ্ঞান-অন্ধের মতো ধারণা লাভ করার জন্য অবচেতন মনের এক বিশেষ মানস-ক্রিয়া। অবচেতন মন (আমাদের অধ্যাত্ম মনোবিজ্ঞানে— শিশুমন)-এর মানসক্রিয়া থেকে উদ্ভূত এক বিশেষ শক্তি বা ক্ষমতাকে বলাহয় বিশ্বাসের শক্তি। ‘বিশ্বাস’ সুপথে চালিত হলে অথবা বিশ্বাসকে ভালো উদ্দেশ্যে— ভালো পথে চালিত করতে পারলে, অনেক ক্ষেত্রেই ভালো ফল পাওয়া যেতে পারে। আবার অজ্ঞান-অন্ধত্বের কারণে অথবা কারও হীন স্বার্থসিদ্ধির উদ্দেশ্যে তা’ বিপথে চালিত হলে— তখন তা’ অত্যন্ত কুফলদায়ক হয়ে থাকে। বিশ্বাসের বিপরীত দিক— ‘অবিশ্বাস’ নয়। অবিশ্বাস-ও একপ্রকার বিশ্বাস। অন্যকিছুতে বিশ্বাস। বিশ্বাসের অপরদিকে থাকে জ্ঞান। কোনোকিছু সম্পর্কে সচেতন-মন (আমাদের অধ্যাত্ম মনোবিজ্ঞানে— কিশোরমন)-এর ধারণা লাভের মানসক্রিয়া এবং সেই ক্রিয়া হতে লব্ধ তথ্য ও তত্ত্ব জ্ঞান। জানি বা জানিনা। ‘জানিনা’ –এও একপ্রকার জ্ঞান। নিজের সম্পর্কে সঠিক ধারণা বা উপলব্ধি থাকলে, এবং সজাগ-সচেতন সত্যাশ্রয়ী হলে, তবেই বলা যায়— ‘জানিনা’। এই ‘জানিনা’-র কাছেই জানার দুয়ার খোলা থাকে। ‘বিশ্বাস’ হলো আমাদের জ্ঞান ও চেতনা লাভের পথে সবচাইতে বড় বাধা। মিথ্যা অহমিকা মুক্ত সজাগ-সচেতন মনে— ‘জানিনা’ শব্দটি থেকে জানার আগ্রহ বৃদ্ধি পায়। ‘জানিনা এবং জানতে চাই’ —এই ভাবনাটি আমাদের জানার পথকে প্রশস্ত করে তোলে। আর ‘বিশ্বাস’ সেই জানার পথকে রুদ্ধ করে রাখে। বিশ্বাসের পিছনে থাকে সজাগ সচেতন-মনের অনুপস্থিতি, থাকে অজ্ঞান-অন্ধত্ব —জ্ঞান ও চেতনার স্বল্পতা। থাকে অহমিকা— মিথ্যা অহংবোধ। সেও এক বিশ্বাস। ‘বিশ্বাস’ কথাটির মধ্যেই অজ্ঞান-অন্ধত্ব প্রচ্ছন্ন থাকে। থাকে বিকশিত সচেতনমনের অনুপস্থিতি। তবুও যখন ‘অন্ধবিশ্বাস’ কথাটি বলা হয়, তখন বুঝতে হবে, সেখানে রয়েছে প্রগাঢ় অজ্ঞানতার অন্ধকার। খুব দৃঢ় এবং গভীর বিশ্বাস। যেখান থেকে একজন বিশ্বাসকারী কোনোভাবেই বেড়িয়ে আসতে পারেনা।2020-09-1108 minসদগুরু মহর্ষি মহামানসসদগুরু মহর্ষি মহামানসযুদ্ধ ও শান্তিপ্রসঙ্গ: যুদ্ধ ও শান্তি    অধিকাংশ সাধারণ মানুষই যুদ্ধ ও ধ্বংস চায় না। তারা শান্তিতে জীবন যাপন করতে চায়। কিন্তু শান্তি পেতে গেলে--- শান্তিতে জীবন যাপন করতে গেলে, যা করণীয় ---তা' কিন্তু তারা করে না। বরং যারা যুদ্ধ চায়--- অশান্তি চায়, বিভিন্নভাবে তাদেরকেই প্রশ্রয় দিয়ে থাকে এবং সহযোগিতা করে থাকে তারা মূর্খের মতো। এরফলে শান্তি তাদের কাছে অধরাই থেকে যায় চিরকাল। বাস্তব ঘটনা ও পরিস্থিতি সম্পর্কে উদাসীনতা, রাজনীতি --- কূটনীতি এবং মানুষের মন সম্পর্কে ভালো ধারণা না থাকায়, তলিয়ে বোঝার চেষ্টা বা ক্ষমতা না থাকায়, সব দেশের অধিকাংশ জনগণই চিরকাল বেদম মার খেয়ে আসছে। এত সত্ত্বেও তাদের চেতনা হয়না। যুদ্ধের ও অশান্তির কারণ কী, কারা যুদ্ধ ও অশান্তি চায়, কেন চায়--- এগুলো বোঝার সময় এসেছে এখন। নিজেদের স্বার্থেই এগুলো বুঝতে হবে। আপাতত বোঝার পরেও, তা' যদি মোহ- মায়া -অজ্ঞানতার বশবর্তী হয়ে, আবার ভুলে যাও, উদাসীন হয়ে যাও, যথাযথ ব্যবস্থা না নাও, ---তাহলে সেই সাংঘাতিক অপরাধের অবধারিত শাস্তি তোমাদের উপর নেমে আসবে। বারবার।2020-09-1102 minসদগুরু মহর্ষি মহামানসসদগুরু মহর্ষি মহামানসশান্তি প্রসঙ্গে মহর্ষি মহামানস'শান্তি— শান্তি’ বলে, মাতামাতি করলেই শান্তি আসবেনা। অশান্তির কারণটাকে বুঝতে হবে ভালোভাবে, এবং সবাইকে তা’ বোঝাতে হবে। তারপর, তার প্রতিকার করতে পারলে, তবেই শান্তি আসবে। যথেষ্ট জ্ঞানের অভাব, আর শারীরিক ও মানসিক অসুস্থতাই অধিকাংশ অশান্তির মূল কারণ। শান্তির জন্য— ভিতরের ও বাইরের সুস্থতাসহ অন্তর্জগত ও বহির্জগত সম্পর্কে সাধারণ জ্ঞান থাকা আবশ্যক। যার নিজের সম্পর্কে এবং বহীর্জগত সম্পর্কে ভালো ধারণা নেই, সে অজ্ঞানতার কারণে— মায়ার বশবর্তী হয়ে, অশান্তিকেই ডেকে আনবে। যাতে অশান্তি সৃষ্টি হয়— সেইরূপ কাজই সে করবে। বিশেষ চাহিদা বিহীন অর্থাৎ স্বল্প চাহিদা সম্পন্ন নির্জীব অথবা দাস মনোভাবাপন্ন অল্পকিছু অন্ধ-ভক্ত মানুষ— ঈশ্বরের কাছে সম্পূর্ণভাবে আত্মসমর্পন ক’রে ব্যক্তিগতভাবে মানসিক শান্তিলাভে সক্ষম হতে পারে। কিন্তু তার ফলে বা তার প্রভাবে মানব সমাজে শান্তি আসবেনা। এখানে উল্লেখনীয়, সাধারণতঃ এরা নিজেকে ও ঈশ্বরকে নিজেদের স্বরূপে না জেনেই, এইরূপ ক’রে থাকে। যথেষ্ট জ্ঞান-অভিজ্ঞতা-চেতনা লাভের পর, নিজেকে ও ঈশ্বরকে সম্যকভাবে জানার পর কেউ সম্পূর্ণভাবে আত্মসমর্পন করলে, তা’ হবে ভিন্ন প্রকৃতির। অধিকাংশ অশান্তির পিছনে আছে— নানা প্রকারের অনিয়ন্ত্রিত— অবুঝ কামনা-বাসনা —চাহিদা, এবং উগ্র ও বিকৃত চাহিদা। এই সমস্ত চাহিদার পিছনে থাকে— অজ্ঞান বা স্বল্পজ্ঞান সম্পন্ন অসুস্থ মন, এবং অসুস্থ শরীর। থাকে যথেষ্ট চেতনার অভাব। অনেক অশান্তিকর পরিবেশ-পরিস্থিতির পিছনেও দায়ী মানুষের অজ্ঞান-অসুস্থ মন। তাই সার্বিক মনোবিকাশ না ঘটা পর্যন্ত— এ’সব চলবে— চলতেই থাকবে। এর সমাধান আছে একমাত্র মানবধর্ম— মহাধর্ম-এ। বিশ্ব-শান্তি প্রতিষ্টায় মহাধর্ম-ই একমাত্র পথ। মহাধর্ম হলো— প্রকৃত মানব-বিকাশের জন্য মূলগত শিক্ষা বা বেসিক সেলফ-ডেভালপমেন্ট এডুকেশন।   ঈশ্বর তথা জাগতিক ব্যবস্থা আমাদের মধ্যে নানাবিধ ক্ষুধা বা চাহিদারূপ অশান্তির বীজ বপন ক’রে দিয়েছে, যাতে আমরা এই সমস্ত ক্ষুধা বা চাহিদার তাড়নায় ব্যতিব্যস্ত হয়ে— কর্ম ও ভোগের মধ্য দিয়ে— জ্ঞান-অভিজ্ঞতা লাভ করতে পারি। ক্রমশ লাভ করতে পারি সেই অমূল্য সম্পদ— চেতনা। যথেষ্ট জ্ঞান-অভিজ্ঞতা-চেতনা লাভ না হওয়াবধি, অবুঝের মতো শান্তি চাইতে গিয়ে— অশান্তিই বাড়ে। তাই, শান্তি লাভ করতে চাইলে, আত্ম-বিকাশ-এর পথ অবলম্বন করাই একমাত্র কর্তব্য। যার জন্য এই অশান্তি— যার অভাবে এত অশান্তি, সেই জ্ঞান ও চেতনা লাভ না হওয়া পর্যন্ত— ঈশ্বরের কাছে শত মাথা কুটলেও শান্তি পাওয়া যাবে না। তাই, নিজের চাহিদামতো ছোটার সাথে সাথে— ঈশ্বরের চাহিদাটাকেও বোঝার চেষ্টা করো।2020-09-1110 minসদগুরু মহর্ষি মহামানসসদগুরু মহর্ষি মহামানসআত্মা—মন ও পুণর্জন্মসমগ্র মনই হলো— আত্মা। আত্মা বোলে আলাদা কোনো কিছুর অস্তিত্ব নেই। অহম বোধ সম্পন্ন এবং মনন ক্ষমতা সম্পন্ন চেতন সত্তাটি আসলে মনই। সে পার্থিব দেহ সম্পন্ন মনই হোক আর অপার্থিব দেহ সম্পন্ন মনই হোক, জীব-মনই হোক আর ঈশ্বর-মনই হোক, আসলে সে— মন। আমাদের বর্তমান মনোজগতে কতকটা স্বামী-স্ত্রীর মতই— সক্রিয় মনদুটির একটি হলো— ‘প্রাক মানব-চেতন-মন’ বা অবচেতন মন, আর অপরটি হলো— ‘মানব-চেতন-মন’ বা সচেতন মন। এরা হলো সমগ্র মনের (ক্রমবিকাশমান মনোপদ্মের ) অংশমাত্র। সমগ্র মন হলো— ক্রমবিকাশমান পদ্মের মতো। অস্ফুট চেতন-স্তর থেকে একটু একটু ক’রে ক্রমশ বিকশিত হতে হতে এক সময় পূর্ণচেতন স্তরে পৌঁছে— পূর্ণ বিকাশলাভ করবে সে। ​ এক একটি চেতন-স্তরের এক একটি নাম, এক এক রূপ, এবং এক এক প্রকারের কার্যকলাপ। সংক্ষেপে চেতনস্তরগুলি হলো- কীট-চেতন স্তর, সরীসৃপ-চেতন স্তর, পশু-চেতন স্তর, আদিম-মানব চেতন স্তর, মানব-চেতন স্তর, মহামানব চেতন স্তর, দেব-চেতন স্তর, মহাদেব-চেতন স্তর, এবং ঈশ্বর-চেতন স্তর। সমস্ত চেতন স্তরগুলি পৃথিবীতে লভ্য নয়। মানব-চেতন স্তরের পরবর্তী স্তরগুলি অপরাপর বিভিন্ন লোকে ক্রমশ বিকশিত হয়ে থাকে। তবে, মানব-চেতন ও মহামানব-চেতন স্তরের মধ্যবর্তী সন্ধি স্তরের ২।৪ জন মানুষকে কখনো কখনো পৃথিবীতে দেখতে পাওয়া যায়। বর্তমানে স্বল্প বিকশিত এই মানব-চেতন-মন বা সচেতন মনের যথেষ্ট বিকাশ ঘটলে তবেই পরবর্তী উচ্চ-চেতন (স্তরের) মনের মালিক হতে পারবো আমরা। তারপরেও আরো অনেক পথ পেরতে হবে এই বিকাশপথ ধরে...।2020-09-1104 minসদগুরু মহর্ষি মহামানসসদগুরু মহর্ষি মহামানসচেতনা আসলে কী (মহর্ষি মহামানস-এর  অধ‍্যাত্ম মনোবিজ্ঞাব হতে গৃহীত )'চেতনা' সম্পর্কে অনেকের অনেক রকম ধারণা থাকতে পারে। আমি 'চেতনা' বলতে বুঝি, মনের শক্তি--- মানসিক ক্ষমতা। মনন শক্তি, বোঝার ক্ষমতা, অনুভব করার ---উপলব্ধি করার, জ্ঞান অর্জনের ক্ষমতা। সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও উদ্ভাবন ক্ষমতা বা শক্তি প্রভৃতি। এই ক্ষমতা--- এই শক্তির বিকাশ ঘটলে, এই ক্ষমতাও বৃদ্ধি পাবে। ​ আরেকটু বিস্তারিতভাবে বলা যায়, চেতনা হলো— শরীর ও মনের অনুভব—সংবেদন—বোধ করার ক্ষমতা, জ্ঞান-অভিজ্ঞতা লাভের ক্ষমতা, কোনো কিছু সম্পর্কে সতর্ক হওয়ার, বিচার-বিবেচনা করা ও সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা, শরীর ও মনের ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়ার ক্ষমতা, কল্পনা—উদ্ভাবন—সৃষ্টি করার ক্ষমতা প্রভৃতি বিভিন্ন মানসিক ক্রিয়ার শক্তি ও ক্ষমতা স্বরূপ। ​ চেতনার ক্রমবিকাশের সাথে সাথে, ব‍্যক্তি ক্রমশ নিজেকে বুঝতে, মানুষকে বুঝতে, জাগতিক ব‍্যবস্থাকে বুঝতে ও জানতে সক্ষম হয়ে  ওঠে। সে তখন ক্রমশই (প্রকৃত অর্থে) মুক্ত-মনের মানুষ হয়ে উঠতে থাকে। সমস্ত বিশ্বটাই তার আপন হয়ে ওঠে। অন্ধবিশ্বাস, সংস্কার, প্রচলিত ধর্ম, সম্প্রদায়, রাজনীতিসহ সমস্ত মোহ-মায়ার বন্ধন থেকে সে ক্রমশই মুক্ত হয়ে ওঠে। তার আচরণে, তার মনোভাবেও এই পরিবর্তনের প্রকাশ ঘটতে থাকে ক্রমশ।2020-09-1102 minসদগুরু মহর্ষি মহামানসসদগুরু মহর্ষি মহামানসনিজের মনকে জানোনিজের মনকে জানো (মহর্ষি মহামানস-এর  অধ‍্যাত্ম মনোবিজ্ঞাব হতে, 'মন' সম্পর্কে আরেকটি প্রবন্ধ )  মন সম্পর্কে প্রচলিত ধারনায়, মনের দুটি বিভাগ বা অংশের মধ্যে একটি হলো--- হৃদয়, আর অপরটি হলো--- মস্তিষ্ক। মস্তিষ্ক বড় না হৃদয় বড়, এই নিয়ে অনেকের অনেক কথা শোনা যায়। কেউ কেউ বলেন, হৃদয়বান মানুষ মস্তিষ্কজাত বুদ্ধিমান মানুষ থেকে শ্রেয়। এখন, আমরাও আমাদের (সক্রিয় ও নিস্ক্রিয় মিলে) সমগ্র মনের মধ্যে— বর্তমানে সক্রিয় ভূমিকায় থাকা দুটি অংশ-মন সম্পর্কে জানি। তার একটি হলো---অবচেতন বা প্রাক-মানবচেতন মন, আর অপরটি হলো--- সচেতন বা মানবচেতন মন। প্রথমটি হলো কল্পনা ও আবেগ প্রবণ--- যুক্তি-বুদ্ধি বিহীন অন্ধবিশ্বাসী, কাম-ক্রোধ-লোভ-লালসায় আসক্ত অবুঝ মন। প্রয়োজন বোধে এই মন তার চাহিদা পূরণের জন্য অপরাধ করতেও পিছু-পা নয়। এই মনের মধ্যে আবার রয়েছে, তার স্বজাতি---স্বধর্মী---স্বজনদের প্রতি সহজাত টান ও ভালোবাসা। এককথায়, মোহমায়ায় আচ্ছন্ন অজ্ঞান-অন্ধ এক দুর্বার-দুরন্ত শিশু-মানব-মন।  এই মনটি এখন অধিক অংশেই বিকশিত ও সক্রিয়। সচেতন মনের সঙ্গে একত্রে বাস করার ফলে, সচেতন মনের বিকাশের সাথে সাথে এই মনটিও এখন পূর্বের তুলনায় অনেকটাই পরিশীলিত। সচেতন মনের কিছু কিছু গুণ— এর মধ্যে সংক্রামিত হওয়ায় সে এখন অনেকটাই আধুনিকা। সুস্থ-স্বাভাবিক অবস্থায় এই মনটির সুমধুর রূপ আমরা প্রত‍্যক্ষ করেছি অনেকবার। কিন্তু অধিকাংশ মানুষই বর্তমানে অসুস্থ হওয়ায়, এই মনও অসুস্থ--- বিকারগ্রস্ত। দ্বিতীয় সক্রিয় মনটি হলো--- যুক্তি-বিচার-বুদ্ধি সম্পন্ন সজাগ-সচেতন মন। কিন্তু এই মনটি অধিকাংশ মানুষের মধ্যেই খুব সামান্য মাত্রায় বিকশিত ও সক্রিয়। তাই, এখনো এর কার্যকলাপ খুবই অল্প ও সীমিত।2020-09-1109 minসদগুরু মহর্ষি মহামানসসদগুরু মহর্ষি মহামানসমন-আমি ● মহর্ষি মহামানস-এর অধ্যাত্ম-মনোবিজ্ঞান হতে গৃহীতমানবধর্ম— ‘মহাধর্ম’ এবং মহাধর্মের অনুশীলনীয় পর্ব ‘মহামনন’ —আত্ম-বিকাশ বা মনোবিকাশ কার্যক্রমকে ভালোভাবে বুঝতে হলে, আমাদের ‘মন’ সম্পর্কে মোটামুটি ধারণা থাকা আবশ্যক। ‘মন’ হলো— অনেকাংশে কম্পিউটার সফটওয়ারের মতো প্রায় বর্ণনাতীত –সাধারণের পক্ষে প্রায় বোধাতীত এক অতি সুক্ষ্ম অস্তিত্ব। মন-সফটওয়ার ও শরীর (হার্ডওয়ার), —এদের মাঝে একটি প্রাথমিক জৈব সফটওয়ার বা ভিত্তিমন সফটওয়ার আছে। এই প্রাথমিক জৈব সফটওয়ার-এর মাধ্যমেই শরীর যন্ত্রের যাবতীয় অনৈচ্ছিক ক্রিয়াকলাপাদি তথা সহজ-প্রবৃত্তিজাত কার্যাদি সংঘটিত হয়ে থাকে। শরীরকে ভিত্তি করেই এই জৈব সফটওয়ার তৈরী হয়েছে। আর, শরীরসহ এই প্রাথমিক জৈব সফটওয়ারের ভিত্তিতেই তৈরী হয়েছে— মন-সফটওয়ার। প্রাথমিক জৈব সফটওয়ার বা ভিত্তিমন সফটওয়ার এবং মন-সফটওয়ার, — উভয়েরই স্বতন্ত্র অবয়ব আছে। এই অবয়ব আমাদের বর্তমান চেতন-স্তরে ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য নয়। উচ্চতর চেতন-স্তরের মন এই অবয়ব উপলব্ধি করতে সক্ষম। অন্যান্য সমস্ত অস্তিত্বশীলদের মতই উভয় সফটওয়ারেরই আছে অশরীরী দিব্য অস্তিত্ব (দ্রষ্টব্যঃ এস-এক্সিসটেন্স)। একেই অনেকে আত্মা বলে থাকেন। কিন্তু, সমগ্র মন-অস্তিত্বই হলো— আত্মা। সে দেহযুক্তই হোক আর দেহাতীতই হোক (দ্রষ্টব্যঃ আত্মা)। প্রাথমিক জৈব সফটওয়ার এবং মন-সফটওয়ার— উভয়েরই নিজস্ব ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া থাকলেও, কেউই পুরোপুরি স্বাধীন নয়। একে অপরের উপর, এবং শরীরসহ বহীর্জাগতিক বিষয়-বস্তুর উপর উভয় জৈব সফটওয়ারই কম-বেশি নির্ভরশীল। আবার, শরীরসহ বহীর্জাগতিক বিষয়-বস্তুর উপরেও এরা প্রভাব বিস্তার করতে সক্ষম। মানসিক কার্যকলাপ এবং শারীরীক কার্যকলাপ (যা প্রাথমিক জৈব সফটওয়ার দ্বারা পরিচালিত অনৈচ্ছিক ক্রিয়াকলাপ) একে অপরের উপর প্রভাব বিস্তার ক’রে পরস্পর সহযোগী হয়ে কাজ ক’রে থাকে। এর পিছনে রয়েছে— জগতব্যাপী পরম্পরাগত অজস্র কার্য-কারণ স্বরূপ অসংখ্য ঘটনার সম্মিলিত ঘটনাপ্রবাহ। শরীর ও মনের ঐচ্ছিক ও অনৈচ্ছিক ক্রিয়া-কান্ডগুলি হলো— জগতব্যাপী পরম্পরাগত অজস্র ঘটনার ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া হতে প্রসুত ফল, এবং সেই সম্মিলিত ঘটনা প্রবাহেরই অংশ, যা আরো অনেক ঘটনার জন্মদাতা (দ্রষ্টব্যঃ ভাগ্য)। ক্রমবিকাশমান পদ্মের মতই, সমগ্র মন— একের পর এক ক্রমোচ্চ স্তরে ক্রমশ বিকশিত হয়ে থাকে। বিকাশের প্রতিটি চেতন-স্তরে মনের এক এক প্রকার রূপ—গঠণ—কার্যকলাপ। অস্ফূট-চেতন-স্তর থেকে পূর্ণ-চেতন-স্তর অভিমুখে জ্ঞান-অভিজ্ঞতা লাভের মধ্য দিয়ে তুচ্ছ লক্ষ্য থেকে উচ্চ লক্ষ্যপানে এগিয়ে চলা (এ’নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা আছে ‘মহাবাদ’ গ্রন্থে)।2020-09-1110 minসদগুরু মহর্ষি মহামানসসদগুরু মহর্ষি মহামানসআধ্যাত্মিকতা আসলে কী'অধ্যাত্ম' কথাটির অর্থ হলো--- আত্ম বা মন বিষয়ক। 'আত্মা আর 'মন' সমার্থক। সে মানব শরীর সম্পন্ন-ই হোক অথবা অশরীরী মন-ই হোক, মানবমন অথবা আরও উচ্চচেতন মন, অথবা ঈশ্বর মন, যা-ই হোক না কেন, একটি সচেতনতা সত্তা, যে অনুভব করতে সক্ষম চিন্তা করতে সক্ষম, সে-ই হলো মন। অনেকেই প্রচলিত ধর্মাচারণকেই 'আধ‍্যাত্মিকতা' বলে, মনে করে থাকেন। কিন্তু তা' প্রকৃত আধ‍্যাত্মিকতা নয়। অন্ধবিশ্বাস--- অন্ধ-অনুসরণ থেকে মুক্ত হয়ে, সজাগ-সচেতনভাবে খোলা মনে যুক্তিপথ ধরে আত্ম-জ্ঞান-- আত্ম-উপলব্ধি-- আত্মবিকাশ লাভের জন্য অগ্রসর হওয়াই প্রকৃত আধ‍্যাত্মিকতা। আমরা মূলত আধ্যাত্বিক অস্তিত্ব। বিশ্বাত্মা বা ঈশ্বর মন থেকে সৃষ্টি হওয়া, বিশ্বাত্মার মানস সন্তান স্বরূপ--- ভার্চুয়াল অস্তিত্ব (সৃষ্টিতত্ত্ব দ্রষ্টব্য)। মন থেকেই উৎপত্তি এবং প্রধানত মন সম্পন্ন অস্তিত্ব। আমাদের সমস্ত (মানসিক) কার্যকলাপই আধ্যাত্মিকতা। আমাদের সমস্ত কাজকর্মের পিছনেও রয়েছে আধ্যাত্মিকতা।প্রকৃতপক্ষে, আমাদের মানসিকতা আর আধ্যাত্মিকতা প্রায় সমার্থক। কিন্তু ব্যবহারিক দিক থেকে, মানসিকতা বা মানসিক সক্রিয়তা থেকে আধ্যাত্মিকতা কথাটি অনেক বেশি অর্থবহ। আধ‍্যাত্মিকতা--- প্রধানত আত্মজিজ্ঞাসা, আত্ম-অন্বেষণ, আত্ম-উপলব্ধি, আত্মবিকাশ এই সমস্ত মানসিক সক্রিয়তার সাথে বিশেষভাবে সম্পর্কযুক্ত। আমরা যা কিছুই করিনা কেন, যা-ই ভাবিনা কেন, সবকিছুর পেছনেই--- আমাদের জ্ঞাতে অথবা অজ্ঞাতসারে কাজ করছে--- সেই আদি প্রশ্ন--- আদি উদ্দেশ্য। 'এটা চাই' --- 'ওটা চাই' বলে, কতো কিছুর পিছনেই না ছুটে মরছি আমরা। কিন্তু কিছুতেই তৃপ্ত--- সন্তুষ্ট হতে পারছি না। প্রকৃতপক্ষে, আমরা যা চাই--- সেই অমূল্য রতন--- 'আত্মজ্ঞান' যতক্ষণ পর্যন্ত না লাভ করছি, ততক্ষণ এই চাওয়া আর ছোটার পালা চলতেই থাকবে। আত্মজিজ্ঞাসা--- আত্ম-অন্বেষণ হলো আধ্যাত্মিকতার প্রথম কথা। আমি কে--- আমি কেন--- আমি কোথা হতে এসেছি, এবং কোথায় আমার গন্তব্য, এই মহাবিশ্ব-সৃষ্টির শুরু কোথায় এবং এর অন্তিম লক্ষ্য-ই বা কী---? এই নিয়েই আধ্যাত্মিক জগত। প্রকৃত আধ‍্যাত্মিকতা আর প্রচলিত বা তথাকথিত আধ্যাত্মিকতা এক জিনিস নয়। 'কে আমি---?' এই হলো প্রকৃত অধ্যাত্ম জগতে প্রবেশের প্রথম পদক্ষেপ। এবং তার অন্তিম লক্ষ্য হলো--- 'একত্ব'। চেতনার ক্রমবিকাশের পথ ধরে এগিয়ে গেলে, স্বাভাবিকভাবেই ক্রমশ অশরীরী আত্মা, উচ্চ থেকে উচ্চতর চেতন স্তরের সত্তা বা আত্মা, দেব-চেতন আত্মা, ---ক্রমে বিশ্বাত্মা বা ঈশ্বরাত্মার সাক্ষাৎ ঘটবে এই পথে। বিকশিত হতে থাকবে একে একে ক্রমোচ্চ চেতন-স্তরের মনগুলি (বিকাশমান মনোপদ্মের ডায়াগ্রাম দ্রষ্টব্য)। যদিও মন বা আত্মা-ই অধ্যাত্ম জগতের প্রধান কেন্দ্র, তবুও মনের মধ্যে--- আমিত্ববোধকারী যে সত্তা বা অংশটি রয়েছে, সেই 'আমি' বা 'অহম' আকারধারী অংশটিই হলো আধ্যাত্মিকতার মুল কর্তা। আত্মসচেতন তথা 'আমি' সম্পর্কে সজাগ-সচেতন সেই অংশটি, যে চিন্তা করে--- অনুভব করে, এবং ইচ্ছা প্রকাশ করে। এ সম্পর্কে আরও ভালোভাবে বুঝতে 'মন' ও 'চেতনা' সম্পর্কিত অন্যান্য প্রবন্ধ গুলি পড়তে হবে। নিজের স্বরূপ--- নিজের প্রকৃত রূপ বা অস্তিত্ব সম্পর্কে জ্ঞান অর্জনের ইচ্ছাই হলো আধ্যাত্মিকতা। ক্রমশ ব্যক্তি 'আমি' থেকে মহা 'আমি', অতঃপর আদি 'আমি' সম্পর্কে বিশুদ্ধ জ্ঞান লাভের মধ্য দিয়ে আলোকপ্রাপ্ত হওয়ার উদ্দেশ্যে ঐকান্তিকভাবে উদ্যোগী হয়ে ওঠাই হলো প্রকৃত আধ্যাত্মিকতা।2020-09-1107 minসদগুরু মহর্ষি মহামানসসদগুরু মহর্ষি মহামানসমহাধর্ম, প্রকৃত মানববিকাশের লক্ষ্যে একটি যুগান্তকারী নতুন ধর্ম। উপক্রমণিকা।একজন মানুষ রূপে, আমরা প্রত‍্যেকেই একটি সহজ ধর্ম নিয়ে জন্ম গ্রহণ করে থাকি, তা' হলো~ মানবধর্ম। কিন্তু সমাজ-সংসার সেই মানবত্বলাভ মুখী স্ব-বিকাশমূলক স্বাভাবিক ধর্ম থেকে আমাদেরকে বিচ্যুত করে--- বিপথগামী ক'রে, কোনো একটি বিশ্বাস ভিত্তিক ধর্ম নামক অধর্ম আমাদের উপর আরোপ ক'রে বা চাপিয়ে দেওয়ার ফলে, আমরা স্বতঃস্ফূর্ত মনোবিকাশের পথ থেকে সরে এসে অন্ধের মতো গড্ডালিকা প্রবাহে ভেসে চলেছি। এইভাবে হাজার হাজার বছর ধরে চলতে চলতে আজ আমরা মানবজীবনের মূল লক্ষ্য~ পূর্ণ বিকশিত মানুষ হয়ে ওঠার লক্ষ্য থেকে বহুদূরে সরে এসেছি। এতদিনে স্বাভাবিকভাবে যতটা মনোবিকাশ তথা মানববিকাশ হওয়ার ছিল, তার কিয়দংশ বিকাশও হয়ে ওঠেনি আজ। ক্রমশ আত্মবিকাশ লাভের মধ্য দিয়ে মানবত্ব লাভের উদ্দেশ্যে --- বিস্মৃতপ্রায় মানবধর্মকে পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করতে, মানুষকে তার মূল স্রোতে ফিরিয়ে আনতে, সময়ের চাহিদা মতো আত্মপ্রকাশ করেছে~ 'মহাধর্ম'। বিমূর্ত মানবধর্মের মূর্ত রপই হলো~ মহাধর্ম। একে সঠিকভাবে বুঝতে হলে, পূর্বলব্ধ সংস্কার --বিশ্বাস থেকে মুক্ত হয়ে, প্রচলিত ধর্ম-- শাস্ত্র-- মত এবং বিভিন্ন ব্যক্তির উক্তির সঙ্গে তুলনা না করে, নিরপেক্ষ যুক্তি-বিচারসহ মুক্তমন নিয়ে সত্য উপলব্ধির উদ্দেশ্যে এগিয়ে যেতে হবে। এ'হলো বিশুদ্ধ জ্ঞানের পথ। এখানে একটা কথা উল্লেখনীয়, সহজ-প্রবৃত্তি এবং সহজ-ধর্মের সঙ্গে কিছু নীচ প্রবৃত্তি, কিছু আদিম বা পাশবিক বা প্রাক-মানব ধর্মও আমরা জন্মসূত্রে লাভ করে থাকি। এখন, সেগুলিকে অনিষ্টকর অবদমন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে অবদমিত করে নয়, সঠিক শিক্ষা ও চিকিৎসার মাধ্যমে, এবং জ্ঞান ও চেতনার আলোকে— সেইসব অন্ধকার অংশগুলিকে আলোকিত করে তুলতে হবে।    যা সম্ভব হয়ে ওঠে, মানবধর্মের পথ ধরে অনেকটা এগিয়ে থাকা সত্যদ্রষ্টা মানুষের লব্ধ জ্ঞান-অভিজ্ঞতা, শিক্ষা ও উপদেশ লাভের মাধ্যমে। তাঁদের উদ্ভাবিত কিছু বিশেষ উপায় বা পদ্ধতি অনুশীলনের মাধ্যমে। এ-ও মানবধর্ম তথা মহাধর্ম-এরই একটি অংশ। বিশ্বাস ভিত্তিক এবং প্রতারণামূলক ধর্ম পথে এটা কখনোই সম্ভব নয়।2020-09-1102 minসদগুরু মহর্ষি মহামানসসদগুরু মহর্ষি মহামানসমানবধর্মই মহাধর্মশুরুতেই, কবির একটা বাণী মনে পড়ে গেল। ‘জন্মিলে মরিতে হবে— অমর কে কোথা কবে’। শুধু উদ্ভিদ আর জীব জগতেই নয়, সমস্ত ক্ষেত্রেই, মায় মহাবিশ্ব পর্যন্ত, যার জন্ম হয়েছে— তার মৃত্যু হবে। যার শুরু আছে— তার শেষ আছে। সৃষ্টি হলেই একসময় তার ধ্বংস অনিবার্য। ধর্মের ক্ষেত্রেও সেই এককথা। প্রচলিত সমস্ত ধর্মগুলি এক এক সময়— এক একজন বা কয়েকজনের দ্বারা সৃষ্টি হয়েছে। আবার পূর্বনির্ধারিত ভাবেই যখন যার শেষ হবার— শেষ হয়ে যাবে। আচ্ছা? —একবারও কি আপনাদের মনে হয়না, আপনারা যে— যে ধর্ম অনুসরণ করে চলেছেন, সেই সেই ধর্মের স্রষ্টা যে বা যাঁরা— তাঁদের ধর্ম কি ছিলো?! তাঁদের পিতা— প্রপিতার ধর্ম কি ছিলো? তাঁদের পূর্বাদিপূর্ব মানুষদের ধর্ম কি ছিলো?! একবারও কি প্রশ্ন জাগেনা? শিকড়ের সন্ধানে একবারও কি চিন্তা-ভাবনার উদয় হয়না আপনাদের মনোজগতে? হ্যাঁ, তখনো ধর্ম ছিলো। আমরা আমাদের জ্ঞাতে বা অজ্ঞাতে তা’ অনুসরণ করে এসেছি। তা’ হলো— আত্ম-বিকাশমূলক ধর্ম— মানব ধর্ম। মানুষ সৃষ্টির সাথেসাথেই ঈশ্বর (বিশ্বাত্মা) তথা জাগতিক ব্যবস্থাই এই ধর্ম সৃষ্টি করেছে। যতদিন মানবজাতি থাকবে— মানবধর্মও থাকবে ততদিন। এই সাধারণ কথাটা আমাদের অবোধ মন কিছুতেই বুঝতে পারেনা, বুঝতে চায়না! আরে! ঈশ্বর সৃষ্ট ধর্ম —এত প্রকারের — এত ভিন্ন ভিন্ন প্রকৃতির হবে কেন?! বিভিন্ন চেতন-স্তরের জন্য বিভিন্ন ধর্ম হলে, তাও একটা কথা ছিলো। ঈশ্বর সৃষ্ট ধর্ম তো সর্বত্র একই হবে! এক এক জায়গায় এক এক রকমের হবেনা। আর, তা’ হবে আত্ম-বিকাশ মূলক —মানব-উন্নয়ন মূলক ধর্ম। একবারও কি কখনো প্রশ্ন জেগেছে মনে— যে ঈশ্বরকে নিয়ে আমরা এতো মাতামাতি করি, এতো যার উপাসনা করি— যার কাছে দিন-রাত প্রার্থনা করি—, সেই ঈশ্বরের ধর্ম কী?2020-09-1110 minসদগুরু মহর্ষি মহামানসসদগুরু মহর্ষি মহামানসএকটি নতুন ধর্ম— প্রকৃত মানব-বিকাশের জন্যআজ আপনাদেরকে মানবধর্ম ভিত্তিক আত্মবিকাশ বা মনোবিকাশ মূলক তথা মানববিকাশ মূলক যুগান্তকারী একটি নতুন ধর্মের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিতে প্রয়াসী হয়েছি। যুগসন্ধিকালের এই তীব্র সংকটাবস্থায়, মনুষ্যকৃত অধিকাংশ জটিল সমস্যার মূল— অজ্ঞানতা-অন্ধত্বকে দূর করে, আমাদের আত্মবিকাশমুখি মৌলিক ধর্ম— মানবধর্মকে পুণঃপ্রতিষ্ঠিত করতে, সময়ের চাহিদামতোই, আত্মপ্রকাশ করেছে একটি নতুন ধর্ম। ধর্মটির নাম — মহাধর্ম।  বিমূর্ত মানব ধর্মের মূর্ত রূপই হলো 'মহাধর্ম' এই ধর্ম প্রচলিত ধর্মগুলির মতো অন্ধবিশ্বাস এবং ঈশ্বরারাধনা ভিত্তিক ধর্ম নয়। 'মহাধর্ম' হলো বিমূর্ত মানবধর্মের মূর্ত রূপ— প্রকৃত মানব বিকাশমূলক ধর্ম। অজ্ঞানতার অন্ধকার দূর করে, সচেতনতার আলোকে জগতকে আলোকময় করে তুলতেই মানবধর্ম— মহাধর্ম-এর আবির্ভাব। ইন্টারনেট তথা সোসাল মিডিয়ার মাধ্যমে এই ধর্মমত প্রায় সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছে। আত্মবিকাশকামী যুক্তিবাদী মুক্তচিন্তক অনেক মানুষই ক্রমশ এই ধর্মের ভক্ত ও অনুসরণকারী হয়ে উঠেছেন। এই ধর্মের প্রবক্তা হলেন— মহর্ষি মহামানস।   মানব ধর্ম— হলো মানুষের প্রকৃত ধর্ম— আদি ধর্ম। আত্ম-বিকাশের ধর্ম। আমরা সেই মানবধর্মকে ভুলে গিয়ে, নানারূপ ধর্ম ও অধর্ম নিয়ে অজ্ঞান-অন্ধের মতো মোহাচ্ছন্ন হয়ে মেতে আছি। চারিদিকে একটু সচেতন দৃষ্টিতে তাকালেই দেখা যাবে— দিনকে দিন ক্রমশ ভয়ানক পরিণতির দিকে এগিয়ে চলেছি আমরা। আজকের এই ঘোর সঙ্কটকালে— এই সর্বনাশা করুণ অবস্থা থেকে রক্ষা পেতে, অবিলম্বে মানবধর্মকে পুনঃপ্রতিষ্ঠিত ক’রে, মানবধর্ম অনুশীলন করতে হবে আমাদের। প্রতিটি মানুষের প্রধান কর্তব্য হলো প্রকৃত মানুষ হয়ে ওঠা। পূর্ণ বিকশিত মানুষ হয়ে ওঠার জন্য অনুশীলণীয় ধর্মই হলো— 'মহাধর্ম'। মানবধর্ম মানে শুধু সৎ ও সহৃদয়— সহানুভূতিশীল হয়ে ওঠাই নয়, মানবধর্ম হলো পূর্ণ বিকশিত মানুষ হয়ে ওঠার জন্য অবশ্য পালনীয় ধর্ম। একজন বিকশিত মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবেই সৎ ও সহৃদয়— সহানুভূতিশীল  হয়ে থাকেন। মানবধর্ম অনুশীলনের মধ্যদিয়েই প্রকৃত মানব-বিকাশ এবং বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠা সম্ভব হবে। মানবজীবনে এক শুভ-পরিবর্তন আসছে মানবধর্ম— মহাধর্ম-এর পথ ধরে।   মহাধর্ম হলো— মানবধর্ম ভিত্তিক অন্ধ-বিশ্বাসমুক্ত মানব-বিকাশমূলক অধ্যাত্মিক-বিজ্ঞান অনুসারী যুগোপযোগী ধর্ম। মহাধর্ম হল— এ’কালের মহা বৈপ্লবিক উত্তাল তরঙ্গ— প্রকৃত মানব বিকাশের জন্য। এ’হলো অত্যুৎকৃষ্ট (সুস্থ—শান্তিপূর্ণ ও যথেষ্ট বিকশিত) জীবন লাভের শ্রেষ্ঠ পথ। মহাধর্ম গ্রহন করতে, এবং দিকে দিকে সংগঠন গড়ে তুলতে, মুক্তমনের সত্যপ্রেমী যুক্তিবাদী আত্ম-বিকাশকামী জ্ঞানপথের উদ্যোগী মানুষদের আহ্বান জানাই।2020-09-1106 minসদগুরু মহর্ষি মহামানসসদগুরু মহর্ষি মহামানসদ্রুত পরিবর্তীত অবস্থার সঙ্গে মানিয়ে নিয়ে টিকে থাকতে, প্রয়োজন মতো নিজেদের সংশোধন পরিবর্তন ঘটাতে হবে।দ্রুত পরিবর্তীত অবস্থার সঙ্গে মানিয়ে নিয়ে টিকে থাকতে, প্রয়োজন মতো নিজেদের সংশোধন পরিবর্তন ঘটাতে হবে। আমরা এখন সময়ের এক চরম সন্ধিক্ষণে এসে উপস্থিত হয়েছি। ভিতরে বাইরে কর্মক্ষেত্রে চতুর্দিকে অত্যন্ত দ্রুত গ‍তিতে পরিবর্তন ঘটে চলেছে। এই পরিবর্তনের সাথে সাথে আমরা যদি নিজদেরকে পরিবর্তিত করতে না পারি, যদি সময়ের সঙ্গে মানিয়ে চলতে না পারি, তাহলে অচিরেই অনিবার্যরূপে আমাদের বিলুপ্তি ঘটবে। বেশি দূরের কথা নয়, আগামী বিশ বছরের মধ্যেই প্রকৃতি সহ আমাদের জীবনে এত বেশি পরিবর্তন ঘটবে, যে তার সঙ্গে তাল মিলিয়ে সময়োপযোগী ও পরিবর্তিত হতে না পেরে, বহু মানুষই জীবন চলার পথে মুখ থুবড়ে পড়বে। এই করুণ অবস্থা থেকে রেহাই পেতে, আমাদেরকে অনেক বেশি সজাগ-সচেতন সতর্ক হয়ে উঠতে হবে। সময়োপযোগী হয়ে উঠতে হবে। তা না হলে আমরা হারিয়ে যাবো অতীতের সেই বিলুপ্ত প্রাণীদের মতোই। তাই সময়ের ডাকে মানবধর্ম ভিত্তিক সময়োপযোগী ধর্ম মহাধর্মকে মনেপ্রাণে গ্রহণ কোরে, তা নিষ্ঠার সঙ্গে অনুশীলন কোরে যথেষ্ট মনোবিকাশ ঘটাতে পারলে, তবেই এই কঠিন পরিস্থিতি থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব হবে। কঠিন সময়ের সঙ্গে তাল মেলাতে, কঠিন পদক্ষেপ নিতেই হবে আজকে আমাদের। এখনো সময় আছে, সমস্ত অন্ধবিশ্বাস ও আলস‍্য ত‍্যাগ করে আত্মবিকাশ অর্থাৎ মনোবিকাশের নিমিত্ত, অবিলম্বে মানবধর্ম ভিত্তিক ধর্ম মহাধর্ম গ্রহণ ও পালন করতে হবে আমাদেরকে। এটা কোনো ভয় দেখানো কথা নয়। এটাই হলো আজকের চরম সত্য। আমাদেরকে এই চরম দুরবস্থা থেকে রক্ষা করতে পারবেনা প্রচলিত কোনো ধর্মই। কোনো ওপরওয়ালাই নেমে আসবে না তখন এই পৃথিবীতে। নিজেদেরকেই রক্ষা করতে হবে, যুক্তি বিজ্ঞান প্রজ্ঞান ও প্রকৃত অধ‍্যাত্ম জ্ঞানের সাহায্যে। পরিবর্তীত অবস্থার সঙ্গে মানিয়ে নিয়ে টিকে থাকতে, প্রয়োজন মতো নিজেদের সংশোধন পরিবর্তন ঘটাতে হবে। সেই পরিবর্তনের ডাক দিয়েছে মানবধর্ম ভিত্তিক একটি যুগান্তকারী নতুন ধর্ম মহাধর্ম । মানুষের আদি ধর্ম মৌলিক ধর্ম, একমাত্র ধর্ম। মহাধর্ম। মানুষকে সঠিক পথে পরিচালিত করতে আবির্ভূত হয়েছে, মানুষের প্রকৃত কল‍্যানকামী ধর্ম। যাকে ধারণ করে মানুষ ভালোভাবে বাঁচতে ও সঠিকভাবে বিকাশ লাভ করতে পারে, তা-ই হলো ধর্ম। তাকেই বলা হয়~ মানব ধর্ম। আর, যাকে ধারণ করে মানুষ অজ্ঞান-অন্ধের মতো নিম্নগামী হয়ে ভুল পথে এগিয়ে যায়, যা মানুষকে অজ্ঞানতার অন্ধকারে গহ্বরে ডুবিয়ে রাখে, তা' কখনোই ধর্ম নয়, তা' হলো অধর্ম। যারা মানবধর্ম থেকে বিচ‍্যুত হয়েছে, অথবা মানবধর্ম বিস্মৃত হয়েছে, তাদের জন‍্য আজ প্রয়োজন 'মহাধর্ম' নামে এই আরোপিত মানবধর্ম। সন্তানদের প্রকৃত মানুষ করে তুলতে চাইলে, শুরু থেকেই তাদেরকে মানবধর্মের পাঠ দিতে হবে। সন্তান অমানুষ তৈরি হলে, তারজন্য দায়ী হবে তোমরাই, আর, তার কুফল শুধু তোমরাই নও, ভোগ করতে হবে গোটা মানব সমাজকেই। তাই, আর বিলম্ব না করে, আজই মানবধর্মে দীক্ষিত হও সবাই। মানববিকাশের এই বৈপ্লবিক আহ্বানে সাড়া দিয়ে মানবধর্মকে পুনঃ প্রতিষ্ঠিত করো। এই দুঃসহ যন্ত্রণাদায়ক কঠিন পরিস্থিতি থেকে মুক্ত হয়ে সর্বোত্তম জীবন লাভ করো। মানবধর্ম-ই মূর্ত হয়েছে 'মহাধর্ম' রূপে। মানব ধর্মই মহাধর্ম। জাগো~ ওঠো, আত্মবিকাশ লাভ করো। জয় মানবধর্মের জয়। জয় মহাধর্মের জয়।2020-09-0703 minসদগুরু মহর্ষি মহামানসসদগুরু মহর্ষি মহামানসমানব ধর্মই মহাধর্ম। যার মূল কথা হলো মানব বিকাশ।মানবধর্মই মহাধর্ম। যার মূল কথা হলো মানব বিকাশ। মানবদেহী বা মানবদেহ ধারী হলেই যে সে মানবত্ব লাভ করেছে অথবা তার আয়ুষ্কালের মধ্যেই মানবত্ব লাভ করতে পারবে তেমন নয়। মানবত্ব লাভ হলো পূর্ণবিকশিত মানুষ হয়ে ওঠা। মানব জীবনের প্রথম ও প্রধান লক্ষ্যই হলো মানবত্ব লাভ। একজন মানবদেহী বা মানবদেহ ধারী যে ধর্ম রূপ পথ ও পদ্ধতি অবলম্বন কোরে মানবত্ব লাভ করতে পারে, সেই ধর্মই হলো মানবধর্ম। নানা মতবাদ অনুসরণ কোরে ঈশ্বর ও স্বর্গরূপ মরীচিকার পিছনে অন্ধের মতো ছুটে চলা মানবধর্ম নয়। দেবত্ব এবং তৎপরবর্তী ঈশ্বরত্ব আমাদের মধ্যেই সুপ্তাবস্থায় এবং বিকাশের অপেক্ষায় রয়েছে। দেবত্ব এবং ক্রমে ঈশ্বরত্ব লাভের জন্য আমাদেরকে মানবত্ব লাভ করতে হবে সর্বাগ্রে। কর্ম ও ভোগের মধ্য দিয়ে জ্ঞান অভিজ্ঞতা লাভের মধ্য দিয়ে ক্রমশ মনোবিকাশ তথা চেতনার বিকাশ লাভ করা আমাদের স্বভাবধর্ম। কিন্তু আমাদের ভিতরে বাইরে চারিপাশে বিকাশের অনুকূল অবস্থা না থাকায় নানা প্রতিকূলতা থাকায়, বিকাশ উপযোগী ব্যবস্থা গ্রহন আবশ্যক হয়ে পড়ে। মানবধর্ম মহাধর্মই হলো সেই অত্যাবশ্যক ব্যবস্থা। একটা চারাগাছের সঠিক বিকাশের জন্য যেমন যত্ন পরিচর্যা সুরক্ষাসহ পুষ্টি ও সুস্থতার জন্য ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়, এও ঠিক তেমনি। মানুষের প্রকৃতি অনুযায়ী বহু পথ বা মার্গ ধোরে মানুষ অগ্রসর হয়ে থাকে। তার মধ্যে নিম্নগামী পথগুলি বাদ দিয়ে কর্মপথ ভক্তিপথ জ্ঞানপথ এসবই মিলিত হয়েছে মহাধর্ম পথে। কর্ম ব্যতীরেকে ভক্তিপথ জ্ঞানপথ কোনো পথেই অগ্রসর হওয়া সম্ভব নয়। আবার জ্ঞানপথেও ভক্তি থাকে। সে হলো জ্ঞানের প্রতি ভক্তি সত্যের প্রতি ভক্তি। তবে তা অন্ধ ভক্তি নয়। অন্ধ ভক্তির পথ হলো নিম্নমূখী পথ অধঃপতনের পথ। ধর্মরূপ যে যুক্তিসম্মত পথ পদ্ধতি ও ব্যবস্থা একজন মানবদেহীকে মানবত্ব লাভে সাহায্য করে, তাই হলো মানবধর্ম। আর, এই মানবধর্মই মহাধর্ম। মহাধর্ম প্রচলিত রিলিজিয়ন, প্রচলিত ধার্মিক সিস্টেমের মতো কোন ধর্মমত নয। মহাধর্ম হলো মানবধর্ম। মানুষের প্রাকৃতিক ধর্ম এবং ঠিকমতো বিকশিত হয়ে ওঠার ধর্ম। একজন মানুষ অনেক জ্ঞান চেতনা ও সুস্থতা লাভের মধ্য দিয়ে অনেকটাই বিকশিত মানুষ হয়ে উঠলে, সে তখন নিজেই বুঝতে সক্ষম হয় যে কোনটা ঠিক আর কোনটা ঠিক নয়, কি তার করণীয় কোনটা গ্রহণ করা উচিত আর কোনটা উচিত নয়। এমনকি নতুন পথও উন্মোচিত হতে পারে সেই সচেতন দৃষ্টির সামনে। মহাধর্ম তাই আমাদের কোন তত্ত্ব কোন দর্শন চাপিয়ে না দিয়ে, যথেষ্ট বিকাশপ্রাপ্ত মানুষ হয়ে ওঠার উপরেই গুরুত্ব দেয়। পূর্ণবিকশিত মানুষ হয়ে ওঠার জন্য পালনীয় কর্মই হলো মহা ধর্মাচারণ। মহাধর্ম বলে আগে নিজেকে জানো, জীবনের উদ্দেশ্য লক্ষ্য কি তা জানো এবং সেই সঙ্গে জগত সম্পর্কে সাধারণ জ্ঞান লাভ করো। এই ভিত্তিমূল জ্ঞান অর্জনের মধ্য দিয়ে চেতনা বৃদ্ধির সাথে সাথে তুমি নিজেই নিজের কর্তব্য স্থির করতে পারবে। কর্তব্যকর্মের মধ্যে আপাত করণীয় কিছু কর্ম আছে, যা তোমায় আগে করতে হবে, আর ভবিষ্যতে করণীয় কর্মগুলি ভবিষ্যতেই করতে হবে। শুধু মাথায় রাখতে হবে যে আপাত করণীয় কর্মগুলির মধ্য দিয়ে তোমাকে ভবিষ্যতে করণীয় কর্মের যোগ্য হয়ে উঠতে হবে। এই মহা চেতন সিন্ধুর মধ্যে তুমি হলে একটি বিন্দু স্বরূপ। যে ব্যক্তি নিজেকে প্রকৃতই জানে, একমাত্র সেই ঈশ্বরকে জানতে সক্ষম তার স্বরূপে বা প্রকৃতরূপে। যার আছে নিজের সম্পর্কে ভ্রান্ত ধারণা ভ্রান্ত বিশ্বাস, তার ঈশ্বরও হয় ভ্রান্ত ধারণা ভ্রান্ত বিশ্বাসের উপর গড়ে ওঠা এক কল্পলোকের ঈশ্বর। তাই, নিজেকে না জেনে ঈশ্বরকে তার স্বরূপে না জেনে, ঈশ্বরলাভ ঈশ্বরের কৃপা লাভ, মুক্তিলাভ বা স্বর্গ লাভের পিছনে ছুটে মোরো না। বাস্তব জ্ঞানসহ প্রকৃত অধ‍্যাত্ম জ্ঞান ও যথেষ্ট চেতনা লাভের মধ্য দিয়ে এবং সর্বাঙ্গীন সুস্থতা লাভের মধ্য দিয়ে প্রকৃত বিকশিত মানুষ হয়ে ওঠো। একজন মানুষ হিসেবে পূর্ণ বিকশিত মানুষ হয়ে ওঠার ধর্মই হোক তোমার ধর্ম। মহাধর্ম হলো মানুষের প্রাকৃতিক ধর্ম, স্বধর্ম। যে ধর্ম পালনের মধ্য দিয়ে মানুষ সার্বিক বিকাশপ্রাপ্ত মানুষ হয়ে ওঠার পথে অগ্রসর হতে পারে, সেই আচরিত ধর্মই হলো মহাধর্ম। আত্মবিস্মৃত মানুষকে তার আত্মা স্বরূপ আত্মপরিচয় জ্ঞাপনের মধ্য দিয়ে স্বধর্মে দীক্ষিত ক'রে জীবনের মূল লক্ষ্য পানে এগিয়ে দেওয়া হলো, এই ধর্মের প্রধান উদ্দেশ্য। নিজের সাথে নিজের পরিচয় ঘটানোই এই ধর্মের প্রথম পাঠ। এই প্রসঙ্গে সেই বাঘ্রশাবকের গল্পটা উল্লেখযোগ্য: এক গ্রামে এক পশুপালক বাস করতো। তার সেই খোঁয়াড়ে অনেক গরু ছাগল ভেড়া ছিল। প্রতিদিন সেই পশুপালক তার পোষ‍্যদের বনের ধারে নিয়ে যেত ঘাসপাতা খাওয়ানোর জন্য। একদিন সে দেখতে পায় পথের ধারে একটা বাঘ্রশাবক প্রায় অচৈতন্য অবস্থায় পড়ে আছে। স্নেহ মমতা বশতঃ সে ওই বাঘ্রশাবকটিকে নিয়ে এসে অন্যান্য পশুদের সঙ্গেই লালন পালন করতে থাকে। বাঘ্রশাবকটি একটু সুস্থ হয়ে উঠতেই, সে নিজেকে..2020-09-0705 minসদগুরু মহর্ষি মহামানসসদগুরু মহর্ষি মহামানসধর্ম কথা ।। স্বভাব ধর্ম ও আরোপিত ধর্মধর্ম কথা। স্বভাব ধর্ম ও আরোপিত ধর্ম মানুষের ক্ষেত্রে ধর্ম দুই প্রকারের। একটি হলো তার স্বভাব ধর্ম, অপরটি আরোপিত ধর্ম। আরোপিত ধর্ম হলো একটি প্রায়োগিক ব‍্যবস্থা, যা তার অধিনস্ত অথবা অনুসরণকারীদের উপর প্রয়োগ করার উদ্দেশ্যে সৃষ্ট হয়ে থাকে। আরোপিত ধর্ম গঠিত হয়ে থাকে কয়েকটি বিষয় নিয়ে, যেমন দর্শন, নীতি অনুশাসন অনুশীলন আচরণবিধি প্রভৃতি। স্বভাব ধর্মের মধ্যে থাকে মূলত সুস্থ মানুষের সহজ ও স্বভাবগত বিকাশমূখি আচরণ। প্রচলিত আরোপিত ধর্ম হলো অজ্ঞান মানুষকে চিরকাল অজ্ঞান অন্ধ মূর্খ বানিয়ে রাখার এক সুন্দর খাঁচাকল। ভালভাবে বাঁচার জন্য এবং সঠিকভাবে দ্রুত বিকাশলাভের জন্য এই আরোপিত ধর্মটির প্রয়োজন হয়ে থাকে। এছাড়াও।স্বভাব ধর্মের মধ্যে কিছু ভালো গুণ থাকে এবং কিছু খারাপ গুণও থাকে। সেই খারাপ গুণগুলিকে নিয়ন্ত্রণ করার জন্যও আরোপিত ধর্মের প্রয়োজন হয়। কিন্তু প্রচলিত আরোপিত ধর্মগুলি এই দুটির কোনোটাই নয়। এই ধর্ম মানুষকে বিপথগামীই করে বিকশিত করে না। মানুষের এই অভাব দূর করতেই আত্মপ্রকাশ করেছে, যুগোপযোগী একটি নতুন ধর্ম মহাধর্ম। অনেকেই মানবতা বা মানবিকতা এবং মানবধর্ম এই দুটিকে গুলিয়ে ফেলেন। তাই এখানে সে সম্পর্কে কিছু বলা প্রয়োজন। মানবতা হলো মনুষ‍্যোচিত সদগুণাবলী। অনেকের মধ্যেই এই সদগুণাবলীর কিছু অংশ প্রকাশিত, আর কিছু অংশ সুপ্তাবস্থায় থাকে। মানবধর্ম হলো মানুষের স্বভাব ধর্ম। এই সুস্থ স্বভাব ধর্মের মধ্যে রয়েছে, ভালভাবে বেঁচে থাকার প্রচেষ্টা আর বিকাশ লাভের প্রচেষ্টা। কিন্তু প্রচলিত ধর্ম মানুষের এই বিকাশ লাভের স্বভাব ধর্মকে উৎসাহিত না কোরে, সাহায্য না কোরে, বরং উল্টে তাকে চাপা দেওয়ার এবং মানুষকে বিপথগামী কোরে তোলার চেষ্টা কোরে থাকে। কাল্পনিক ঈশ্বর লাভ ও ঈশ্বরের কৃপা লাভ এবং স্বর্গ লাভ প্রভৃতি অলীক বিষয় বস্তুর পিছনে মানুষকে অন্ধের মতো ছুটিয়ে মারে। মুখে সত‍্যের কথা বোলে, অসত‍্যের পিছনে মানুষকে তাড়িয়ে নিয়ে যায় প্রবঞ্চক প্রতারকদের মতো। একে তাই মানুষের উপযোগী ধর্ম না বলে বলা উচিত অধর্ম। মানবিকতা মানুষের স্বভাবগুণ বা স্বভাব ধর্মের একটা অংশ হলেও, অনেক সময় অসুস্থতা ও অস্বাভাবিক মানসিক গঠনের কারণে, এবং কুশিক্ষার কারণে, স্বভাব ধর্মের মধ্যে কিছু কিছু খারাপ গুণও থাকতে পারে, অথবা প্রবেশ করতে পারে। ফলে, মানবিকতা রূপ সদগুণাবলীর অভাব দেখা দিতে পারে এবং অমানবিক গুণের প্রকাশ ঘটতে পারে। এখন, একটি উপযুক্ত আরোপিত ধর্মের দ্বারা তা নিরাময়ের ব‍্যবস্থা করাই হলো আমাদের কর্তব্য। আর এই উদ্দেশ্যেই এসেছে মহাধর্ম নামে একটি নতুন ধর্ম। এই আরোপিত ধর্মও কিন্তু কিছু উন্নত চেতনার মানুষ তাদের উন্নত স্বভাব ধর্ম থেকেই সৃষ্টি কোরে থাকেন। বিকাশ বলতে এখানে মনোবিকাশ বোঝায়। আর বিকাশের বিভিন্ন স্তরে স্বভাব ধর্মেরও কিছু কিছু পরিবর্তন হয়। শুধু ধর্মই নয়, প্রায় প্রতিটি সিস্টেম বা ব‍্যবস্থার মধ্যেই কিছু ভালো কিছু খারাপ জিনিস থাকে। এখন, যদি সেই ব‍্যবস্থার নিয়ন্ত্রকগণ অথবা তার অধীনস্থ মানুষ সেই খারাপ দিকটাকে দূরীকরণের চেষ্টা না কোরে, শুধু ভালো দিকটাকে নিয়েই গর্ব মত্ত হয়ে থাকে, তাহলে একদিন না একদিন, সেই খারাপ অংশটা বৃদ্ধি পেতে পেতে ক্রমশ সমস্ত অংশটাকেই গ্রাস করে ফেলে। ফলস্বরূপ একসময় সেই ব‍্যবস্থাটি ধ্বংস প্রাপ্ত হয়। হাজার হাজার বছর ধরে অজ্ঞান অসহায় মানুষ অন্ধ বিশ্বাস ভিত্তিক আরোপিত ধর্মের অধিনস্ত হয়ে আসছে। এই সুদীর্ঘকালের ধর্ম শিক্ষায় মানুষের ওপরটাতে মেকী সভ্যতার চাকচিক্য ও ধর্মীয় ভেক বা ভন্ডামোর ছাপ পড়েছে শুধুমাত্র, অন্তরের অন্ধকার ঘোঁচেনি এতটুকুও। মানুষ যে তিমিরে ছিলো সেই তিমিরেই রয়ে গেছে আজও। প্রচলিত ধর্ম মানুষের সচেতন মনের বিকাশ ঘটাতে চায়নি কোনদিনই। প্রচলিত ধর্ম ও রাজতন্ত্র বর্তমানে রাজনীতি উভয় উভয়ের স্বার্থে একে অপরকে সুপ্রতিষ্ঠিত করতে সচেস্ট। মেকী মানব সভ্যতার অন্যতম ভিত্তি স্বরূপ শক্তিশালী তিনটি স্তম্ভ হলো— ধর্ম, রাজতন্ত্র আর বৈশ্যতন্ত্র। এরা পারতপক্ষে কম-বেশি প্রত্যেকেই মানুষকে অজ্ঞান অন্ধ কোরে রাখতে তাদের খুশিমতো মানুষকে ব্যবহার করতে এবং তাদের নিয়ন্ত্রণে রাখতে বদ্ধপরিকর। মানব মনের যথেষ্ট বিকাশ এদের কাম্য নয়। এককালে, আদিম মানুষকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে, তাদেরকে সমাজবদ্ধ ও শৃঙ্খলাবদ্ধ ক’রে তুলতে প্রচলিত ধর্মের প্রয়োজন ছিলো হয়তো। কিন্তু সময়ের পরিবর্তনের সাথেসাথে তা সময়োপযোগী না হয়ে ওঠায়, এখন তার প্রাসঙ্গিকতা হারিয়েছে অনেকাংশে। অন্ধ বিশ্বাস ভিত্তিক ধর্ম মানুষকে কখনোই প্রকৃত জ্ঞানের পথে সত্যের অভিমুখে অগ্রসর হতে সাহায্য করেনা। আজ চারিদিকে যে ভীষন অসুস্থতা অরাজকতা বিকার বিকৃতি, যে তমসাচ্ছন্ন ঘোর সঙ্কট পরিলক্ষিত হচ্ছে, তা অনেকাংশেই এই ধর্মের গর্ভে সৃষ্ট। ধর্ম নিজেই যদি অজ্ঞান অন্ধ দুষিত অসুস্থ, বিকারগ্রস্ত হয়, তার নিয়ন্ত্রণাধীন শাসনাধীন মানুষ ভাল হয় কী করে!2020-09-0706 minসদগুরু মহর্ষি মহামানসসদগুরু মহর্ষি মহামানসমানুষ হওয়া বলতে কী বোঝায়!মানুষ হওয়া বলতে কী বোঝায়! মনীষীরা যখন আশীর্বাদ ক’রে বলেন, মানুষ হও, তখন তাঁরা কি শুধু খেয়ে পোরে বড় হওয়ার কথা বলেন? একবারও ভেবে দেখিনা আমরা। অনেকের বক্তব্য, মানুষ আবার কি হবো, আমরা তো মানুষই! আসলে এই মানুষ হওয়া বলতে বোঝায়, যথেষ্ট বিকশিত মানুষ হওয়া। অর্থাৎ যথেষ্ট বিকশিত মনের মানুষ হওয়া। আত্মবিকাশের অর্থ হলো মনোবিকাশ। সচেতন মনের বিকাশ। এই ব্যাপারটা নিয়েও অনেকে ধন্দে আছে। কেউ কেউ ভাবে, আমাদের অনেক বয়েস হয়েছে যথেষ্ট জ্ঞান বুদ্ধি অভিজ্ঞতা হয়েছে, এর থেকে আবার কি বিকাশ হবে! এদের কাছে পূর্ণ বয়স্ক মানুষ আর পূর্ণ বিকশিত মানুষ প্রায় সমার্থক! বহীর্মুখী দৃষ্টি দিয়ে অন্তরের অন্ধকার অসুস্থতা অপূর্ণতা, অন্তরের বিকাশ বোঝা সম্ভব নয়। তার জন্য মন সম্পর্কে সাধারণ জ্ঞান সহ মন সম্পর্কে সজাগ সচেতন হতে হবে আমাদের। মনের দিকে তাকাতে হবে, লক্ষ্য রাখতে হবে মাঝে মাঝেই। মনে রাখতে হবে, এই মন আছে বোলেই আমরা মানুষ। তাই, একজন মানুষ হিসেবে আমাদের মন সম্পর্কে ওয়াকিফহাল হতে হবে। যার মন যত বিকশিত সে ততটাই বিকশিত মানুষ। মানুষে মানুষে এতো পার্থক্য সৃষ্টির পিছনেও বড় কারণ হলো আমাদের মন। বিভিন্ন চেতনস্তরের বিভিন্ন মানসিক গঠন এবং বিভিন্ন ধরণের সংস্কার বা প্রোগ্রামীং সংবলিত বিভিন্ন রূপ মনের কারণেই আমরা এক একজন এক এক ধরণের মানুষ। আমাদের এই মনের মধ্যে বর্তমানে সক্রিয় দুটি অংশী মনের একটি হলো অন্ধ আবেগ প্রবণ অবচেতন মন, আর অপরটি হলো সচেতন মন। এদের সুস্থতা এবং সচেতন মনের বিকাশের উপরেই মানুষের যাবতীয় বিকাশ উন্নতি সমৃদ্ধি নির্ভর করে। মানব সমাজের অধিকাংশ অসুখ অশান্তি সমস্যার মূলেই রয়েছে আমাদের এই মন। অজ্ঞান অন্ধ অসুস্থ বিকারগ্রস্ত মন। তাই, সুস্থ সুন্দর শান্তিপূর্ণ সমৃদ্ধ জীবন লাভ করতে, নিজের নিজের মনোবিকাশ ও সুস্থতা লাভের চেষ্টার সাথে সাথে, চারিপাশের সমস্ত মানুষের মনোবিকাশ এবং মানসিক সুস্থতা ঘটাতে সচেষ্ট হতে হবে আমাদেরকে।2020-09-0702 minসদগুরু মহর্ষি মহামানসসদগুরু মহর্ষি মহামানসমানবধর্ম আসলে কীমানবধর্ম আসলে কী। পৃথিবীর মুক্ত পাঠশালায় এই জাগতিক শিক্ষা ব‍্যবস্থায়, পূর্বসূরিদের জ্ঞান অভিজ্ঞতার দ্বারা সজাগ সচেতন, যুক্তি প্রিয় ও সত‍্যপ্রেমী হয়ে, ঘাত প্রতিঘাত বাধা বিঘ্ন প্রতিকূলতার মধ্য দিয়ে, কর্ম ও ভোগের মধ্য দিয়ে, জ্ঞান অভিজ্ঞতা লাভের মধ্য দিয়ে স্বতস্ফূর্তভাবে শিক্ষা গ্রহণের মাধ্যমে ক্রমশ মনোবিকাশ তথা চেতনা বিকাশের পথে এগিয়ে চলাই মানুষের স্বাভাবিক ধর্ম, মৌলিক ধর্ম এবং অন্যতম প্রধান ধর্ম। আর, এই হলো মানবধর্ম। আমরা সবাই একই পথের পথিক ক্রমবিকাশমান চেতনার পথে। তবু আজ কেউ চলেছে জ্ঞাতে আর কেউ অজ্ঞাতে। কেউ পিছিয়ে আর কেউ এগিয়ে। কেউ অতি ধীর গতিতে এগিয়ে চলেছে, আর কেউ দ্রুত গতিতে। কেউ মানবধর্ম থেকে বিচ‍্যুত হয়ে, চেতন আলোকবিহীন অন্ধকারাচ্ছন্ন পথে অজ্ঞান অন্ধত্বের কারণে হোঁচট খেতে খেতে অত্যন্ত দুঃখ কষ্ট যন্ত্রনা ও অসুস্থতার মধ্য দিয়ে কোনোক্রমে এই পথ অতিক্রম ক’রে চলেছে, আর কেউ মানবধর্মের চেতন আলোকে উজ্বল পথে স্বচ্ছন্দে জ্ঞানানন্দে স্ফূর্তিতে পূর্ণ-বিকাশের লক্ষ্যে এগিয়ে চলেছে এই একই পথ ধরে। কেউ মানবধর্ম সম্পর্কেই সজাগ নয়, ওয়াকিবহাল নয়, আর কেউ সজাগ সচেতনভাবে মানবধর্ম পালন কোরে চলেছে। এখন প্রশ্ন হলো, এমন অসামঞ্জস্য এমন পার্থক্য সৃষ্টি হওয়ার কারণ কী? আর মানবধর্মের স্বাভাবিক ছন্দময় মূলস্রোত থেকে বিচ‍্যুত হয়ে, এমন দুঃখ দুর্দশাগ্রস্ত হওয়ারই বা কারণ কী? এর অন‍্যতম কারণ হলো, মানুষের উপর চাপিয়ে দেওয়া কৃত্রিম ধর্ম। একটাই জগত পথও একটাই, শুধু জ্ঞান ও চেতনার পার্থক্যের জন্য এক একজনের এক এক দশা এবং এই পথ ও জগত এক একজনের কাছে এক এক প্রকার উপলব্ধ হয়। শুধু তাই নয়, জ্ঞান ও চেতনার স্বল্পতার কারণে এই পথ এই জগতকেই দুঃখ কষ্ট যন্ত্রনাময় নরক কোরে তোলে কেউ কেউ। এরজন্য অনেকাংশে দায়ী একশ্রেণীর স্বার্থান্বেষী মানুষের দ্বারা পরিচালিত অন্ধ বিশ্বাস ভিত্তিক প্রচলিত ধর্ম। ধর্ম যাকে ধারণ ও পালন করে আমাদের মনোবিকাশ বা মানব বিকাশের পথে এগিয়ে যাওয়ার কথা, উল্টে সেই ধর্মই যদি আমাদের বিপথগামী নিম্নগামী করে তোলে, তো সেই মিথ‍্যার বেসাতিকে কি ধর্ম বলা যাবে? একশ্রেণীর কুচক্রী অমানুষ, তাদের হীন স্বার্থ চরিতার্থ করার উদ্দেশ্যে, মানুষকে তাদের সৃষ্ট কাল্পনিক ঈশ্বর ভিত্তিক ধর্ম নামে অধর্মের খাঁচাকলে পুরে, মানুষের মধ্যে ধর্মীয় অন্ধবিশ্বাসের অনুপ্রবেশ ঘটিয়ে, মানুষকে তার স্বাভাবিক বিকাশমুখি মানবধর্ম থেকে বিচ‍্যুত করে, তার অধঃপতন ঘটিয়েছে। এই অজ্ঞান অন্ধত্ব জাত অশান্তি থেকে মুক্ত হয়ে স্বচ্ছন্দে সানন্দে এগিয়ে যেতে চাইলে, জ্ঞান ও চেতনা বিকাশের পথে অগ্রসর হতে হবে আমাদের, মানবধর্ম ভিত্তিক আত্মবিকাশ মূলক ধর্ম মহাধর্ম এর পথ ধরে। মানবধর্মকে পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করতেই আবির্ভূত হয়েছে মহাধর্ম নামে এক যুগান্তকারী নতুন ধর্ম। বিমূর্ত মানব ধর্মের মূর্ত রূপই হলো মহাধর্ম। যাকে ধারণ কোরে মানুষ ভালভাবে বাঁচতে পারে, অপরকে বাঁচাতে পারে এবং আত্মবিকাশের পথে নিজে অগ্রসর হওয়ার সাথে সাথে অপরকে অগ্রসর হতে সাহায্য করিতে পারে, তাই হলো মানব ধর্ম। আর এই মানবধর্মই হলো মহাধর্ম। এখন, অনেকেই প্রশ্ন করতে পারে, তাহলে আলাদা করে মানব ধর্ম ভিত্তিক এই মহাধর্ম গ্রহণ ও অনুশীলন করার প্রয়োজন কী। প্রয়োজন এই জন্য, আমরা হাজার হাজার বছর পেরিয়ে এলেও, এখনো আমাদের যথেষ্ট মনোবিকাশ ঘটতে পারেনি। আমরা আজও যে তিমিরে ছিলাম সেই তিমিরেই পড়ে আছি। আমাদের চেতনা বিকাশের ক্ষেত্রে সবচাইতে বড় প্রতিবন্ধকদের চিহ্নিত করতে হবে প্রথমে। এরা হলো--- প্রচলিত ধর্ম, রাজতন্ত্র বর্তমানে রাজনীতি, আর বৈশ‍্যতন্ত্র অর্থাৎ ব‍্যবসায়ীদের দ্বারা সৃষ্ট ব‍্যবস্থা। এরা চিরকালই আমাদেরকে এদের প্রয়োজন অনুসারে মুর্খ বানিয়ে রাখতে সদাতৎপর। মানুষের মনোবিকাশ এদের কাম‍্য নয়। মানুষ বেশি সচেতন হয়ে উঠলে এদের সর্বনাশ। এদের কারসাজিতেই আজ আমাদের যতটা মনোবিকাশ ঘটার কথা তা ঘটা সম্ভব হয়নি। মহাধর্ম হলো একটি অতি উৎকৃষ্ট বিশেষ প্র‍্যাকটিকাল ও থিওরিটিক‍্যাল শিক্ষা ব‍্যবস্থা। যার দ্বারা বিভিন্ন প্রতিকূলতা দূর করে দ্রুত মনোবিকাশ ঘটানো সম্ভব। মানুষকে সুস্থ ও সচেতন কোরে তোলা এবং পূর্ণবিকশিত মানুষ হয়ে ওঠার লক্ষ্যে আমাদেরকে এগিয়ে দেওয়াই মহাধর্ম এর কাজ। যেটা প্রচলিত শিক্ষা ব‍্যবস্থা অথবা প্রচলিত ধর্মের দ্বারা কখনোই সম্ভব নয়। আশা করছি মহাধর্ম আসলে কি এবং এর কি উদ্দেশ্য, তোমাদেরকে মোটামুটি বোঝাতে পেরেছি। মানবধর্ম থেকে বিচ্যুত হওয়া, অর্থাৎ মানবধর্মের স্বাভাবিক মানব বিকাশমুখী পথ থেকে সরে এসে বিপথগামী হওয়ার কথা আগেই বলেছি। এবার বলবো, মানবত্ব লাভের কথা। পশু যেমন পশুধর্ম নিয়ে জন্মগ্রহণ করে, মানুষও তেমনি মানবধর্ম নিয়েই জন্মগ্রহণ করে থাকে। তবে, পশুর ক্ষেত্রে পশুধর্ম আর পশুত্ব প্রায় সমর্থক হলেও, মানুষের ক্ষেত্রে তা নয়। পশুকে পশুত্ব অর্জন করতে হয়না। মানুষকে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই মানবত্ব অর্জন করতে হয়2020-09-0705 minসদগুরু মহর্ষি মহামানসসদগুরু মহর্ষি মহামানসসমস্যা কী ও কেন ।। মানবধর্ম~ মহাধর্ম পথেই সমস্যার প্রকৃত সমাধানসমস্যা— তার মূল কারণ ও সমাধানঃ ​ সমস্ত অমানবিক—ধ্বংসাত্মক—নিষ্ঠুর কার্যকলাপের জন্য দায়ী— মানুষের অজ্ঞানতা বা জ্ঞানের স্বল্পতা, আর অসুস্থতা— অস্বাভাবিকতা বা বিকৃত মানসিকতা। সারা পৃথিবীব্যাপী প্রতিনিয়ত হিংসা-বিদ্বেষ, নিপীড়ন-নির্যাতন-অত্যাচার-নিষ্ঠুরতা, ধর্ষন, প্রতারণা, হত্যা— ধ্বংস প্রভৃতি অসংখ্য অমানবিক অপরাধমূলক ঘটনা ঘটে চলেছে। এ’সবের জন্য একমাত্র দায়ী হলো— মানুষের যথেষ্ট চেতনারহিত অজ্ঞান ও অসুস্থ মন। ​ প্রচলিত ধর্মগুলির সাথে মহাধর্মকে গুলিয়ে ফেললে হবে না। মহাধর্ম হলো আমাদের প্রাথমিক ধর্ম— মৌলিক ধর্ম— মানবধর্ম। সর্বাঙ্গীন সুস্থতাসহ মনোবিকাশের পথে এগিয়ে চলাই এই ধর্মের মূল কথা। ​ আমরা অধিক অংশেই অন্ধ-আবেগপ্রবণ অবচেতন মনের দ্বারা চালিত হই বলেই আমাদের এত দুঃখ-কষ্ট-দুর্দশা। আমাদের সচেতন মন এখনও পর্যন্ত তেমন বিকশিত নয়। সচেতন মনের বিকাশ ঘটানোই আমাদের মূল লক্ষ্য। যার সচেতন মন যত বেশি বিকশিত, সে ততটাই বিকশিত মনের মানুষ। যে যত বেশি বিকশিত সে তত বেশি জীবনকে উপভোগ করতে সক্ষম। একে তো আমরা বেশিরভাগ সময়েই (অবচেতন মনের) অন্ধ-বিশ্বাস— অন্ধ-আবেগের দ্বারা চালিত হই, তার সাথে যদি আবার যুক্ত হয় অসুস্থতা— অসুস্থ মানসিকতা, তখন সোনায় সোহাগার মতো— আমাদের ভিতরটা একেবারে নরকে পরিণত হয়। জীবন দুর্বিসহ—বিষময় হয়ে ওঠে তখন। ক্রোধ—অসহিষ্ণুতা—হিংসা—বিদ্বেষ—নিষ্ঠুরতায় পূর্ণ হয়ে ওঠে আমাদের মন। যার যা আছে সে অপরকে তা-ই দিতে পারে। যার অন্তরে সুখ আছে—শান্তি আছে, সে অপরাপর মানুষকে তা’ শেয়ার করতে সক্ষম। যার অন্তর বিষে পরিপূর্ণ সে বিষই উদ্গিরণ করতে পারে। অমৃত সে দেবে কোথা থেকে! অন্তরকে বিষ মুক্ত— সুস্থ ক’রে তুলে, জ্ঞান আলোকে আলোকীত হয়ে উঠতে পারলেই দিব্য-সুন্দর জীবন লাভ করতে পারবো আমরা। —এটাইতো মানব জীবনে একান্ত কাম্য হওয়ার কথা। কিন্তু অসুস্থ মনের কাছে তা’ কাম্য নাও হতে পারে। তার কাছে আত্ম-ধ্বংসাত্মক পথই শ্রেয় মনে হতে পারে। সে শুধু নিজেকেই ধ্বংস করে না—সমাজ-সংসার-জগতটাকেও ধ্বংস করতে চায় সে! তার মনোভাব হলো— আমি শুধু একাই কষ্ট পাব কেন! সবাইকে কষ্ট দিতে পারলেই তার সাময়ীক—অলীক সুখ অনুভূত হয়। মহাধর্মের সাথে কারো বিরোধ থাকার কথা নয়, —একমাত্র অজ্ঞান-অন্ধ —অসুস্থ মন ছাড়া। এখন, যারা তুলনামূলকভাবে সুস্থ আছে, —যারা এখনও জীবনকে ভালবাসে, তারা ভালভাবে বাঁচার জন্য, এই সমস্যার সমাধানের জন্য— অনেক পথ অনুসন্ধান করছে, —অনেক কিছুই চেষ্টা করছে। কিন্তু ঠিক যা করণীয়— তা’ না করার ফলে সমস্যার সমাধান হচ্ছেনা এতটুকুও। এই সমস্যার একমাত্র সমাধান হলো— আত্মবিকাশ ও মানববিকাশমূলক ধর্ম— মহাধর্ম। সমস্যাকে ভালোভাবে তলিয়ে বুঝতে শেখায় এই ধর্ম, সমস্যার মূলে নিয়ে গিয়ে তার সমাধানের পথ দেখায় এই ধর্ম। এমনকি, সমস্যা থেকে মুক্ত হ’তে সরাসরি সাহায্যও করে এই ধর্ম। এখন, একে গ্রহন করা কি ত্যাগ করা ব্যক্তি বিশেষের নিজের নিজের জ্ঞান-চেতনা— বিচার-বুদ্ধি, পছন্দ-অপছন্দের উপর নির্ভরশীল।   প্রসঙ্গত জানাই— এই ধর্ম মূলতঃ জ্ঞান-পথের পথিকদের জন্য। এই ধর্ম গ্রহন করতে ও অনুশীলন করতে— পূর্বের ধর্ম ত্যাগ করা অত্যাবশ্যক নয়। অর্থাৎ তুমি তোমার ধর্ম ত্যাগ না করেও এই ধর্ম অনুশীলনের মধ্য দিয়ে লাভবান হতে পারবে। এই ধর্মের মূলে রয়েছে, যুক্তিসম্মত অধ্যাত্মবাদের একমাত্র গ্রন্থ— ‘মহাবাদ’ (Google search=  MahaVad)। মহাধর্ম অনুসরণ ও অনুশীলন করতে গিয়ে— মহাবাদের সমস্ত দর্শন ও মতবাদ তোমাকে বিশ্বাস করতে হবে— গ্রহন করতে হবে, এমন নয়। যার যতটুকু ভালো লাগবে সে ততটুকুই গ্রহন করবে। এখানে মনোবিকাশ-ই হলো মূল কথা। অন্ধের মতো অনুসরণ মোটেই কাম্য নয়।2020-09-0604 minসদগুরু মহর্ষি মহামানসসদগুরু মহর্ষি মহামানস'মহাধর্ম' নামে যুগোপযোগী একটি নতুন ধর্ম প্রকৃত মানববিকাশের লক্ষ্যেমহাধর্ম : সারকথা   ​ মহাধর্ম হলো আসলে মানবধর্ম। আমাদের মূলগত— প্রাথমিক ধর্ম। আত্ম-বিকাশ তথা মানব-বিকাশের জন্য অনুশীলনীয় ধর্ম। শ্রেষ্ঠতর জীবনলাভের নিশ্চিত উপায়। ​ সারকথা— “তোমার একটি সচেতন মন আছে বলেই— তুমি মানুষ। তবে তোমার এই (সচেতন) মনটি এখনও যথেষ্ট বিকশিত নয়। যথেষ্ট বিকশিত একজন মানুষ হয়ে উঠতে— তোমার এই মনটির বিকাশ ঘটানো আবশ্যক। আর এটাই তোমার প্রাথমিক ধর্ম।” ​ “তুমি একজন মানুষ রূপে জন্ম গ্রহন করেছ, তাই তোমার জীবনের প্রথম ও প্রধান লক্ষ্য হলো— পূর্ণবিকশিত মানুষ হয়ে ওঠা। জীবনের লক্ষ্যসহ— নিজেকে এবং এই জাগতিক ব্যবস্থাকে জানতে, সর্বদা সজাগ—সচেতন থাকতে চেষ্টা কর। নিজেকে প্রকৃত ও সর্বাঙ্গীন বিকশিত মানুষ ক’রে তুলতে উদ্যোগী হও।” ​ “জন্মসূত্রে বা ইচ্ছাক্রমে তুমি যে প্রচলিত ধর্মেরই অন্তর্ভুক্ত হওনা কেন, তোমার প্রথম পরিচয়— তুমি একজন মানুষ। একজন মানুষ হিসাবে, তোমার প্রধান ও মৌলিক ধর্মই হলো— মানবধর্ম। আর এই মানবধর্ম-ই মহাধর্ম। সর্বাঙ্গীন সুস্থতা সহ মানবমনের বিকাশ সাধনই যার মূল কথা।”   ​ “আমরা এখানে এসেছি— এক শিক্ষামূলক ভ্রমনে। ক্রমশ উচ্চ থেকে আরো উচ্চ চেতনা লাভই— এই মানব জীবনের অন্তর্নিহিত উদ্দেশ্য। একানে আমরা জ্ঞান—অভিজ্ঞতা লাভের মধ্য দিয়ে যত বেশি চেতনা-সমৃদ্ধ হয়ে উঠতে পারবো, —তত বেশি লাভবান হবো। আধ্যাত্মিক দৃষ্টিকোণ থেকে— এখান থেকে চলে যাবার সময় কিছুই আমাদের সঙ্গে যাবে না, —একমাত্র চেতনা ব্যতিত।” —মহর্ষি মহামানস ​ ​ সর্বপ্রথম আমাদের বুঝতে হবে— এই 'মহাধর্ম' আসলে কী। 'মহাধর্ম' হলো—   মানবধর্ম, আমাদের মৌলিক ধর্ম— মানুষ গড়ার ধর্ম। এই ধর্ম প্রচলিত কোনো ধর্ম বা রিলিজিয়নের সাথে তুলনীয় নিয়। ঈশ্বর ও বিশ্বাস এই ধর্মের মূল ভিত্তি নয়। এর ভিত্তি হলো— যুক্তি-বিজ্ঞান ও অধ্যাত্ম বিজ্ঞান। মহাধর্ম প্রচলিত ধর্মগুলি থেকে সম্পূর্ণতঃ ভিন্ন। ​ সঠিক আত্ম-বিকাশ শিক্ষাক্রম— ‘মহামনন’-এর (মহামনন হলো মহাধর্ম-এর ব্যবহারিক দিক) পথ ধরে প্রকৃত আত্মোন্নয়ন ও মানবোন্নয়ন ঘটানোই হলো— আমাদের প্রধান লক্ষ্য, আর এই হলো আমাদের প্রাথমিক বা মূলগত ধর্ম। চিরিন্তন মানবধর্মকে কেন্দ্র ক'রে গড়ে ওঠা— মহাধর্মকে আপাতদৃষ্টিতে একটি নতুন ধর্ম মনে হলেও, এটা কোনো নতুন ধর্ম নয়। এ’ হলো আমাদের শাশ্বত ধর্ম। আমাদের অজ্ঞানতার কারণে যা এতকাল ছিলো অন্তরালে। আত্ম-বিস্মৃত মানুষ আমরা আমাদের জীবনের মূল লক্ষ্যকে বিস্মৃত হয়ে, মোহ-আবেশে আচ্ছন্ন হয়ে— একটা ঘোরের মধ্যে বাস করছি। ​ যে ধর্ম অনুশীলনের মধ্য দিয়ে একজন ব্যক্তি সজাগ-সচেতনভাবে দ্রুত পূর্ণবিকশিত মানুষ হয়ে ওঠার পথে অগ্রসর হতে পারে, তাই হলো 'মহাধর্ম' (পড়ুন— 'মানবধর্ম আসলে কী')।  ​ ব্যক্তি মানুষের বিকাশের মধ্য দিয়েই দেশের এবং মানবজাতির বিকাশ সম্ভব। আর সেই উদ্দেশেই মহাধর্ম কার্যক্রম শুরু হয়েছে। একে সফল ক’রে তুলতে আপনার সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিন, এবং সক্রিয়ভাবে অংশ গ্রহন করুন। তুমি তোমার এলাকাতেই মহাধর্ম কার্যক্রম শুরু করতে পারো। শুধু প্রয়োজন– আত্মনিবেদন, মহা-উদ্যোগ, সাংগঠনিক ক্ষমতা আর উপযুক্ত স্থান।   তোমার​ জীবনের প্রাথমিক চাহিদা— শরীর-মনের সুস্থতা, শান্তি, সমৃদ্ধি ও বিকাশলাভ করতে, মহাধর্ম (মানবধর্ম) অনুশীলন করো। মহাধর্ম ক্রমশ এক মহা বৈপ্লবিক উত্তাল তরঙ্গে পরিণত হতে চলেছে। জীবনে আমূল শুভ-পরিবর্তন আসতে চলেছে— মহাধর্ম-এর পথ ধরে। একে ত্বরান্বিত ক’রে তুলতে তুমিও শরিক হও।2020-09-0604 minসদগুরু মহর্ষি মহামানসসদগুরু মহর্ষি মহামানস'ধর্ম' কী ও কেনধর্ম' কী ও কেন   যেমন জলের ধর্ম— আগুনের ধর্ম, তেমনই জীবের ক্ষেত্রে ‘ধর্ম’ হলো— তার সহজ আচরণ বা স্বভাবধর্ম। মানুষের ক্ষেত্রে কিছু পার্থক্য আছে। মানুষ তার স্বভাবধর্ম— সহজ আচরণের মধ্য দিয়ে স্বতঃস্ফূর্তভাবে ক্রমশ জ্ঞান-অভিজ্ঞতা ও চেতনা লাভের মধ্য দিয়ে— মনোবিকাশের পথ ধরে এগিয়ে গিয়ে— একসময় মানবত্ব লাভ করে। পূর্ণবিকশিত মনের মানুষ হয়ে ওঠে। মানব-মনের বিকাশ-পথ ধরে এগিয়ে চলাই হলো— মানবধর্ম।   ‘ধর্ম’ মানে অন্ধ-বিশ্বাসে— কাল্পনিক কোনকিছুর পিছনে অথবা কোনকিছু লাভের পিছনে ছুটে চলা নয়। ‘ধর্ম’ মানে অজ্ঞান-অন্ধের মতো কোনকিছু মেনে চলা, কোনো আচার-আচরণ করা, কাল্পনিক ঈশ্বরের উপাসনা করা, অথবা কারো কোনো দুরভিসন্ধিমূলক নির্দেশ পালন করা নয়। ‘ধর্ম’ নামে এইরূপ কোনো ব্যবস্থা যদি মানুষের উপর চাপিয়ে দেওয়া হয়, অথবা আরোপ করা হয়, —তা’ ধর্ম নয়, —অধর্ম।   এই প্রসঙ্গে আরোপিত ধর্মের কথা এসেই যায়। এক্ষেত্রে (আরোপিত) ‘ধর্ম’ হলো তা’ই,  —যাকে বা যে ব্যবস্থাকে গ্রহণ ও ধারণ ক’রে একজন মানুষ স্বচ্ছন্দে এবং দ্রুততার সঙ্গে সুস্থতা লাভসহ মানব-মনের তথা চেতনার বিকাশ ঘটিয়ে মানবত্ব লাভে সক্ষম হতে পারে, তা-ই হলো মানুষের প্রকৃত ধর্ম— (আরোপিত) মানবধর্ম।   মানুষ ব্যতীত অন্যান্য জীবের ক্ষেত্রে— তাদেরকে কোনো ধর্ম গ্রহণ ও তা’ ধারণ-পালন করতে হয়না। তা’ তাদের মধ্যে স্বভাবতই কার্যকর থাকে। তাহলে, মানুষের ক্ষেত্রে নতুন ক’রে ধর্ম গ্রহণ ও পালনের কথা আসছে কেন?! আসছে এই কারণে— মানুষের ক্ষেত্রে ‘মানবধর্ম’ তার সহজ ও স্বভাবধর্ম হলেও, অভিসন্ধিমূলকভাবে তার উপরে অন্য বা অন্যান্য কৃত্রিম ধর্ম— বিশ্বাসমূলক ধর্ম আরোপিত হওয়া অথবা চাপিয়ে দেওয়ার ফলে, সে তার আত্মবিকাশমূলক সহজ ও স্বভাবধর্ম থেকে বিচ্যুত হয়ে— বিপথগামী হয়ে পড়েছে। এখন, তাকে তার স্বধর্মে— মানবধর্মে পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করতে, মানবধর্ম ভিত্তিক একটি নতুন ধর্মের একান্ত প্রয়োজন। এই নতুন ধর্মই হলো— মহাধর্ম।      ​2020-09-0602 minসদগুরু মহর্ষি মহামানসসদগুরু মহর্ষি মহামানসবামপন্থী কাকে বলা হবেবামপন্থী কাকে বলা হবে। ~মহর্ষি মহামানস প্রকৃত বামপন্থী হলো সে-ই যে অন্ধভক্তের মতো তার নিজের দল এবং নিজের দল পরিচালিত রাষ্ট্রীয় ব‍্যবস্থার দাসত্ব না করে, প্রয়োজনে তার দল ও সেই দল দ্বারা পরিচালিত সিস্টেমকে প্রশ্ন করতে, কৈফিয়ত চাইতে পিছুপা হয়না‌। এছাড়া যদি সে অন্য কোনো সিস্টেমের অধীনে থাকে বা থাকতে বাধ্য হয়, সেক্ষেত্রেও তার মনোভাব ও কার্যকলাপ অনুরূপই হবে। যদি কোনো প্রবল প্রতিবন্ধকতা তাকে অক্ষম করেও রাখে, তবু তার মনোভাবের পরিবর্তন হবে না। সে তার দলকে যতই ভালবাসুক, কোথাও কোন বেনিয়ম দেখলে, দল বা দলের কাউকে বেপথু হতে দেখলে, সে প্রশ্ন করতে বা প্রতিবাদ করতে ভয় পায়না। অন্ধভক্তি, অন্ধবিশ্বাস, দলদাসত্ব, অন্ধ আবেগ এগুলো বামপন্থীর মধ্যে অনুপস্থিত। প্রতিবাদী, যুক্তিবাদী ও বিদ্রোহী মনোভাব সম্পন্ন সজাগ-সতর্কতা একজন বামপন্থীর প্রধান লক্ষণ। বামপন্থী হলো মানবজাতির মধ্যে শুভ বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনয়নকারী এক অসাধারণ সক্রিয় মানুষ। স্রোতের বিপরীতে দাঁড়িয়ে থাকা অথবা এগিয়ে চলাই একজন বামপন্থীর প্রধান গুণ। সত‍্যই হবে তার লক্ষ্য। কোনো মতাদর্শে আপাত বিশ্বাসী হলেও, পরবর্তীতে সে যদি তার মধ্যে ভুল-ত্রুটি দেখতে পায়, যদি তাকে উন্নয়নের পরিপন্থী মনে হয়, তখন সে তার উন্নতি ঘটাতে, হয় তাকে সংশোধন করবে, নয়তো তাকে পরিত্যাগ করবে। সে হলো সমাজ-সংসারে ও জগতে শুভ পরিবর্তন কামনাকারী এক সক্রিয় মুক্তমনের মানুষ। সত‍্যের জন্য অনেককিছু ত‍্যাগ করতে সে প্রস্তুত। সে অনেক ভাঙা গড়ার মধ্য দিয়ে, বহু বন্ধুর পথ অতিক্রম করে লক্ষ্যে পৌঁছনোর ক্ষমতা রাখে। সে অন্ধবিশ্বাসীর মতো কোনো শাস্ত্র, দর্শন বা মতবাদকে চিরসত‍্য মেনে, আকড়ে ধরে বসে থাকে না। অন্ধের মতো অনুসরণ করেনা। সর্বোপরি সে কখনোই বলেনা, একথাই শেষ কথা। ডানপন্থী হলো অন্ধভক্ত অন্ধবিশ্বাসী প্রাচীনপন্থী রক্ষণশীল এবং প্রশ্নহীন ও দ্বিধাহীনভাবে অনুগত মানুষ। প্রাচীনকাল থেকে চলে আসা মত, দর্শন, শাস্ত্র, বিষয়-বস্তু এবং ব‍্যবস্থা বা সিস্টেমের মধ্যে ভালো-মন্দ সত্য-মিথ্যা যা-ই থাকুক না কেন, তাকে আঁকড়ে ধরেই বাঁচতে চায় সে। বামপন্থী হলো সজাগ-সচেতন, সত্যপ্রিয় ও পরিবর্তনকামী বিদ্রোহী স্বভাবের মানুষ। যাকিছু জীর্ণ-মলিন, মন্দ, মিথ্যা, সময়োপযোগী নয়, সে সমস্ত কিছুকে ভেঙেচুরে নতুন করে গড়ে তোলাই তার লক্ষ্য। ভন্ড মিথ‍্যাশ্রয়ী অথবা অন্ধভক্ত, অন্ধ-আবেগী, অন্ধবিশ্বাসীরা প্রকৃত বামপন্থী মানুষ নয়। এই প্রসঙ্গে বলি, যুগান্তকারী নতুন ধর্ম~ 'মহাধর্ম' হলো প্রকৃত বাম ধর্ম। তবে, বাম মানেই যে কমিউনিষ্ট হতে হবে এমন নয়। 'মহাবাদ' ~যে মতবাদের উপর ভিত্তি করে 'মহাধর্ম' গড়ে উঠেছে, সেও একটি বামপন্থী মতবাদ।2020-09-0603 minসদগুরু মহর্ষি মহামানসসদগুরু মহর্ষি মহামানসযুক্তি কী ও কেনযুক্তি কি ও কেন ~মহর্ষি মহামানস আমার দৃষ্টিতে, যুক্তি হলো কোনো এক অথবা পরস্পর সম্পর্কযুক্ত একাধিক সত্য বা বাস্তব অস্তিত্ব অথবা কারণ বা পূর্ব প্রতিষ্ঠিত যুক্তিকে ভিত্তি করে, শৃঙ্খলাবদ্ধভাবে ধারাবাহিক গাণিতিক বিচার-বিশ্লেষণের নিয়মমাফিক চিন্তার মাধ্যমে একের সঙ্গে অপরকে যুক্ত করে, অবরোহ বা আরোহ পথে অথবা উভয় পথের সম্মিলিত সাহায্য নিয়ে কোনো একটি সিদ্ধান্ত বা অনুমান বা সত‍্যে উপনীত হওয়ার বা পৌঁছনোর একপ্রকার মানসিক কার্যক্রম বা বৌদ্ধিক পদ্ধতি।* এই পদ্ধতিতে, কোনো একটি যৌক্তিক সিদ্ধান্তকে ভিত্তি করে, পূর্বোল্লেখিত কার্যক্রমের মাধ্যমে বা পদ্ধতিতে অপর একটি সিদ্ধান্ত বা অনুমান বা সত‍্যে পৌঁছনো বা উপনীত হওয়াকেও যুক্তি বলা হয়। যুক্তিপথ ধরে এগিয়ে গিয়ে কোনো সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়ার জন্য সঠিক প্রশ্ন অনুসরণ করে, সঠিক উত্তর সন্ধানে~ 'যেহেতু' ও 'অতএব' এবং কারণ-তত্ত্বের সাহায্য অত্যন্ত প্রয়োজন হয়ে থাকে। এই কার্যক্রমের পরিণতিতে, যতক্ষণ পর্যন্ত না কোনো উপলব্ধিযোগ্য বাস্তব অস্তিত্বে পৌঁছনো সম্ভব হচ্ছে, ততক্ষণ পর্যন্ত সেই সিদ্ধান্ত একটি অনুমান ছাড়া আর কিছু নয়। আবার, কোনো বাস্তব অস্তিত্ব সম্পর্কে সিদ্ধান্ত গ্রহণের সময়, পূর্বে প্রতিষ্ঠিত এক বা একাধিক যুক্তির সাহায্য নেওয়া হতে পারে। আমাদের এই মানব-চেতন-স্তরে, সচেতন মনের দ্বারা জ্ঞান লাভের প্রকৃষ্ট উপায় হলো যুক্তি। তবে শুধুমাত্র শুষ্ক বা কঠোর যুক্তিপথে সবসময় সঠিক সিদ্ধান্তে বা সত‍্যে উপনীত হওয়া সম্ভব নাও হতে পারে। যুক্তির সঙ্গে যথেষ্ট বোধ-বুদ্ধি এবং সত‍্যপ্রেম মিশ্রিত থাকলে, তবেই সত‍্যে উপনীত হওয়া সম্ভব। সেইসঙ্গে হতে হবে মুক্তমনের অধিকারী। অর্থাৎ অজ্ঞানতা হতে উৎপন্ন অন্ধত্ব, অন্ধবিশ্বাস ও অন্ধভক্তিসহ বিভিন্ন প্রভাব থেকে যথাসম্ভব মুক্ত মন থাকতে হবে। একজন উচ্চ চেতনা সম্পন্ন, মুক্তমনের যুক্তিবাদী মানুষের কাছে সমস্ত মত, সিদ্ধান্ত বা সত‍্যই আপাত সত‍্য হিসেবে গণ্য হয়ে থাকে। মুর্খের মতো সে কখনোই বলেনা, এটাই শেষ কথা অথবা এটাই পরম সত্য।2020-09-0602 minসদগুরু মহর্ষি মহামানসসদগুরু মহর্ষি মহামানসমুক্তি প্রসঙ্গে মহর্ষি মহামানস●মুক্তি● ~মহর্ষি মহামানস একবার মানব-অস্তিত্ব লাভ করার পর, পূর্ণ চেতনা— পূর্ণ মনোবিকাশ লাভ না হওয়া অবধি তোমার মুক্তি নেই। তাই, মুক্তি যদি পেতেই চাও, আন্তরিকভাবে— অজ্ঞানতা থেকে, অচেতনতা থেকে মুক্তি চাও। কারো মিথ্যা প্রলোভনে— প্রবঞ্চনাপূর্ণ বুজরুকীতে ভুলে বিপথগামী না হয়ে, জ্ঞান ও চেতনা লাভের জন্য যত্নবান হও। সঠিক পথ অবলম্বন করে চেতনা বিকাশের লক্ষ্যে এগিয়ে যাও। ‘মুক্তি চাই— মুক্তি চাই’ বলে, লক্ষ লক্ষ বার প্রার্থনা করলেও রেহাই নেই। তোমাকে মুক্তি দেবার ক্ষমতা নেই কারও। পূর্ণ জ্ঞান ও চেতনা লাভ হলে, তবেই তুমি মুক্তি বা মোক্ষ লাভ করবে। তার আগে নয়। পূর্ণ চেতনার লক্ষ্যে পৌঁছাতে— এখনো অনেক পথ পাড়ি দিতে হবে তোমাকে। এই মানব জীবনেই পূর্ণ চেতনা লাভ সম্ভব নয়। মানব-চেতন-স্তরের পরে রয়েছে আরও কয়েকটি চেতন-স্তর। সবকটি চেতন-স্তর পার হয়ে— তবেই ঘটবে পূর্ণ চেতনা লাভ— ঘটবে মুক্তি। শুধু 'আমি মুক্ত--- আমি মুক্ত' বলে, স্ব-অভিভাবনের সাহায্যে তুমি মুক্ত হতে পারবে না। মুক্ত হবার আন্তরিক ইচ্ছাসহ যথেষ্ট জ্ঞান ও চেতনা লাভের জন্য সঠিক পথে অগ্রসর হতে হবে তোমাকে। সবার আগে বুঝতে হবে, মুক্ত--- কীসের থেকে মুক্ত, কেন মুক্ত! মুক্ত, স্বাধীনতা লাভের জন্য, আরও ভালো জীবন লাভের জন্য, দুঃখ-কষ্ট থেকে অনেকাংশে মুক্ত হবার জন্য--- অজ্ঞানতা— অন্ধত্ব থেকে মুক্ত! 'মোহ-মায়া' ব'লে, বাইরের কোনো জিনিস বা প্রভাব নেই। মোহ-মায়ার উৎপত্তি হয় অজ্ঞানতা --অন্ধত্ব --স্বল্প-চেতনা থেকে। এ সমস্তই তোমার ভিতরের ব‍্যাপার, তোমার মনের ব‍্যাপার। আরেকটি কথা, এই জগতে জীবদেহ ধারণ ক'রে, কেউই সম্পূর্ণ মুক্ত নয়, মুক্ত হতে পারে না। আর তাই কেউই পুরোপুরি স্বাধীন নয়। তবে, যথেষ্ট জ্ঞান ও চেতনা লাভ করতে পারলে, তুমি অনেকাংশে মুক্ত হতে পারবে, এবং অনেকটাই স্বাধীনতা লাভ করতে পারবে। যে যত জ্ঞানী— সে তত স্বাধীন। জ্ঞান-অভিজ্ঞতাই আমাদের মধ্যে চেতনার জন্ম দেয়। আবার, চেতনা আমাদেরকে আরও বেশি জ্ঞান লাভে সমর্থ করে তোলে। নিম্ন চেতন স্তরে— কিছু কিছু ভ্রমাত্মক বা মায়াত্মক জ্ঞান বা বিশ্বাস আমাদেরকে বদ্ধ করে তোলে। ক্রমশ উচ্চ চেতনা লাভের সাথে সাথে অর্জিত বিশুদ্ধ জ্ঞান— আমাদেরকে ক্রমোচ্চ চেতনা লাভে সহায়তা করে, এবং ক্রমশ আমাদেরকে অজ্ঞানতা ও অন্ধত্ব থেকে মুক্ত করে তোলে। ফলস্বরূপ আমার আরও ভালো, আরও উন্নত জীবন লাভ করি। মুক্তি চাই... জ্বালা জুরাইতে চাই... জীব-অস্তিত্ব লাভ করার সাথে সাথেই জ্বালা-যন্ত্রনা শুরু হয়ে যায়। সচেতন মনের জীব— মানুষের ক্ষেত্রে এই জ্বালা-যন্ত্রনা বহুগুণ বেশি। আর এই জ্বালা-যন্ত্রনা ভোগের মধ্য দিয়েই ক্রমশ জ্ঞান ও চেতনা লাভ করে থাকে সে। পর্যাপ্ত জ্ঞান ও চেতনা লাভ না হওয়া অবধি— এই জ্বালা-যন্ত্রনা থেকে মানুষের মুক্তি নেই। প্রয়োজনের তাগিদেই মানুষ এই জ্বালা-যন্ত্রনা ভুলে থাকার, অথবা তা’ এড়িয়ে থাকার অনেক উপায় আবিষ্কার করেছে। কিন্তু তা’ নিতান্তই সাময়ীক উপশমদায়ক ব্যবস্থা। স্থায়ী 'রেমেডি' নয়। জ্বালা-যন্ত্রনা ভুলতে গিয়ে, এড়িয়ে চলতে গিয়ে— অনেক সময় আরো জ্বালা-যন্ত্রনা বেড়ে যায়। তারফলে সে আরও জ্ঞান-অভিজ্ঞতা ও চেতনায় সমৃদ্ধ হয়ে ওঠে। প্রত্যেকের মুখে একটাই প্রশ্ন— মুক্তি! জাগতিক দুঃখ-কষ্ট-যন্ত্রনা হতে মুক্তি পাবার কি কোনো পথই নেই! অনেকেই অনেক কথা বলেছে, বলছে— বলবে। আমি শুধু এইটুকুই জানি, নির্ধারিত ভোগ কেউ খন্ডাতে পারে না। দুঃখ-কষ্ট-দুর্দশা, জ্বালা-যন্ত্রনা, শোক-সমস্যা-হতাশায় আঘাতে আঘাতে জর্জরিত— জড়বৎ মনে তিলে তিলে চেতনার সঞ্চার করাই ঈশ্বর তথা জাগতিক ব্যবস্থার কর্ম পদ্ধতি। সে কষ্টই যদি না থাকবে, তো চেতনা আসবে কোন পথে! আকরিক লৌহপিন্ডকে পুড়িয়ে—পিটিয়ে, নানাবিধ শোধনের পর ঘষে-মেজে জাগানো হয় তার ঔজ্বল্য— তার শাশ্বত রূপ।2020-09-0604 minসদগুরু মহর্ষি মহামানসসদগুরু মহর্ষি মহামানসআত্মজ্ঞান সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত আলোচনা● আত্মজ্ঞান ● (যুক্তিসম্মত অধ‍্যাত্ম-বিজ্ঞান ভিত্তিক আত্মজ্ঞান) ~মহর্ষি মহামানস মানুষ পরিবেশ-পরিস্থিতি সাপেক্ষে, তার মধ্যে অন্তর্গ্রথিত থাকা সংস্কার বা প্রোগ্রামিং দ্বারা চালিত হয়ে থাকে। এই পরিচালক সংস্কার বা ড্রাইভিং প্রোগ্রাম সে কিছুটা পেয়ে থাকে জন্ম সূত্রে, আর কিছুটা সে তার সমাজ-সংসার দ্বারা প্রাপ্ত বা প্রোগ্রামিং হয়ে থাকে। বাকিটুকু তার নিজের অর্জিত, অর্থাৎ সেটুকু তৈরি হয় নিজেকে নিজে সংস্কারাবদ্ধ বা প্রোগ্রামড করে তোলার মাধ্যমে। এমন কোনো মানুষ নেই যে এই সংস্কার বা প্রোগ্রামিং -এর প্রভাব থেকে মুক্ত হয়ে স্বাধীনভাবে চলতে বা নিজেকে চালিত করতে পারে। কম্পিউটার প্রোগ্রামড যন্ত্রের মতোই আমরাও এক প্রকার জৈবযন্ত্র। আমরা চালিত হয়ে থাকি আমাদের মধ্যে অন্তর্গ্রথিত প্রোগ্রামের নির্দেশ মতো। যথেষ্ট চেতনা ও জ্ঞানের অভাবে, আমরা নিজেদেরকে স্বাধীন স্বচালিত স্বনির্ভর মানুষ ভেবে আত্মশ্লাঘা বোধ করে থাকি। আমাদের শরীর হলো একটি উচ্চ মানের হার্ডওয়্যার বিশেষ, এবং আমাদের মন হলো সেই হার্ডওয়্যার-এর মধ্যে অবস্থিত অন‍্যতম পরিচালক~ অতি উচ্চ শ্রেণীর সফটওয়্যার। 'অন‍্যতম' বলছি এই কারণে, আমাদের ঐচ্ছিক মন ছাড়াও শরীরের মধ্যে আরেকটি বেসিক সফটওয়্যার রয়েছে। সে হলো অনৈচ্ছিক পরিচালক। শরীর যন্ত্রকে নিয়মিতভাবে চালনা করাই তার কাজ। আমাদের মধ্যে দুটি মন রয়েছে। সচেতন ও অবচেতন মন। একটি হলো যুক্তিবাদী বিচার-বুদ্ধি সম্পন্ন সৎ সজাগ সচেতন মানবমন, আর অপরটি হলো অন্ধ-আবেগ-প্রবণ, যুক্তি-বিচার বিবর্জিত অন্ধবিশ্বাসী আদিম মানবমন। এই দুটি মন নিয়েই আমাদের মানস সংসার। যথেষ্ট সক্রিয় সচেতন মনের অধিকারী যে সে-ই মানুষ। এই দুটি মন সম্পর্কে যার সম‍্যক জ্ঞান আছে, এবং মনের উপর যার আছে অনেকটা নিয়ন্ত্রণ, সে-ই বিকশিত মানুষ। দুটি মনের গঠন, কার্যকলাপ চাহিদা আলাদা। তাদের আনন্দ লাভের ধরণ ও উপকরণও আলাদা। মায়ামি (মায়া ‘আমি’) 'মায়া' সফটওয়্যার (অনেক হলিউড মুভিতে ব‍্যবহৃত) দ্বারা তৈরি একটি থ্রিডি অ্যানিমেটেড চরিত্রের মতো, আমিও মহাজাগতিক 'মহা-মায়া' সফটওয়্যার দ্বারা তৈরি একটি অ্যানিমেটেড 'মায়া' চরিত্র বা মায়া-অস্তিত্ব। আমি যা জানি, তা' 'মায়া', আমি যা করি, বা আমি করতে পারি সেসবই 'মায়া'। আমার চিন্তা, বাসনা, উদ্দেশ্য সবই ‘মায়া’। এই মোহাচ্ছন্ন বা সম্মোহিত অবস্থায়, আমি যে জগত তৈরি করি, তাও ‘মায়া’। এই মহাজগত এবং এই জগতের সমস্ত কিছুই 'মায়া' বৈ আর কিছু নয়। মহাবিশ্বরূপ স্রষ্টা, যে আমাকে এবং এই মায়া অস্তিত্বরূপ জীব ও উদ্ভিদ জগতের স্রষ্টা, সে তার শৈশবকালে সম্মোহিত অবস্থায় এগুলি করেছে, ছিলো। সে নিজেও একটি ‘মায়া’ চরিত্র। পরম বিন্দুবৎ মহাবিশ্ব-বীজ থেকে ক্রমশ বিকাশ লাভ করে, মহাবিশ্ব রূপে তোমার প্রকাশ। লীলাবসানে পুণরায় সেই পরম বিন্দুতে বিলীন হয়ে যাবে তুমি। কম্পিউটারে প্রোগ্রামিং কোড দ্বারা সৃষ্ট এনিমেটেড ওয়ার্ল্ডের মতোই তোমার এই মায়া অস্তিত্ব। আবার আমাদেরকেও তুমি সৃষ্টি করেছো সেই প্রোগ্রামিং কোড দ্বারাই। আমিও একটি মায়া-আমি। 'মহামায়া' অর্থাৎ 'ঈশ্বর' হলো একটি মহাজাগতিক মন সম্পন্ন মহাবিশ্ব অস্তিত্ব, যে পরম সত্ত্বা বা পরমাত্মার দ্বারা প্রোগ্রামিং কোড দিয়ে তৈরি একটি মায়া অস্তিত্ব বিশেষ। এই বিশ্বরূপ ঈশ্বর বা বিশ্বাত্মার জীবনচলা শুরু হয়েছে অতি শৈশব থেকে। ক্রমবিকাশমান চেতনার পথ ধরে পূর্ণ বিকাশের লক্ষ্যে পায়ে পায়ে এগিয়ে চলেছে সে। একটু একটু করে তার চেতনা বৃদ্ধির সাথে সাথে পূর্ণ চেতনার লক্ষ্যে এগিয়ে চলাই তার জীবন। অনেকটা পথ অতিক্রম করে এসে, এখন সে প্রৌঢ়ত্ব লাভ করেছে। বিশ্বাত্মার মতোই, তার অংশানুক্রমে সন্তানসম সৃষ্টিস্বরূপ আমিও চেতনা বিকাশের দুর্গম পথ ধরে, দুঃসহ দুঃখ-কষ্ট-যন্ত্রণা ভোগের মধ্য দিয়ে, জ্ঞান-অভিজ্ঞতা লাভের মধ্য দিয়ে এগিয়ে চলেছি পূর্ণ বিকাশের লক্ষ্যে। যত এগিয়ে চলেছি, ততই চেতনা বৃদ্ধি পাচ্ছে। মোহ-মায়া অজ্ঞান-অন্ধত্ব থেকে মুক্ত হচ্ছি ততই। ক্রমশই বৃদ্ধিপাচ্ছে আত্মোপলব্ধী আত্মজ্ঞান। সহজ সরল উপায়ে প্রাথমিক থেকে উচ্চতর আত্মজ্ঞান লাভ করতে চাইলে, 'মানবধর্মই মহাধর্ম' গ্রন্থটি পড়ুন সেইসঙ্গে 'মন-আমি যোগ' ও 'সুষুপ্তি যোগ' অনুশীলন করুণ।2020-09-0604 minসদগুরু মহর্ষি মহামানসসদগুরু মহর্ষি মহামানসমানবসেবায় নামার আগে তোমাকে মানুষ চিনতে হবে।মানবসেবায় নামার আগে তোমাকে মানুষ চিনতে হবে। মানবতার নামে সব মানুষকে সমান ভাবা, এও এক প্রকার অন্ধত্ব। সব মানুষই মানুষ নয়। মানুষের চেহারায় অতি নিম্ন চেতন স্তরের অনেক অমানুষ রয়েছে, যারা তোমার মানবিকতার মূল্য বুঝবে না, যাদের কাছে মানবিকতা অথবা মনুষ‍্যোচিত আচরণ আশা করা যাবেনা। মানুষ কাকে বলবো। যার মধ্যে সচেতন মনের সক্রিয় উপস্থিতি রয়েছে, একমাত্র সে-ই মানুষ। তবে জীব সেবার উদ্দেশ্যে যখন কাজে নামবে, তখন বাছবিচার না করে, সবার প্রতি সমানভাবে সেবা বা সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে হবে। কিন্তু প্রতিদানে তাদের কাছ থেকে মানবিকতা বা মনুষ‍্যোচিত আচরণ আশা করলে, মস্তবড় ভুল করবে। যারা এখনও মানুষ হয়ে উঠতে পারেনি, যাদের সচেতন মনের যথেষ্ট বিকাশ ঘটেনি, তাদেরকে মানুষ করে তোলার উদ্দেশ্যে খুব সতর্কতার সঙ্গে বিজ্ঞানসম্মত উদ‍্যোগ নিতে হবে। তা' না হলে, তারা তোমার সমস্ত প্রচেষ্টায় ছাই ঢেলে দিতে পারে। অন্ধ আবেগে~ সচেতন মনের অনুপস্থিতিতে কিছু করতে যাওয়া মনুষ‍্যোচিত কাজ নয়। এমনকি তোমার চরম ক্ষতি করতেও পারে তারা। তাই খুব সাবধান। সবার আগে নিজে মানুষ হও। মানুষের মঙ্গলের জন্য কাজে নামার আগে মানুষ চিনতে সক্ষম হও। যার কষ্টে তোমার প্রাণ কেঁদে উঠেছে, কাজের ময়দানে নামলে বুঝতে পারবে, তার চাইতে বড় শত্রু তোমার আর কেউ নেই।2020-09-0601 minসদগুরু মহর্ষি মহামানসসদগুরু মহর্ষি মহামানসহতাশা এবং তজ্জনিত মনোবিকার এক বড় সমস্যাহতাশা এবং তজ্জনিত মনোবিকার এক বড় সমস্যা। ~মহর্ষি মহামানস আমরা সবাই জানি, হতাশা থেকে সৃষ্ট মনঃকষ্ট ---বিষন্নতা ---অবসাদ হতে বহু অঘটন--- অসুস্থতা, বহু সমস্যা জন্ম নিয়ে থাকে। হতাশা হলো, কোনকিছুর জন্য আশা বা প্রত‍্যাশা মতো প্রাপ্তি না ঘটার ফলে, মনের একপ্রকার আহত বা আঘাতপ্রাপ্ত অবস্থা। হতাশার পিছনে থাকে মনের আশা-আকাঙ্ক্ষা বা প্রত‍্যাশা। আর অপরদিকে থাকে অসাফল‍্য--- অপ্রাপ্তি, চাহিদামতো ঘটনা না ঘটা। বিভিন্ন মানুষের বিভিন্ন প্রকার শারীরিক ও মানসিক গঠন, জ্ঞান ও চেতনস্তর এবং প্রয়োজন বা চাহিদা অনুযায়ী পরিবেশ-পরিস্থিতি সাপেক্ষে বিভিন্ন ধরণের আশা-আকাঙ্ক্ষা সৃষ্টি হয়ে থাকে। আমরা জানি, এই প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তি, লাভ-লোকসান, অভাব, ঘটন-অঘটন, ইচ্ছা-অনিচ্ছা, চাহিদা প্রভৃতি সবকিছুই জাগতিক ব‍্যবস্থা অনুযায়ী যখন যেটা ঘটার সেটাই ঘটে থাকে ('ভাগ্য আসলে কী' প্রবন্ধ দ্রষ্টব্য)। কিন্তু তা' জানা সত্বেও, আমরা অসহায়। জাগতিক নিয়মেই আমাদেরকে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন বিষয়-বস্তু লাভের জন্য আশা করতে হয়, এবং বহু ক্ষেত্রেই ঘটনাক্রমে হতাশ হতে হয়, হতাশা জনিত দুঃখ-কষ্ট ভোগ করতে হয় আমাদের। অনেক মানুষকেই দেখাযাবে, সারাজীবন ধরে একেরপর এক বারবার অসফল--- অভাবগ্রস্ত হয়েও, নিদারুণভাবে দুর্ভাগ‍্যের শিকার হয়েও, সাময়িকভাবে আশাহত হলেও, হতাশায় ভেঙে পড়েনি। অনতিবিলম্বে বিফলতা থেকে শিক্ষা নিয়ে, সমস্ত হতাশা ঝেড়ে ফেলে, নতুন উদ‍্যোমে পুণরায় লড়াইয়ের জন্য উঠে দাঁড়িয়েছে। আবার, অনেককেই দেখাযাবে, অল্পতেই, ছোটখাটো ব‍্যাপারেই আশাহত হয়ে সাংঘাতিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। এমনকি ধ্বংসাত্মক পথ বেছে নিয়েছে অথবা বেছে নিতে বাধ্য হয়েছে। এসব অনেকটাই নির্ভর করে ব‍্যক্তির শরীর ও মনের অবস্থার উপর, এবং বাকিটুকু নির্ভর করে তার পরিবেশ-পরিস্থিতির উপর। এখন প্রশ্ন আসতে পারে, তাহলে কী মনকে শিক্ষিত করে তুললে, অথবা মন শিক্ষিত হলে, এই দুরবস্থা থেকে বেড়িয়ে আসা সম্ভব হবে? হ‍্যাঁ, অনেকসময় অনেকটাই সম্ভব হবে, যদি সেই মন শিক্ষিত এবং সেইসঙ্গে স্বনিয়ন্ত্রনাধীন হয়ে থাকে। শিক্ষার মধ্যে একটি প্রধান বিষয় হলো মানসিক প্রস্তুতি। মনে রাখতে হবে, যেকোনো সময় বাধা-বিঘ্ন অসাফল‍্য দুঃসময় আসতেই পারে। তারজন্য সর্বদা নিজেকে প্রস্তুত রাখতে হবে। সহনশীলতা বাড়িয়ে তুলতে হবে। শুধুমাত্র তত্ত্বগত ভাবে শিক্ষিত হলেই হবেনা। ব‍্যবহারিক বা প্রয়োগগত শিক্ষা ও অনুশীলনও থাকা দরকার। এই জগতের বন্ধুর পথে এগিয়ে চলতে গেলে, যেমন সমাজ-সংসার সম্পর্কে বাস্তব জ্ঞান থাকা প্রয়োজন, তেমনি মন সম্পর্কেও ভালো জ্ঞান থাকা আবশ্যক। তবে শুধু জ্ঞান ও শিক্ষার দ্বারাই সবসময় সবক্ষেত্রে সমস্যা মুক্ত হওয়া সম্ভব নাও হতে পারে। এমন কিছু কিছু ক্ষেত্র আছে, যখন এই আশা এবং তৎপরবর্তী হতাশা থেকে বেড়িয়ে আসা সম্ভব হয়ে ওঠেনা। যেমন, দুর্ভাগ‍্যক্রমে যদি কারো নূন্যতম চাহিদাটুকুও না মেটে, বারবার সে যদি তার মৌলিক প্রয়োজন মেটাতে অসফল হয়, তখন সেই ব‍্যক্তির পক্ষে হতাশ হওয়া এবং সেই হতাশার কারণে অসুস্থ হওয়া ছাড়া আর কোনো উপায় থাকেনা। তখন কোনো জ্ঞান, কোনো শিক্ষাই কার্যকর হয়না। তখন একমাত্র মানসিক ও শারীরিক চিকিৎসা ছাড়া, এবং সেই হতাশার বাস্তব কারণ অপসারণ করা ছাড়া আর কোনো পথ খোলা থাকেনা। হতাশ হয়ে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ার পিছনে আভ‍্যন্তরীন দিক থেকে যে শুধুমাত্র ব‍্যক্তির মনই দায়ী তা' নয়। শরীরের বিভিন্ন অন্তঃক্ষরা গ্রন্থিসহ বিভিন্ন দেহযন্ত্র বা অরগান-ও এর পিছনে অনেকসময় অনেকাংশে দায়ী থাকে। এক্ষেত্রে, প্রথমে যথাসম্ভব নিরপেক্ষ অবস্থান থেকে বিচার-বিশ্লেষণের মধ্য দিয়ে অতীতের ভুল-ত্রুটি সংশোধন করে, অতীত থেকে শিক্ষা অভিজ্ঞতা লাভ করতে হবে। এর দ্বারা ক্ষতির থেকে বেশি লাভবান হওয়ার কথা ভেবে, খুশি হতে হবে। তারপর, কোনো কঠোর কায়িক পরিশ্রমের মধ্যে নিজেকে নিযুক্ত রেখে মানসিক দুশ্চিন্তা থেকে অনেকটা মুক্ত রাখতে হবে। তারসঙ্গে নিয়মিতভাবে আত্ম-ধ‍্যান, প্রাণযোগ, সুষুপ্তি যোগ প্রভৃতি বিশেষ কিছু যোগ প্রক্রিয়ার সঙ্গে নিজেকে যুক্ত রেখে, স্বাস্থ্যবিধি মেনে সুসম আহার-বিহারসহ, সূক্ষ্ম মাত্রায় সুনির্বাচিত হোমিওপ্যাথিক ওষুধের সাহায্য নিতে হবে। তাহলেই দুরবস্থা থেকে বেড়িয়ে এসে, নতুন করে আবার জীবন-চলা শুরু করা সম্ভব হবে। প্রয়োজনে সমস্ত দিক বিচার বিবেচনা করে, ভালো সময়ের জন্য অপেক্ষা করতে হতে পারে। কারণ সাফল্য লাভের ক্ষেত্রে সময় একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। প্রসঙ্গত, একটা অতি সরল সমাধান আমাদের সমাজে কথিত আছে, "কাজ করে যাও, ফলের আশা করোনা"। এটা যে কতখানি অবাস্তব কথা, তা' বিজ্ঞজন মাত্রই অবগত আছেন।2020-09-0604 minসদগুরু মহর্ষি মহামানসসদগুরু মহর্ষি মহামানসসদগুরু মহর্ষি মহামানস (Trailer)2020-09-0600 minসদগুরু মহর্ষি মহামানসসদগুরু মহর্ষি মহামানসবেদনাদায়ক স্মৃতি থেকে মুক্তি পাওয়ার উপায়বেদনাদায়ক স্মৃতি থেকে মুক্তি পাওয়ার উপায় ভয়ঙ্কর স্মৃতি অথবা অত্যন্ত কষ্টদায়ক অসুস্থকর স্মৃতি অথবা অনাকাঙ্ক্ষিত স্মৃতিকে জীবনভর বয়ে বেড়ানো মানবজীবনের এক বড় কঠিন সমস্যা। ভুক্তভোগী মাত্রই জানেন, এইরকম কোনো একটি স্মৃতির সঙ্গে লড়াই করে বেঁচে থাকা কী দুঃসহ ব‍্যাপার। এরকম স্মৃতির কারণে কিছু কিছু মানুষকে জীবনের মূল স্রোত থেকে বিচ‍্যুত হয়ে মানসিক প্রতিবন্ধী হয়ে পড়তেও দেখা যায়। এখন, আমৃত্যু বয়ে বেড়ানো 'ট্রম্যাটিক মেমরি’ বা সাংঘাতিক এই স্মৃতির তাড়না থেকে মুক্ত হয়ে, সুস্থভাবে বেঁচে থাকা কিভাবে সম্ভব!? কিছু মানুষকে দেখা গেছে, তারা কোনো একটি দুঃখের স্মৃতিকে সারাজীবন বুকের মাঝে আঁকড়ে ধরে রেখেই বেঁচে থাকতে চায়। এখানে তাদের কথা নিয়ে আলোচনা করছি না। যদিও সেও একধরনের মানসিক অসুস্থতা। এর সমাধান করতে হলে, প্রথমে আমাদের মন সম্পর্কে সাধারণ জ্ঞান থাকা আবশ্যক। আমাদের মন হলো একটি উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন সফটওয়্যার বিশেষ। আর, কোনো একটি বিশেষ স্মৃতি হলো, তার মধ্যে সৃষ্ট হওয়া এবং অবস্থান করা একটি সফটওয়্যার ফাইল। 'মন' যেমন একটি সফটওয়্যার, তেমনই আমাদের মস্তিষ্কসহ সমগ্র শরীর-যন্ত্র হলো হার্ডওয়্যার বিশেষ। এই কঠিন সমস্যার সমাধানে এযাবৎকাল অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ওষুধ বা ড্রাগ প্রয়োগের দ্বারা স্নায়ু ও মস্তিষ্ককে অবশ বা বিকল করে দিয়ে এর সমাধানের বৃথা চেষ্টা হয়ে আসছে। এর দ্বারা সমস্যা আরও বেড়েছে বৈ কমেনি। রোগীকে স্বাভাবিক জীবনের মূল স্রোতে ফিরিয়ে আনা সম্ভব হয়না অধিকাংশ ক্ষেত্রেই। শুধুমাত্র ছোটখাটো বা হালকা ধরনের সমস্যার ক্ষেত্রে রোগীকে সাময়িকভাবে ঘুম পাড়িয়ে রাখতে পারলে, এর সমাধান সম্ভব হলেও, সাংঘাতিক বা ভয়ঙ্কর মানসিক পীড়ার ক্ষেত্রে এই পদ্ধতি কার্যকর হয়না। অনাকাঙ্ক্ষিত স্মৃতিকে অর্থাৎ স্মৃতির ফাইলটিকে কোনো নির্মল বা ক্ষতিকর নয় এমন পদ্ধতিতে মুছে বা ডিলিট করে দিতে পারলেই এই যন্ত্রণাদায়ক সমস্যার প্রকৃত সমাধান সম্ভব হবে। কি সেই পদ্ধতি? সেটি হলো সরল ও বিজ্ঞান সম্মত মেডিকেল হিপ্নোসিস বা সেল্ফ-হিপ্নোসিস পদ্ধতি। যথেষ্ট অভিজ্ঞতা থাকলে, খুব গভীর ট্রান্সের মধ্যে ডুবে গিয়ে অথবা অত্যন্ত প্রাজ্ঞ কোনো বিশেষজ্ঞের সাহায্যে গভীর হিপ্নোটিক স্টেজে ডুব দিয়ে, অনিষ্টকর সেই বিশেষ ফাইলটাকে ওপেন করতে হবে। তারপর কম্পিউটারে যেভাবে কোনো ফাইলকে ডিলিট করা হয়, কতকটা সেই ভাবে, মনশ্চক্ষের স্ক্রিনে ফাইলটাকে সিলেক্ট করে, ডিলিট বাটন টিপে দিতে হবে। পুরোনো দিনের কম্পিউটারে যেমন কোনো বড় ফাইল ডিলিট করতে গেলে, মনিটরের স্ক্রিনে একটা দৃশ্য দেখা যেতো, অনুরূপ দৃশ্য মনের পর্দায় ভিজূয়ালাইজ করতে হবে। একদিনের সিটিং-এ পুরোপুরি ডিলিট নাও হতে পারে, সেক্ষেত্রে কয়েক দিন অনুশীলন করলেই সম্পূর্ণ সমাধান সম্ভব হবে। একসময় এই 'মাইন্ড প্রোগ্রামিং' বা 'রি-প্রোগ্রামিং' পদ্ধতিতে আমি অনেক মানুষকে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছি। ধন্যবাদ।2020-09-0602 minWisdom of Maharshi MahaManasWisdom of Maharshi MahaManasMind is like a blooming lotusMind is our main topic. Here, who (or which) is saying is Mind, and you, who (or which) is listening is also Mind. The principal creator and driver of our world, and also of the cosmos –is Mind. A little and sweet name– Mind! In this world, whatever we are seeing – whatever is happening, whatever has been created and is creating, behind all creation– there is Mind. Only creatures have Mind, –not that, there is a cosmic mind. The Mind of highest conscious level! We are human beings, because we have wakeful– conscious Mind. All other creatures have also Mind, but their Mi...2020-09-0506 minWisdom of Maharshi MahaManasWisdom of Maharshi MahaManasCan Communism Solve the Basic Problems of Mankind !?Today I would like to say that communism is not a solution to the fundamental problems of mankind. Many people say that if communism is established in human society, it will be solved. But that is not the real truth. Communism can only succeed if the knowledge and consciousness of the whole human race ever attains equality. Imposed communism is just an artificial system. Communism is an artificial system imposed on human beings. Drowning people in the darkness of ignorance, Any artificial religious or political or social system imposed on them can never succeed. Can't be good for people. So...2020-09-0510 minWisdom of Maharshi MahaManasWisdom of Maharshi MahaManasAbout Faith and KnowledgeFaith and knowledge Faith is the root-cause of most vital questions. Without faith– we cannot move forward even a single step, due to our lack of consciousness. So it is not faith to suppose anything for convenience of work. Faith comes to birth from ignorance. Malice comes to birth from faith. Terrorism comes to birth from malice. Faith is blind notion, –faith is illusive knowledge. Generally, to which we mention 'knowledge' –the greater part of that is superficial or seeming knowledge. There are many astonishing things in this world, but it seems to me that there is no astonishing thing more t...2020-09-0508 minWisdom of Maharshi MahaManasWisdom of Maharshi MahaManasSome important things about vaccinesSome important things about vaccines Be aware of the deadly evils of vaccines. Although vaccines work temporarily, they have far-reaching side effects. Various vaccines are responsible for many difficult diseases of the age. Again, if the vaccine is not made properly, it can become fatal. There is a conspiracy of a class of medical professionals behind the growing interest in vaccines among the people, and there is their media brokers and some corrupt doctors and scientists and their health organization. They have been exploiting us for many years by making people victims of conspiracies in the name of science. Ignorant...2020-09-0404 minWisdom of Maharshi MahaManasWisdom of Maharshi MahaManasThe scientific way to alleviate global povertyThe scientific way to alleviate global poverty 'MahaManan' self-development education is the scientific way to allheviate global poverty Lack of sufficient knowledge and consciousness is the root cause of poverty. By giving all kinds of facilities, and necessary help, to a poor man with a little knowledge and a little consciousness, maybe his/ her temporary poverty relief, but for a long time he will not be able to escape poverty. If a rich man who has a lot of wealth, either hereditarily or otherwise, has a shortage of knowledge and consciousness, soon he could lose all his wealth and become...2020-09-0407 minWisdom of Maharshi MahaManasWisdom of Maharshi MahaManasDestiny : From the view-point of science (Scientific explanation of Destiny)Destiny : From the view-point of science (Scientific explanation of Destiny) The destiny is a self-made automatic (worldly) system which came into existence with the creation of the universe through the great explosion (Big Bang). In this system, it is automatically determined at the moment of the explosion --- when and where --- what would happen in the traditional event. Its name is Destiny. Whatever is happening here, Destiny is at the root of everything, Destiny is responsible for everything. This Destiny is predetermined and unchanging. However, Destiny has to move forward along the path of logic based on a variety...2020-09-0304 minWisdom of Maharshi MahaManasWisdom of Maharshi MahaManasSpace : Actually What it is (New Theory)Space : Actually what it is All over the univers--- a bubble like multidimensional, seemingly unobstructed or nearly unobstructed vacuum existence is called space. This space existence came into being as the universe was created through the great explosion. And as the universe progresses, this space is gradually expanding. This space is actually a special existence composed of invisible unperceived--- extraordinary particles of a particular frequency. These particles, like 'Stem cell', themselves grow at a rapid rate when needed. Science has not yet been able to discover them. In general, this space is an invisible unfelt non-existent existence to us. That...2020-09-0306 minWisdom of Maharshi MahaManasWisdom of Maharshi MahaManas'Time' and 'Time Travelling'!Time is nothing but the length of events that happen one after the other. Time is born out of an event or an action of something. Where there is no event, there is no time. With the creation of the universe, cosmic time and space are born. As soon as these cosmic events, which are happening successively one after the other, stop, time will also stop. You are nothing but a short-lived character in this gigantic cosmic film, consisting of one frame after another. In this movie, as a character in a mega serial drama, it is not possible for...2020-09-0301 minWisdom of Maharshi MahaManasWisdom of Maharshi MahaManasCan science be believed without hesitation?Science is true, this idea needs to change. Like everything else science is also the apparent truth. What scientists are establishing as true today may be proven false tomorrow. Therefore, taking everything as the apparent truth is science. For a long time, our favorite and respected "science" has been the victim of a conspiracy by a class of very greedy businessmen! 'Science' has been highly tainted, especially by a class of medicine or drug industrialist and traders. Part of this medicine trade continues to deceive us day after day. Then there are the arms or war-weapon dealers. They have enslaved...2020-09-0303 minWisdom of Maharshi MahaManasWisdom of Maharshi MahaManasWhat 'Dharma' is and what 'Manav-Dharma' isWhat 'Dharma' (धर्म Which is usually called religion) is and what 'Manav-Dharma' (मानवधर्म) is 'Dharma' which is commonly called religion. But 'Dharma' and Religion is not same thing. 'Dharma' is one's natural qualities, activities and behavior. There are two types of 'Dharma'. One is the natural quality, activities and behavior of someone, and the other is the quality, activities and behavior imposed on someone. Just as the 'Dhama' of water and the 'Dharma' of fire, so the 'Dharma' in the case of an organism is its simple behavior or natural quality or nature-dharma. There are some differences in the case of humans. Man acquires human-quali...2020-09-0302 minWisdom of Maharshi MahaManasWisdom of Maharshi MahaManasWisdom of Maharshi MahaManas (Trailer)2020-09-0300 minWisdom of Maharshi MahaManasWisdom of Maharshi MahaManasWhat 'Dharma' (धर्म ~ Which is usually called religion) is and what 'Manav-Dharma' (मानवधर्म) isWhat 'Dharma' (धर्म Which is usually called religion) is and what 'Manav-Dharma' (मानवधर्म) is 'Dharma' which is commonly called religion. But 'Dharma' and Religion is not same thing. 'Dharma' is one's natural qualities, activities and behavior. There are two types of 'Dharma'. One is the natural quality, activities and behavior of someone, and the other is the quality, activities and behavior imposed on someone. Just as the 'Dhama' of water and the 'Dharma' of fire, so the 'Dharma' in the case of an organism is its simple behavior or natural quality or nature-dharma. There are some differences in the case of humans. Man acquires human-quali...2020-09-0306 minWisdom of Maharshi MahaManasWisdom of Maharshi MahaManasAn epoch-making initiative to establish real human development and peaceAn epoch-making initiative to establish real human development and peace through an excellent education system of mind-development. Hello, This is to introduce you to an excellent and incomparable system of education for true human development and peace! We can see, if we look around carefully with a little watchful eye, the whole human race is going through a terrible crisis and severe illness. And as the days go by, the intensity of this misery and suffering is increasing. To this day, no one has been able to stop the inhumane acts of injustice, corruption, oppression, rape, deception, violence, hatred, cruelty...2020-09-0331 minWisdom of Maharshi MahaManasWisdom of Maharshi MahaManasFinally a Potential weapon to defeat the Corona virus has been found!My humble appeal to the heads of state of all countries and medicine companies around the world who are interested in defeating the corona virus. Hello, I am Sumeru Ray, from Kolkata, WB, India, have developed an effective medicine for corona virus in an individual effort. First of all, the medicine I invented is not a conventional mainstream medicine. I invented an excellent system of medicine in 2012. In the current extreme crisis, to get rid of this deadly enemy all over the world, I think this method and it's medicine will be highly effective. Therefore, I request you to check...2020-09-0337 min